Ajker Patrika

বিশেষ আদালতে মামলাজট

শামিমুজ্জামান, খুলনা
আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২১, ১৮: ৪৪
বিশেষ আদালতে মামলাজট

খুলনা বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে ১৮০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন মামলা রয়েছে ৪০৩টি। করোনার কারণে দীর্ঘ বন্ধ, বিচারক পরিবর্তন এবং শূন্যপদে বিচারক নিয়োগে বিলম্বের কারণে মামলার এই অবস্থা।

জানা গেছে, ২০১৯ সালে বিচারক আব্দুস সালাম বদলি হওয়ার পর এক বছরের মধ্যে শূন্যপদ পূরণ হয়নি। দায়িত্বে আসেন বিচারক জিয়া হায়দার। ২০২১ সালের ২০ জুন বদলি হয়ে আলমাচ হোসেন মৃধা দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। তিনি আবার গত ১০ অক্টোবর গোপালগঞ্জে বদলি হন। এরপর থেকে জেলা ও দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী এই আদালতের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন।

আদালতে ১৩২টি বিশেষ মামলা, ১৮৭টি ক্রিমিনাল আপিল, ২২টি টাইটেল আপিল মামলা বিচারাধীন রয়েছে। বাকিগুলোর মধ্যে রয়েছে দায়রা, অর্পিত আপিল ও ক্রিমিনাল রিভিশন আপিল মামলা। প্রতিদিন গড়ে ১৫টি মামলার দিন ধার্য করা হচ্ছে। এ আদালতের উল্লেখযোগ্য মামলার মধ্যে রয়েছে আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের ওষুধ চুরি। এর সঙ্গে ১৩ জনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

এ মামলার অন্যতম আসামি আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. অলোক কুমার মণ্ডল, ফার্মাসিস্ট দেবপ্রসাদ রায়, সুধাংশু কুমার বাড়ৈ। প্লাটিনাম জুবলী জুট মিলের জেনারেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর হোসেন ও ম্যানেজার লিয়াকত হোসেনের বিরুদ্ধে পাট না কিনে চার কোটি টাকা আত্মসাৎ, পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের সার আমদানি না করে প্রাইম ব্যাংক খুলনার ভিপি সৈয়দ জহুরুল হক, কাজী রবিউল ইসলাম ও আমদানিকারক সিংগুয়া ট্রেডের মালিক শেখ আবু রাসেদের বিরুদ্ধে আত্মসাতের অভিযোগ, ২৮ কোটি টাকা মূল্যের পাট ক্রয় না করে সোনালী ব্যাংক, দৌলতপুর করপোরেট শাখার কর্মকর্তা রুহুল আমিন, সিরাজুল ইসলাম ও ইস্টার্ন ট্রেডার্সের মালিক সঞ্জিব কুমার দাসের বিরুদ্ধে আত্মসাতের অভিযোগের মামলাও রয়েছে।

রূপালী ব্যাংকের পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলার আসামি গরিবে নেওয়াজ ক্লিনিকের মালিক আব্দুস সাত্তার ও আব্দুর রহমান ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন বিধায় তাঁরা মামলা থেকে রেহাই পেয়েছেন। মোংলা পৌরসভার চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মৃত্যুবরণ করায় পাঁচটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, স্বাধীনতার পর আদালত গঠন হয়েছে। সেই সময়ের চেয়ে লোকসংখ্যাও বেড়েছে। বেড়েছে বিচারপ্রার্থীর সংখ্যা। এ জন্য সক্ষমতাসম্পন্ন একাধিক আদালত গঠন করলে মামলাজট কমবে তিনি মনে করেন।

অন্যদিকে অ্যাডভোকেট মেহেদি হাসান বলেন, মামলার দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় বিচারপ্রার্থীরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। যাতে মামলাগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি হয়, সে জন্য বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। প্রসঙ্গক্রমে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর খন্দকার মজিবর রহমান উল্লেখ করেন, ১৮০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার কথা থাকলেও বিচারকের অভাবে তা বিলম্ব হচ্ছে। করোনায় দীর্ঘ বন্ধের কারণে বিচারকাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে ছুটি থাকছে। উচ্চ আদালতের স্থগিত হওয়া মামলা বিশেষ আদালতে আসছে। এ মামলারও বিচারকাজ সম্পন্ন হচ্ছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত