Ajker Patrika

মশা ধুলায় অতিষ্ঠ জনজীবন

বাবলু মোস্তাফিজ, ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া)
আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২২, ১৮: ৫৮
মশা ধুলায় অতিষ্ঠ জনজীবন

রাতদিন মশার কামড় ও ধুলায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার পৌরবাসীর জনজীবন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পৌর প্রশাসনের পক্ষ থেকে মশা নিধনে কোনো কার্যক্রম নেই বললেই চলে। মশার কামড় খেয়েই জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাঁদের। এদিকে মশাবাহিত, শ্বাস ও ফুসফুসজনিত রোগের শঙ্কায় ভুগছে পৌরবাসী। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ধুলায় বায়ুদূষণের কারণে।

জানা গেছে, শহরে সারা রাত ধরে ডাম্প ট্রাক ওভারলোড করে মাটি ও বালু বহন করে নিয়ে যায়। এ সময় ওভারলোডের কারণে বড় বড় কাদামাটির দলা সড়কে পড়তে পড়তে যায়। সেগুলো শুকানোর পর যানবাহন চলাচলের সময় ধুলা উড়তে থাকে। শহরে ধুলায় কুয়াশার মতো সৃষ্টি হয়। নিশ্বাস নিতেই কষ্ট হয় পথচারীদের। দোকান-বসতঘরে ধুলার আস্তরণে ছেয়ে যায়।

ভেড়ামারা পৌরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডের একাধিক ব্যক্তি জানান, আগে মাঝেমধ্যে পৌরসভার উদ্যোগে মশা নিধনের স্প্রে করলেও নিয়মিত নয়। দীর্ঘদিন মশা নিধন স্প্রে না করায় মশার দখলদারি বেড়েছে। বেড়েছে ডাম্প ট্রাকের দৌরাত্ম্যও। নিয়ম অমান্য করে ওভারলোড করে মাটি ও বালু পরিবহন করছে এসব যান। ত্রিপল দিয়ে ঢাকার কথা থাকলেও তা মানছে না।

পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুপ্রিয়া বলেন, ‘শুধু রাতে না, দিনেও ঘর একটু অন্ধকার হলেই মশা কামড়াচ্ছে। কয়েল জ্বালালেও কাজ হয় না। নালা পরিষ্কার তবে সেই পানিতে ঝাঁকে ঝাঁকে মশা।’

পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী বোরহান খন্দকার জানান, ‘ডাম্প ট্রাকে উঁচু করে মাটি ও বালু নিয়ে যায়। সেই মাটি ও বালু রাস্তায় পড়ে দিনে শুকিয়ে শহর ধুলায় ঢেকে যায়। প্রতিদিন দোকানের মালামাল নষ্ট হচ্ছে। বায়ুদূষণ হয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগে সন্ধ্যা নামার পর থেকেই ঘরে মশার উপদ্রব বেড়ে যেত। এখন দিনেও মশার উপদ্রব।’

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. নুরুল আমিন বলেন, ‘বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার করাসহ নালা ও খালের মশা নিধনে নিয়মিত স্প্রে করতে হবে। কারণ, এসব স্থানে মশার বংশ বৃদ্ধি ঘটে। ধুলাবালুর কারণে বায়ুদূষণ হয়। এতে বাসিন্দারা ফুসফুসজনিত রোগ, শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, অ্যালার্জি, চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে।’

এ বিষয়ে ভেড়ামারা পৌরসভার সচিব কাজী শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘মশার ওষুধ ছিটানোর জন্য পৌরসভায় সব ব্যবস্থাই রয়েছে। মাঝেমধ্যে মশার ওষুধ ছিটানো হয়। দু-এক দিনের |মধ্যে মশা নিধনে ব্যাপকভাবে ওষুধ ছিটানো হবে।’

ভেড়ামারা পৌরসভার মেয়র আনোয়ারুল কবির টুটুল বলেন, ‘মাঝে মধ্যেই ওষুধ ছিটানো হয়। নালা পরিষ্কার করায় একটু ব্যাঘাত ঘটেছে। আমরা মশা নিধনের লক্ষ্যে বড় ধরনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। শিগগিরই ফগার মেশিন দিয়ে মশা নিধন করা হবে। ধুলায় বায়ুদূষণের বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীনেশ সরকার বলেন, ‘সড়কে মাটি পড়ে ধুলার সৃষ্টি হচ্ছে, বিষয়টি নজরে এসেছে। শিগগিরই অভিযান চালিয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত