Ajker Patrika

স্বাস্থ্যকর্মী গরহাজির, গ্রামের দরিদ্র মানুষ সেবাবঞ্চিত

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা 
Thumbnail image

তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে গাইবান্ধা জেলায় পরিচালিত হচ্ছে ৩০৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা নেই প্রতিষ্ঠানগুলোতে। অধিকাংশই খোলে খেয়ালখুশিমতো। দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়মিত আসেন না। ফলে সেবা নিতে আসা রোগীদের ফিরতে হয় হতাশ হয়ে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্লিনিকগুলোতে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের (সিএইচসিপি) সপ্তাহে ছয় দিন দায়িত্ব পালন করার কথা। একই সঙ্গে ইউনিয়নভিত্তিক স্বাস্থ্য সহকারীদের (এফডব্লিউএ) তিনটি ক্লিনিকে বসে সেবা দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। সেই সঙ্গে সেখানে চাহিদা অনুযায়ী বছরে তিন-চারবার সরকারি ওষুধ সরবরাহ করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো ক্লিনিকে সিএইচসিপি মাসে দু-একবার আসেন। অন্যরাও ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করায় রোগীরা স্বাস্থ্যসেবা নিতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের বোর্ডবাজার ও রাধাকৃষ্ণপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে বন্ধ পাওয়া যায়। এখানে অনেকেই জানেন না, কে সেবা দিতে আসেন কিংবা বিনা মূল্যে ওষুধ পাওয়া যায়।

রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামের এক নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এখানে এক ভাবি কাজ করেন। তাঁর স্বামী নাকি আওয়ামী লীগ করে। তিনি কোনো দিন আসেন আবার কোনো দিন আসেন না। এলেও ঘণ্টাখানেক থাকেন।’

সাঘাটা উপজেলার অধিকাংশ কমিউনিটি ক্লিনিক বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত খোলা থাকে। বেলা দেড়টার দিকে সাঘাটা ইউনিয়নের মুন্সরহাট কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ পাওয়া গেছে।

ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালী ইউনিয়নের কাঠুরখালী কমিউনিটি ক্লিনিক মঙ্গলবার সারা দিন বন্ধ ছিল। অন্যগুলোও স্বাস্থ্যকর্মীদের ইচ্ছামতো পরিচালিত হয় বলে জানা গেছে।

প্রত্যন্ত চরের এড়েন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা আলমাস হোসাইন জানান, চরের মানুষ অশিক্ষিত, অনেকেই আবার কাজে ব্যস্ত থাকেন, তাই এসব ক্লিনিকে সেবা নেওয়ার জন্য দীর্ঘক্ষণ বসে থাকেন না। এ ছাড়া এসব ক্লিনিকে যাঁরা চাকরি করেন, তাঁরা অনেকেই প্রভাবশালী ও ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে জড়িত। এখানে কী ওষুধ এল, কী বিতরণ হলো—এসব দেখার সাহস সাধারণ মানুষের কারও নেই।

এ বিষয়ে কথা হলে ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘শুনেছি নিয়মিত ক্লিনিকগুলো খোলা হচ্ছে না। সাধারণ মানুষ ওষুধ নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন। আমি বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে জানাব।’

যোগাযোগ করা হলে জেলা সিভিল সার্জন আব্দুল্লাহেল মাফী বলেন, ‘কোন কমিউনিটি ক্লিনিক সকাল নয়টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত খোলা রাখে না এবং ওষুধ বিতরণে কোনো অনিয়ম হচ্ছে কি না, তার খোঁজ নেব। অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত