Ajker Patrika

গরমে হাঁসফাঁস জনজীবন

চৌগাছা প্রতিনিধি
Thumbnail image

প্রতিদিন সকাল ৬টা বাজতে না বাজতেই সূর্যের তাপ ছাড়িয়ে যাচ্ছে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বেলা গড়াচ্ছে আর তাপমাত্রা বাড়ছে, সূর্যের দাপট হচ্ছে প্রখর।

গত কয়েক দিন থেকে তাপমাত্রার এই ঊর্ধ্বমুখী অবস্থানে হাঁসফাঁস হয়ে উঠেছেন যশোর জেলার মানুষ। একই দশায় পড়েছে গবাদিপশু-পাখিও।

 গতকাল সোমবার ও আগের দিন রোববারের পরিস্থিতি ছিল বেশি অসহনীয়। প্রচণ্ড গরমে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। গরমের প্রভাবে ঈদবাজারেও তেমন লোকজন দেখা যাচ্ছে না।
বিপণিবিতানগুলোতে মানুষের উপস্থিতি থাকছে তুলনামূলক কম। সেই সঙ্গে অসহনীয় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন যশোরবাসী।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত যশোরের তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।

যশোর বিমান বন্দর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, রোববার যশোরের তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবারও ঊর্ধ্বমুখী। আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।

এ দিকে অতিরিক্ত গরমজনিত কারণে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালে। বিশেষ করে ডায়রিয়া, অ্যাজমা, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগসহ নানাবিধ সমস্যায় পড়ছে মানুষ। এ অবস্থায় বাইরে সাবধানতার সঙ্গে চলাচলের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। অন্যথায় পানিশূন্যতা থেকে ডায়রিয়া-জন্ডিস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি হিট স্ট্রোকেও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বলেও জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

সোমবার ছিল চৌগাছার সাপ্তাহিক বাজারের (হাটবার) দিন। তাপমাত্রার বিরূপ পরিস্থিতিতে সেখানে সাধারণ মানুষ চরম অস্বস্তিতে পড়েন। সাপ্তাহিক বাজারের দিন হওয়ায় চৌগাছার বড় কাঁচা বাজারে সবজি নিয়ে আসতে বাধ্য কৃষকদের চরম অস্বস্তিতে পড়তে দেখা গেছে। ঈদ বাজারের বিপণিবিতানগুলোতেও নারী ও শিশু ক্রেতাদের হাঁসফাঁস করতে দেখা গেছে। কাঁচা বাজারের অনেককেই দেখা গেছে, বারবার পানি দিয়ে মাথা, মুখ ধুয়ে ফেলতে। একই অবস্থা বিপণিবিতানগুলোতে নারী ও শিশুদের।

অন্যদিকে যশোর শহরে মানুষের উপস্থিতি ছিল খুবই স্বল্প। সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতে কর্মকর্তা কর্মচারীদের উপস্থিতি থাকলেও প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হয়নি। শহরে অবস্থানকারীরা কোনো না কোনো প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই বেশির ভাগ সময় অতিবাহিত করেছেন। সড়কগুলোর ছিল প্রায় ফাঁকা। রিকশা-ইজিবাইকগুলোতে যাত্রী ছিল খুবই কম। 
জেলার সব উপজেলাতেই তাপমাত্রার প্রায় একই অবস্থা হলেও গত কয়েক দিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়া চুয়াডাঙ্গা জেলার নিকটবর্তী হওয়ায় চৌগাছা উপজেলার তাপমাত্রা তুলনামূলক বেশি।

আবহাওয়া অফিসের ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাস থেকে জানা যায়, দেশের কয়েকটি এলাকার সঙ্গে খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে এবং তা বিস্তার লাভ করতে পারে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে দিনের তাপমাত্রা এক থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে। বাড়তে পারে রাতের তাপমাত্রাও।

যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, প্রচণ্ড গরমে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে ডায়রিয়া, অ্যাজমা, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগসহ নানাবিধ সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ। গরমে সুস্থ থাকতে বেশি পরিমাণে পানি পান করা 
এবং সাবধানে চলাচল করার পরামর্শ দেন তিনি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত