Ajker Patrika

ঝুট, বিএনপি ও বাস্তবতা

সম্পাদকীয়
ঝুট, বিএনপি ও বাস্তবতা

বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব বারবার দলীয় নেতা-কর্মীদের সহিংসতা, চাঁদাবাজি, দখল ইত্যাদি থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিচ্ছেন। কিন্তু স্থানীয়ভাবে সুযোগ পেলেই খোলস থেকে বেরিয়ে আসছে পেশিশক্তি। বিএনপি পরিচয়েই তারা চালাচ্ছে সহিংসতা। সে রকমই একটি ঘটনা দৃশ্যমান হলো গাজীপুরের শ্রীপুরে। বেরাইদের চালাগ্রামে অবস্থিত একটি পোশাক কারখানা থেকে ঝুট নেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধেছিল গত বুধবার। পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার মধ্যে ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে। আর এ সময় যা হয়, রাস্তায় চলমান নিরীহ কিছু গাড়ি ভাঙচুর করে শক্তি প্রদর্শন করেছেন বিবদমান দুই পক্ষের কর্মীরা। 

আমাদের দেশের দুই বৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। ফলে অবধারিতভাবে বিএনপির হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা উঠে আসতে যাচ্ছে, এ রকম একটা ধারণা ছিল অনেকের মনে। এমনকি ক্ষমতার পালাবদলের পরপরই লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তৃতা প্রচার করতে থাকে দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো। কিন্তু বিএনপির জন্য ক্ষমতায় চলে আসা যে সহজ নয়, সে বার্তাও তারা পেয়ে যায় অচিরেই। জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে বিভেদ বেড়ে যায় এবং দুই পক্ষ দুইভাবে নতুন সময়ের মূল্যায়ন করতে থাকে। 

কথাগুলো বলার কারণ হলো, ক্ষমতার পালাবদলের পর একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া ক্ষমতাই যে সেই পদে অধিষ্ঠিত মানুষকে স্বৈরাচারে পরিণত করে, তা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল। সংবিধান যেন গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে পারে, সে চেষ্টা করা হবে বলে জনমতও গড়ে উঠেছিল। অন্তর্বর্তী সরকার সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বটে, কিন্তু আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরেই যে গণতন্ত্র নেই, সে কথাও তো আসতে হবে আলোচনায়। সরকারপ্রধান যেমন মনে করে থাকেন, তিনিই একমাত্র সকল ক্ষমতার অধিকারী, দলীয় প্রধানও তো একই রকমভাবে তাঁর দল চালান। তাহলে গণতান্ত্রিক ধারা কীভাবে দলীয় কার্যক্রমে রক্ষিত হবে? লুটপাটের রাজত্ব তো শুধু আওয়ামী লীগই কায়েম করেনি, এর আগে সামরিক-বেসামরিক সব সরকারই তো লুটপাটের পথ উন্মুক্ত রেখেছে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় লুটপাটের ইতিহাস তো আজকের নয়। 

এই সংকটে পড়ে গেছে দেশের সব রাজনৈতিক দল, বিএনপি তার ব্যতিক্রম হবে কী করে? লুটপাটের সুযোগ পেলে কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলে না। গাজীপুরের ঝুট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ সেই প্রবণতার কথাই নতুন করে মনে করিয়ে দেয়। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি দলটি জামায়াতকে সঙ্গী করে যেভাবে শাসনকাজ চালিয়েছে, তাকে কোনোভাবেই সুশাসন বলা যাবে না। বরং আওয়ামী লীগ তাদের পরবর্তী শাসনামলে বিএনপিকে অনুসরণ করে আরও অনেক দূর এগিয়েছে। তাই দলের অভ্যন্তরে এবং কর্মীদের মানসিকতায় সত্যিকারের গণতন্ত্রের বীজ রোপিত না হলে এই পেশিশক্তি প্রদর্শন থেকে নিষ্কৃতি নেই দেশের জনগণের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

পারভেজ হত্যায় অংশ নেয় ছাত্র, অছাত্র ও কিশোর গ্যাং সদস্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত