শাপলা খন্দকার, বগুড়া
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেবা পেতে রোগী ও তার স্বজনদের কাছ থেকে ঘাটে ঘাটে বকশিশ দিতে হয়। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ), জরুরি বিভাগ থেকে শুরু করে বহির্বিভাগ, প্যাথলজি বিভাগ—সব জায়গায়ই বকশিশ যেন অলিখিত নিয়ম। রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, এই হাসপাতালে মুমূর্ষু রোগীদের যত্ন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রোগীদের ওঠানো-নামানো, এমনকি লাশ পরিবহনেও নেওয়া হচ্ছে টাকা। চাহিদামতো টাকা না দিলে রোগী ও তার স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা, হাসপাতালে লাশ আটকে রাখা, মুমূর্ষু রোগীর মুখ থেকে অক্সিজেন মাস্ক খুলে ফেলা, রোগীকে ইনজেকশন পুশ করে হত্যার হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে হাসপাতালের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। শুধু বকশিশই নয়, হাসপাতালে রয়েছে দালালের দৌরাত্ম্যও।
সম্প্রতি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেওয়া অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ওয়ার্ড কিংবা কেবিনে আনা-নেওয়ার জন্য যতবার তাঁরা হুইলচেয়ার ও স্ট্রেচার ব্যবহার করেছেন, ততবারই হাসপাতালের কর্মচারীদের ১০০ থেকে ৩০০ টাকা বকশিশ দিতে হয়েছে।
গাইবান্ধার দিনমজুর বিশু বিশ্বাস সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ছেলে বিকাশ বিশ্বাসকে নিয়ে ৯ নভেম্বর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ছুটে যান। সেখানে রোগীকে স্ট্রেচারে নেওয়ার জন্য বিশুর কাছে ২০০ টাকা দাবি করেন হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মচারী আসাদুল ইসলাম। বিশু ১৫০ টাকা দিলে আসাদুল ক্ষিপ্ত হয়ে রোগীর মুখের অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেন। এরপর বিকাশ মারা যায়। এ ঘটনার পরদিন আসাদুলের বিরুদ্ধে মামলা করেন হাসপাতালের ওয়ার্ড নির্বাহী। একই সঙ্গে জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তাকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও গতকাল বুধবার পর্যন্তও সে প্রতিবেদন জমা পড়েনি।
নন্দীগ্রামের আমিনুর রহমান (২৯) কয়েক মাস আগে (এপ্রিল) তাঁর গুরুতর অসুস্থ ফুপুকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনেন। তখন রাত সাড়ে ১২টার মতো বাজে। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রোগীকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর লাশ নিয়ে আমিনুর তাঁর স্বজনেরা বাড়ি ফিরতে চাইলে বাধা দেয় অ্যাম্বুলেন্স চক্র। তারা আমিনুলের পরিবারের কাছে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন।
আমিনুর বলেন, ‘ওরা আমাদের বলে, “বাইরের অ্যাম্বুলেন্সে লাশ নেওয়া যাবে না। আমাদের অ্যাম্বুলেন্সে নিতে হবে। পাঁচ হাজার টাকা না দিলে
লাশ নিয়ে যেতে দেব না। এটা আমাদের নিয়ম।” আমি তখন বাধ্য হয়ে অনেক বলেকয়ে দুই হাজার টাকা দিয়ে আমাদের নিয়ে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্সে করেই লাশ নিয়ে চলে আসি।’
এদিকে শুধু বকশিশই নয়, দালালের দৌরাত্ম্যও রয়েছে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেলে। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য গত ১৭ অক্টোবর নাটোর থেকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে এসেছিলেন নাফিউল ইসলাম (৩০)। তখন দুপুর দেড়টা। বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টার বন্ধ হয়ে গেছে। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না নাফিউল। এমন সময় একজন এসে বলছেন, ‘টিকিট কাটতে পারেননি? পাশের রুমে স্যার (ডাক্তার) আছেন, আমার সাথে আসুন।’ সেখানে গেলে কয়েকজন জানান, চিকিৎসক নিজের চেম্বারে চলে গেছেন। সেখানে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা ভিজিট দিলেই দেখা করা যাবে। নাফিউল বুঝে গিয়েছিলেন, তিনি দালালের চক্করে পড়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দালালের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় র্যাবের সহযোগিতায় গত ১৭ জুন হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন। এ সময় ১৩ জন দালাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এক মালিককে জেল-জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাছিম রেজা। তিনি বলেন, ‘দালালেরা রোগীদের নামসর্বস্ব ক্লিনিক ও ভুয়া চিকিৎসকের কাছে নিয়ে বাড়তি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এরা একটা সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন ধরে গড়ে উঠেছে। এদের নিয়ন্ত্রণ করা এত সহজ নয়। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আছে এতে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। হাসপাতালকে দালালমুক্ত করতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ বিকাশ বিশ্বাসের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তদন্ত কমিটি আমাদের কাছে অতিরিক্ত সাত দিন সময় চেয়েছিল। সে সময় এখনো শেষ হয়নি। দু-এক দিনের মধ্যেই প্রতিবেদন পাব।’
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেবা পেতে রোগী ও তার স্বজনদের কাছ থেকে ঘাটে ঘাটে বকশিশ দিতে হয়। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ), জরুরি বিভাগ থেকে শুরু করে বহির্বিভাগ, প্যাথলজি বিভাগ—সব জায়গায়ই বকশিশ যেন অলিখিত নিয়ম। রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, এই হাসপাতালে মুমূর্ষু রোগীদের যত্ন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রোগীদের ওঠানো-নামানো, এমনকি লাশ পরিবহনেও নেওয়া হচ্ছে টাকা। চাহিদামতো টাকা না দিলে রোগী ও তার স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা, হাসপাতালে লাশ আটকে রাখা, মুমূর্ষু রোগীর মুখ থেকে অক্সিজেন মাস্ক খুলে ফেলা, রোগীকে ইনজেকশন পুশ করে হত্যার হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে হাসপাতালের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। শুধু বকশিশই নয়, হাসপাতালে রয়েছে দালালের দৌরাত্ম্যও।
সম্প্রতি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেওয়া অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ওয়ার্ড কিংবা কেবিনে আনা-নেওয়ার জন্য যতবার তাঁরা হুইলচেয়ার ও স্ট্রেচার ব্যবহার করেছেন, ততবারই হাসপাতালের কর্মচারীদের ১০০ থেকে ৩০০ টাকা বকশিশ দিতে হয়েছে।
গাইবান্ধার দিনমজুর বিশু বিশ্বাস সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ছেলে বিকাশ বিশ্বাসকে নিয়ে ৯ নভেম্বর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ছুটে যান। সেখানে রোগীকে স্ট্রেচারে নেওয়ার জন্য বিশুর কাছে ২০০ টাকা দাবি করেন হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মচারী আসাদুল ইসলাম। বিশু ১৫০ টাকা দিলে আসাদুল ক্ষিপ্ত হয়ে রোগীর মুখের অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেন। এরপর বিকাশ মারা যায়। এ ঘটনার পরদিন আসাদুলের বিরুদ্ধে মামলা করেন হাসপাতালের ওয়ার্ড নির্বাহী। একই সঙ্গে জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তাকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও গতকাল বুধবার পর্যন্তও সে প্রতিবেদন জমা পড়েনি।
নন্দীগ্রামের আমিনুর রহমান (২৯) কয়েক মাস আগে (এপ্রিল) তাঁর গুরুতর অসুস্থ ফুপুকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনেন। তখন রাত সাড়ে ১২টার মতো বাজে। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রোগীকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর লাশ নিয়ে আমিনুর তাঁর স্বজনেরা বাড়ি ফিরতে চাইলে বাধা দেয় অ্যাম্বুলেন্স চক্র। তারা আমিনুলের পরিবারের কাছে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন।
আমিনুর বলেন, ‘ওরা আমাদের বলে, “বাইরের অ্যাম্বুলেন্সে লাশ নেওয়া যাবে না। আমাদের অ্যাম্বুলেন্সে নিতে হবে। পাঁচ হাজার টাকা না দিলে
লাশ নিয়ে যেতে দেব না। এটা আমাদের নিয়ম।” আমি তখন বাধ্য হয়ে অনেক বলেকয়ে দুই হাজার টাকা দিয়ে আমাদের নিয়ে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্সে করেই লাশ নিয়ে চলে আসি।’
এদিকে শুধু বকশিশই নয়, দালালের দৌরাত্ম্যও রয়েছে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেলে। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য গত ১৭ অক্টোবর নাটোর থেকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে এসেছিলেন নাফিউল ইসলাম (৩০)। তখন দুপুর দেড়টা। বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টার বন্ধ হয়ে গেছে। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না নাফিউল। এমন সময় একজন এসে বলছেন, ‘টিকিট কাটতে পারেননি? পাশের রুমে স্যার (ডাক্তার) আছেন, আমার সাথে আসুন।’ সেখানে গেলে কয়েকজন জানান, চিকিৎসক নিজের চেম্বারে চলে গেছেন। সেখানে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা ভিজিট দিলেই দেখা করা যাবে। নাফিউল বুঝে গিয়েছিলেন, তিনি দালালের চক্করে পড়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দালালের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় র্যাবের সহযোগিতায় গত ১৭ জুন হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন। এ সময় ১৩ জন দালাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এক মালিককে জেল-জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাছিম রেজা। তিনি বলেন, ‘দালালেরা রোগীদের নামসর্বস্ব ক্লিনিক ও ভুয়া চিকিৎসকের কাছে নিয়ে বাড়তি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এরা একটা সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন ধরে গড়ে উঠেছে। এদের নিয়ন্ত্রণ করা এত সহজ নয়। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আছে এতে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। হাসপাতালকে দালালমুক্ত করতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ বিকাশ বিশ্বাসের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তদন্ত কমিটি আমাদের কাছে অতিরিক্ত সাত দিন সময় চেয়েছিল। সে সময় এখনো শেষ হয়নি। দু-এক দিনের মধ্যেই প্রতিবেদন পাব।’
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
৮ দিন আগেপাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
৮ দিন আগেভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
৮ দিন আগেঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫