Ajker Patrika

নষ্ট হচ্ছে হাজারো সরকারি গাছ

মনিরামপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ৪৪
নষ্ট হচ্ছে হাজারো সরকারি গাছ

যশোর-চুকনগর আঞ্চলিক মহাসড়কের মনিরামপুর অংশের দুই পাশের সারি সারি বড় গাছগুলো এখন আর নেই। সড়ক সংস্কার করতে গিয়ে গত বছর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এক্সকেভেটর দিয়ে গাছগুলো উপড়ে ফেলেছেন।

শুরুতে মালিকানা নিয়ে জটিলতা থাকায় গাছগুলো রাস্তার পাশে ফসলের জমিতে যত্রতত্র পড়ে ছিল। সুযোগ পেয়ে গাছগুলো সরিয়ে নিতে হানা দেয় চোরচক্র।

একপর্যায়ে জেলা পরিষদ গাছের মালিকানা দাবি করে এগিয়ে এলেও গাছগুলো পড়ে আছে একই অবস্থায়।

ফলে রাস্তার দুই ধারে পড়ে থাকা গাছগুলো রোদ–বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে। গাছগুলো বিক্রি না হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার সরকারি সম্পদ।

জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ বলছেন, পরপর তিন ধাপে গাছগুলো বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। সর্বশেষ দরপত্রের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত মাসে। তিন দফায় ডাকা নিলামে গাছগুলো কিনতে কোনো প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসেনি।

জানা গেছে, যশোরের রাজারহাট থেকে মনিরামপুর হয়ে চুকনগর পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কটি দুই লেন থেকে চারলেনে উন্নীত করতে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ)। সড়ক প্রশস্তকরণের জন্য চারজন ঠিকাদারকে নিযুক্ত করা হয়।

গত বছর থেকে সড়কে কাজ শুরু হয়। দীর্ঘ এ সড়কের দুই পাশে ছিল মেহগনি, শিশু ও শিরিশসহ বিভিন্ন জাতের ছোটবড় হাজার হাজার গাছ।

সড়ক প্রশস্তকরণে দুধারের গাছগুলো কেটে ফেলার প্রয়োজন থাকলেও গাছ বিক্রির জন্য কোনো দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। গাছগুলোর প্রকৃত মালিকানা নির্ধারণ না হওয়ায় রাস্তার কাজ শুরু করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন ঠিকাদার।

এ গাছের দাবিদার ছিল মূলত বন বিভাগ, জেলা পরিষদ এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগ। তিন বিভাগের রশি টানাটানিতে গাছ কাটার জন্য কোনো বিভাগই দরপত্র আহ্বান করতে পারেননি।

একদিকে গাছের মালিকানা নির্ধারণে জটিলতা, অন্যদিকে সড়ক প্রশস্তকরণে ঠিকাদারের কাজের মেয়াদ শুরু হওয়ায় উপায়ন্তর না পেয়ে রাস্তার ঠিকাদার এক্সকেভেটর দিয়ে গাছগুলো উপড়ে ফেলে কাজ শুরু করেন। এক্সকেভেটর দিয়ে উপড়ে যত্রতত্রভাবে গাছগুলো ফেলে রেখেছেন ঠিকাদার। এ সুযোগে অধিকাংশ গাছ লুটপাট হয়ে যায়।

এদিকে গাছ উপড়ে ফেলানো ও রাস্তার পাশে ফসলের খেতে সেগুলো পড়ে থাকায় সমালোচনা শুরু হয়। পরে জেলা পরিষদ গাছের মালিকানা দাবি করে কিছু গাছের লগ সংগ্রহ করে। সেগুলো মনিরামপুর বাজারে অবস্থিত জেলা পরিষদ মিলনায়তন চত্বরে ফেলে রাখা হয়েছে।

এখনো অনেক গাছ পড়ে আছে সড়কের দুপাশের ফসল খেতে। সড়কের পাশের কিছু গাছে ডালপালা থাকলেও অধিকাংশের গাছের মূল অংশ পড়ে আছে।

দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় রোদ–বৃষ্টিতে এসব গাছে এখন পচন ধরেছে। এখনো মনিরামপুরের বেগারিতলা বাজার হতে কুয়াদা বাজার পর্যন্ত রাস্তার দুধারে পড়ে থাকা গাছগুলোর দেখা মেলে।

যশোর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ-উজ-জামান বলেন, ‘গাছগুলো বিক্রির জন্য পরপর তিনবার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। সর্বশেষ দরপত্রের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত মাসে।’

আরিফ-উজ-জামান বলেন, ‘তিন দফায় দরপত্র আহ্বান করা হলেও নিলামে গাছগুলো কিনতে কোনো প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসেননি। পুনরায় দরপত্র আহ্বানের কাজ চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত