Ajker Patrika

নাটকে এল গণহত্যার ইতিহাস

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২২, ০৯: ৩৯
Thumbnail image

রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে ১৯৭১ সালের ১৫ এপ্রিল বাসা থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের তৎকালীন প্রকৌশলী এ কে এম শামসুদ্দিনকে। স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় কাপ্তাই প্রজেক্টের অনেক কর্মকর্তাসহ আন্দোলনকারীদের ধরে নিয়ে হত্যার পর লাশ কর্ণফুলীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ৩২ জন শহীদের নাম পাওয়া গেছে।

কাপ্তাই গণহত্যা নিয়ে সাংবাদিক ইয়াছিন রানা সোহেলের তথ্য ও গবেষণায় তরুণ নাট্যকর্মী সোহেল রানার রচনা ও নির্দেশনায় তৈরি হয়েছে নাটক ‘৭১-এর রক্তাঞ্জলি’। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাঙামাটির শহীদ আব্দুর শুক্কুর স্টেডিয়ামে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। স্টেডিয়ামে উপস্থিত অতিথি, মুক্তিযোদ্ধা, সংস্কৃতিকর্মীসহ কয়েক শ দর্শককে মুগ্ধ করেছে নাটকটি। পরে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের (পাচউবো) চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমি দেশের সব জেলায় গণহত্যার নাটক মঞ্চায়ন করছে। এর অংশ হিসেবে রাঙামাটিতে প্রায় শত শিল্পীর অংশগ্রহণে ‘৭১-এর রক্তাঞ্জলি’ নাটকটি মঞ্চায়ন করে জেলা শিল্পকলা একাডেমির নাট্যদল।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন শিল্পকলার মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মামুন, পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদা আকতার, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজি কামাল ও শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী।

বাচিক শিল্পী মুজিবুল হক বুলবুল ও শিখা ত্রিপুরার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা শিল্পকলার সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হক বুলবুল।

নাটক দেখতে আসা কাপ্তাই উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির নাট্য বিভাগের প্রধান আনিছুর রহমান ও বেতারের রাঙামাটি কেন্দ্রের সংগীত প্রযোজক রনেশ্বর বড়ুয়া জানান, নাটকটির মাধ্যমে সেই সময়ের কাপ্তাইয়ের নারকীয় গণহত্যার ইতিহাস আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম জানতে পারবে।

কাপ্তাই মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘দর্শক গ্যালারিতে বসে যখন আমি নাটকটি উপভোগ করছি, তখন আমার সামনে সেই ’৭১-এর দিনগুলো ভেসে আসছে।’

নাটকে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করা রাঙামাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার অনুসিনথিয়া চাকমা জানান, ‘৭১-এর রক্তাঞ্জলি’ নাটকের মূল ভাবনা করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। এতে গবেষণা নির্বাহী ছিলেন আবু ছালেহ মো. আব্দুল্লাহ। নাটকের প্রযোজনা ও মঞ্চায়নে ছিলেন আলি আহমেদ মুকুল। মঞ্চ, আলো ও সংগীত পরিকল্পনা করেছেন আশিক সুমন। মঞ্চায়ন ও সার্বিক সহযোগিতা করেন চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার মোসলেম উদ্দিন সিকদার লিটন। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন রাঙামাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হক বুলবুল।

বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রদীপ প্রজ্বালন ও পরে নাটক মঞ্চায়ন করা হয়। আলোচনা সভা শেষে তথ্য সরবরাহ ও গবেষণায় ইয়াছিন রানা সোহেল, নাটক রচনায় মো. সোহেল রানা ও মঞ্চ পরিকল্পনায় সৈয়দ আশিক সুমনকে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন অতিথিরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত