Ajker Patrika

দেড় মণ ধান বেচে এক দিনের মজুরি

নরসিংদী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ মে ২০২২, ১৫: ৩৩
দেড় মণ ধান বেচে এক দিনের মজুরি

নরসিংদীর মনোহরদীতে চলছে বোরো ধান কাটার ধুম। প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে চাষিরা খেতের ধান সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে উপজেলায় ধান কাটা ও মাড়াইয়ের জন্য দিনমজুরের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এ কারণে ফলন ভালো হলেও স্বস্তিতে নেই কৃষক ও গৃহস্থ। এ ছাড়া মজুরি বেশি হওয়ায় ধান কাটার জন্য শ্রমিক জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চাষিদের।

উপজেলার চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কৃষি শ্রমিকদের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় মাঠের পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন তাঁরা। চলতি মৌসুমে এক দিনের জন্য প্রতি শ্রমিককে তিন বেলা খাওয়াসহ ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে দেড় মণ ধান বিক্রি করে একজন শ্রমিকের মজুরি দিতে হচ্ছে তাঁদের।

উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, ধান কেটে ঘরে তোলার পর বিক্রির সময় দাম না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন কৃষকেরা। অনেকে ধানের বাজারদর শুনে ধান উৎপাদন খরচ তুলতে পারবেন কি না এমন দুশ্চিন্তা নিয়েই মাঠের ধান কাটছেন।

কৃষকেরা জানান, ১ বিঘা জমিতে ধান রোপণ থেকে শুরু করে কাটা মাড়াই পর্যন্ত খরচ পড়ে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। আর ধান পাওয়া যায় ১৮ থেকে ২০ মণ। সে তুলনায় কৃষক এবার বিঘা প্রতি পাবে ১৪ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা।

এ বিষয়ে কথা হয় শুকুন্দী এলাকার কৃষক মানিক মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি ৫ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। এতে আমার প্রায় ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আমি আশা করছি ৯০ মণ ধান পাব। তবে বাজারে ধানের দাম কম থাকায় লাভবান হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তিনি আরও বলেন, ধান কাটার কামলা, সার ও কীটনাশকসহ প্রয়োজনীয় সকল উপকরণের দাম বেশি। শুধু ধানের দাম কম। প্রতি মণ ধানের দাম আট শ টাকা আর একজন কামলার প্রতিদিনের মজুরি ১২ শ টাকা। এই দামে ধান বিক্রি করে প্রতি বিঘা জমিতে মোটা অঙ্কের লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের।

বর্গা চাষি আবুল কালাম বলেন, লাভের আশায় ধার করে বোরো ধান আবাদ করেছিলাম। ধান চাষে যে খরচ আর মৌসুমের সময় কামলার যে দাম তাতে খরচ ওঠানোই সম্ভব নয়।

মনোহরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার বলেন, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ১১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আবাদ করা হয় ১০ হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে। এবার ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৯ হাজার ১৮০ মেট্রিক টন। ফলনও ভালো হয়েছে। ধান কাটার শেষ সময় পর্যন্ত পরিবেশ অনুকূলে থাকলে কৃষক লাভবান হবেন বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত