Ajker Patrika

সরকারি জমি দখল করে মার্কেট

রাতুল মণ্ডল, শ্রীপুর (গাজীপুর) 
সরকারি জমি দখল করে মার্কেট

গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর শহরে জেলা পরিষদের জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে সারি সারি দোকান। এসব দোকান নির্মাণের ফলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার সড়কটি সরু হয়ে গেছে। এতে সড়কটিতে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হয় যানজট। পথচারী ও রোগীরা পড়েন ভোগান্তিতে।

মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বলছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মার্কেট নির্মাণ করেছেন তাঁরা, তবে কে নির্মাণ করছেন এ বিষয়ে কেউ কথা বলতে রাজি হননি। অপরদিকে জেলা পরিষদের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মার্কেট নির্মাণ করার জন্য কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রীপুর পৌরসভা থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হয়ে গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি সংযোগ সড়কের পূর্বপাশে গড়ে উঠেছে একাধিক দোকান। এ সড়কে হাজারো রোগীর যাতায়াত। রাস্তার পাশে মার্কেট নির্মাণের ফলে সড়ক সরু হওয়ায় প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হয় যানজট। এসব দোকানে ঝুঁকি নিয়ে কেনাকাটাও করতে দেখা যায় অনেককে।

হাসপাতালে আসা শামীম হোসেনের সঙ্গে কথা হয় মার্কেটের পাশে। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে যাওয়ার রাস্তার একপাশে নতুন করে নির্মাণ হয়েছে মার্কেট, অপর পাশে কত অস্থায়ী দোকান। এ কারণে পরিবহনে বা হেঁটে চলাচল করা খুবই কঠিন। এগুলো উচ্ছেদ করে ভোগান্তি দূর করার দাবি জানাই।’

হাসপাতালে আসা অপর অসুস্থ রোগীর স্বজন তাসলিমা খাতুন বলেন, ‘চৌরাস্তা থেকে হাসপাতালে আসার রাস্তায় প্রায় সব সময় যানজট লেগে থাকে। হাসপাতালের রাস্তাটা আরও প্রশস্ত হলে এই সমস্যা হতো না। দুপাশের অস্থায়ী স্থাপনা ভেঙে রাস্তা প্রশস্ত করলে আমাদের ভোগান্তি দূর হবে।’ 

এই সড়কে চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মো. রমজান আলী বলেন, ‘আমাদের প্রতিদিন এই সড়কে যানজটের মধ্যে পড়তে হয়। এই মার্কেট এখানে না থাকলেও হয়তো এত বেশি যানজট হতো না।’

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রণয় ভূষণ দাস বলেন, ‘হাসপাতালের সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে অনেক অস্থায়ী দোকান গড়ে উঠেছে। এসব দোকানের কারণে হাসপাতালের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। হাসপাতালের রাস্তা আরও প্রশস্ত হলে সবার 
সুবিধা হবে।’

শ্রীপুর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মাসুদ প্রধান বলেন, ‘জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আমার একজন লোক সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মার্কেট নির্মাণ করেছে। আমি কয়েকটি দোকানের দেখাশোনা করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘পরে যে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো অবৈধ।’ সেগুলো কারা নির্মাণ করছে? এমন প্রশ্নের জবাবে কাউন্সিলর কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার মো. মামুন বলেন, ‘কাউকে মার্কেট নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়নি। জেলা পরিষদ কখনো সরু রাস্তার পাশের জমিতে মার্কেট করার জন্য অনুমতি দেয় না। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

জেলা পরিষদের প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘মার্কেট নির্মাণের বিষয়টি আমার জানা নেই। আগে যে জমি লিজ দেওয়া ছিল সেগুলোর মেয়াদকাল কয়েক বছর আগে শেষ হয়েছে। নতুন করে কাউকে মার্কেট নির্মাণের জন্য লিজ দেওয়া হয়নি।’

গাজীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে খোঁজখবর নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত