Ajker Patrika

বেশি দামেও মিলছে না তেল

মহিউদ্দিন রানা, ঈশ্বরগঞ্জ
আপডেট : ১১ মে ২০২২, ১৪: ১৭
Thumbnail image

সরকার নির্ধারিত সয়াবিন তেলের নতুন দাম কার্যকর হওয়ার পর ঈশ্বরগঞ্জে হঠাৎ করেই উধাও হয়ে গেছে এক ও দুই লিটারের তেলের বোতল। তবে কয়েকটি দোকানে ১ লিটারের বোতল পাওয়া গেলেও সেগুলোর মোড়কে ১৬০ টাকা লেখা থাকলেও তা বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। তবু ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী মিলছে না তেল। তেলের বাজারের এমন অস্থিরতায় বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। তবে বিশেষ করে ভোজ্যতেলের অতিরিক্ত দামে নাভিশ্বাস উঠেছে নিম্ন আয়ের মানুষের।

ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ দোকানেই এক ও দুই লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল নেই। হাতেগোনা যে কয়েকটি দোকানে সয়াবিন তেল রয়েছে, সেগুলোও বিক্রি হচ্ছে মোড়কে লেখা দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে।

জানা যায়, সরকার খোলা সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ১৮০ টাকা নির্ধারণ করলেও ঈশ্বরগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে তা ২১০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে খোলা বাজারে সয়াবিন তেল বলে পাম তেলও বিক্রি হচ্ছে একই দামে। আবার বোতলের চেয়ে খোলা তেলের চাহিদা বেশি থাকায় অধিকাংশ দোকানি বোতলের তেল বের করে খোলা হিসেবেই বিক্রি করছেন। তবে খোলা তেলের দাম নিচ্ছেন বোতলের চেয়ে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি।

এদিকে ধাপে ধাপে তেলের বাজারের এমন অস্থিতিশীলতায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন-মধ্যবিত্তসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষ। এ অবস্থায় অতিরিক্ত দাম দিয়েও চাহিদামতো সয়াবিন তেল পাচ্ছেন না ক্রেতারা। তাঁদের অভিযোগ পরবর্তী সময়ে আরও বেশি দামের আশায় গোডাউনে তেল মজুত করছেন ব্যবসায়ীরা। যে কারণে তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে থেকে বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো চাহিদা অনুযায়ী তেল সরবরাহ না করায় সয়াবিন তেলের এমন সংকট দেখা দিয়েছে।

মো. শফিউল্লাহ সুমন নামে এক ভোক্তা বলেন, ‘সয়াবিন তেল এখন স্বর্ণের চেয়েও মূল্যবান হয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে। কেননা, টাকা দিলে ভরি ভরি স্বর্ণ মিললেও মিলছে না তেল। ১৬০ টাকা বোতলের মোড়কের তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। তবু বাজারে তেলের সংকট।’

ঈশ্বরগঞ্জ পৌরবাজারে সয়াবিন তেল কিনতে আসা মো. আ. কুদ্দুস বলেন, ‘৮ থেকে ১০টি দোকান ঘুরে একটিতেও ১/২ লিটার তেলের বোতল পাইনি। আর আমার মতো নিম্নবিত্ত লোকের ৫ লিটার তেল কেনার সামর্থ্যও নেই। যে কারণে বাধ্য হয়ে খোলা তেল কিনে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।’ কুদ্দুস আরও বলেন, ‘খোলা তেলে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দুই নম্বরি করছেন। একে তো বোতলের চেয়ে ১০ থেকে ২০ টাকা দাম বেশি নিচ্ছে, অন্যদিকে পাম তেলও মিশিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। এতে করে ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্কুলশিক্ষক বলেন, বছর দেড়েক আগেও পাম তেল ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা লিটার, আর সয়াবিন ছিল ১০০ থেকে ১১০ টাকা। জীবনেও ভাবিনি এক-দেড় বছরের ব্যবধানে পাম তেল হয়ে যাবে ১৮০ টাকা, আর সয়াবিন তেল হয়ে যাবে ২২০ টাকা লিটার। এ সময় তেলের লাগামহীন দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

তবে বাজারের ভোজ্যতেলের বিক্রেতারা বলছেন, ‘কোম্পানিগুলোকে অগ্রিম টাকা পাঠিয়েও চাহিদামতো তেল পাওয়া যাচ্ছে না। কোম্পানির লোকজন বোতলজাত তেল সরবরাহ না করলে আমাদের তো কিছু করার নেই। আর সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ীই তেল বিক্রি করছি আমরা।’

এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, ‘ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারদর নিয়ন্ত্রণে প্রতিনিয়ত তদারকি করা হচ্ছে। তবু যাঁরা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে তেল বিক্রি করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত