Ajker Patrika

মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্বের রহস্য

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্বের রহস্য

মহাকাশে অনন্য এক অর্জন দিয়ে নতুন বছরটি শুরু হয়েছে। গত মাসে অর্থাৎ জানুয়ারিতে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার রোভার কিউরিওসিটি মঙ্গল গ্রহের গ্যাল আগ্নেয়গিরির পাথরে খুঁজে পেয়েছে কার্বনের আইসোটপের মিশ্রণ। কোথাও এই মিশ্রণ পাওয়ার অর্থ, সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল অথবা আছে। এ ছাড়া মিথেনের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে নাসার এই রোভার। জৈব যৌগ মিথেনও প্রাণের অস্তিত্বেরই ইঙ্গিত দেয়। এই দুই অনুসন্ধানের পর বিজ্ঞানীদের মনে কোনো ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্বের সন্ধান পাওয়ার প্রত্যাশা বহুগুণে বেড়ে গেছে।

তাই বলে মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব পাওয়া যাবেই—তাও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। উল্টো সৌরজগতের লাল এ গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে একের পর এক রহস্য তৈরি হচ্ছে। পারসিভারেন্স ও কিউরিওসিটি রোভার কিংবা হেলিকপ্টার ইনজেনুইটি একের পর এক প্রমাণ হাজির করছে বিজ্ঞানীদের সামনে। তবুও দ্বিধা কাটছেই না। এসব দ্বিধা আর রহস্য আসলে কী নিয়ে? ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সাময়িকীতে এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এ রহস্যের গল্প।

কোথাও জৈবিক প্রমাণ মিললেই বলে দেওয়া যায় না সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব আছে। বাইরের কোনো গ্রহ থেকে ‘ভিনগ্রহবাসী বা এলিয়েন’ এসেও সেই অস্তিত্ব রেখে যেতে পারে। কিংবা গ্রহাণুর অংশও হতে পারে। এ ছাড়া মঙ্গলের ভূতাত্ত্বিক গঠন কিংবা রাসায়নিক উপাদানের গাঁথুনি আজও বিজ্ঞানীদের অজানা। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের জ্যোতির্বিদ অ্যামি উইলিয়ামসের কণ্ঠে অবশ্য ভিন্ন সুর। তিনি বলছেন, ‘আমাদের গ্রহের সঙ্গে মঙ্গলের বেশ মিল যেহেতু রয়েছে, এতে প্রাথমিকভাবে বলে দেওয়া যায় যে কখনো না কখনো সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল। অদূরভবিষ্যতে লাল এ গ্রহেই বসবাস করতে পারবে মানুষ।’ 
তবে প্রাথমিক পর্যালোচনা বলছে, মঙ্গলে জীবন এত সহজ ছিল না। যে অণুজীবের নমুনা পাওয়া গেছে, সেটি কীভাবে টিকে ছিল, তাও রহস্যময়। তবে ২০১২ সাল থেকে এ প্রাণের অস্তিত্ব বের করতে কাজ করে যাচ্ছে নাসার রোভার কিউরিওসিটি। এই রোভারের অন্যতম উদ্দেশ্য পানি, শক্তি এবং জৈবিক উপাদানের খোঁজ করা। ইতিমধ্যেই জানা গেছে, মঙ্গলের একটি আগ্নেয়গিরির কাছে একসময় হ্রদ ছিল।

পেনসিলভানিয়া স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিদ ক্রিস্টোফার হাউস বলেছেন, ‘কার্বনের সঙ্গে প্রাণের অস্তিত্বের যোগসূত্র রয়েছে, এটি সত্য। কিন্তু আমাদের গ্রহে যেভাবে এর রাসায়নিক গঠন দেখা যায়, অন্য গ্রহে সেভাবেই হবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। পারিপার্শ্বিক উপাদানের ওপর বিষয়টি নির্ভর করছে।’ 
গত বছর নাসার রোভার পারসিভারেন্স জেজেরো নামক মঙ্গলের একটি আগ্নেয়গিরির মুখে বেগুনি রঙের অদ্ভুত শিলার খোঁজ পায়। গবেষকেরা বলছেন, পৃথিবীর মরু এলাকায় এ ধরনের শিলা দেখা যায়। শিলার ওপরের আস্তরণ দেখে ধারণা করা হচ্ছে, এখানে থাকতে পারে কোনো অণুজীব।

মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্বে এত রহস্যের পরও থেমে নেই বিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিদ্যা। একেকটা ছোট্ট আবিষ্কারের মাধ্যমে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। সেখানে প্রাণের অস্তিত্বের সন্ধান পেলে তা হবে ইতিহাসের সেরা আবিষ্কার। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রশ্নে যে প্রতিক্রিয়া জানাল যুক্তরাষ্ট্র

২ ম্যাচ খেলেই মোস্তাফিজ কীভাবে ৬ কোটি রুপি পাবেন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত