Ajker Patrika

মন্ত্রের জোরে দুই পাতা টেনে খাসি পেলেন তান্ত্রিক আলম

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
মন্ত্রের জোরে দুই পাতা টেনে খাসি পেলেন তান্ত্রিক আলম

মাঠের মাঝখানে পোঁতা একটি কলাগাছ। পাতা হিসেবে তিন ব্যক্তিকে রাখা। তান্ত্রিক দল তন্ত্রমন্ত্রের জোরে ওই পাতা কাছে টেনে এনে বিজয়ী হওয়ার চেষ্টা করছে। এমন বর্ণনা হলো ঐতিহ্যবাহী পাতা খেলার। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার কাজিহাল ইউনিয়নের পুখরী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে এভাবে পাতা খেলা করতে দেখা গেছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আজম মণ্ডল রানার পৃষ্ঠপোষকতায় ওই পাতা খেলার আয়োজন করা হয়। খেলা দেখতে মাঠের চারপাশে নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সের উৎসুক মানুষ ভিড় জমান। আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসা এই খেলার আয়োজন করায় খুশি হয়েছেন দর্শকেরা। তান্ত্রিকেরা তন্ত্রমন্ত্র দিয়ে এ খেলা করেন।

খেলা শেষে বিজয়ী দলের হাতে একটি খাসি ও রানার্সআপ দলের হাতে একটি রাজহাঁস পুরস্কার হিসেবে তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্যবসায়ী মো. আজম মণ্ডল রানা। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক অমর চাঁদ গুপ্ত অপু, সাবেক ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন, ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

আয়োজকেরা জানান, খেলায় অংশ নেয় চারটি তান্ত্রিক দল। দলগুলো হলো মাদিলাহাট এলাকার মিলনের দল, কড়াই পশ্চিমপাড়ার আলমের দল, রশিদপুর মিরপুর নুরুজ্জামানের দল ও আমড়া গ্রামের তান্ত্রিক আতিয়ার সর্দারের দল। অন্যদিকে পাতা হিসেবে ছিলেন তিন ব্যক্তি। তাঁরা হলেন চক মথুরা এলাকার নিকুঞ্জ, শ্রীকৃষ্ণপুর এলাকার গোলজার হোসেন ভোলা ও কড়াই এলাকার তোশাররফ হোসেন।

খেলায় মাঠের মাঝখানে একটি কলাগাছ পুঁতে পাতা হিসেবে তিন ব্যক্তিকে রাখা হয়। তান্ত্রিকেরা তন্ত্রমন্ত্রের জোরে ওই পাতাকে টানেন নিজেদের কাছে। যে দল তাদের কাছে পাতাকে টেনে আনতে পারবে, তারাই বিজয়ী হবে।

খেলায় নিজ নিজ দক্ষতা দেখিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেন তান্ত্রিকেরা। খেলায় দুটি পাতা টেনে আলম তান্ত্রিক বিজয়ী হওয়ায় তাঁর দলকে উপহার হিসেবে একটি খাসি দেওয়া হয়। একটি পাতা টেনে রানার্সআপ হওয়ায় তান্ত্রিক মিলন দলকে একটি রাজহাঁস উপহার দেওয়া হয়।

ঐতিহ্যবাহী এই খেলা দেখতে মাঠজুড়ে নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সের হাজারো উৎসুক মানুষ ছিল।

খেলায় অংশগ্রহণকারী তান্ত্রিক আতিয়ার সর্দার বলেন, ‘এই খেলা আসলে হিন্দু সম্প্রদায়ের মনসাপূজার পরপরই হয়। এটি আমাদের গ্রামবাংলার ঐতিহ্য।’

তান্ত্রিক আলম বলেন, ‘এখানে বিজয়ী হওয়াটাই বড় কথা নয়, এ খেলায় তান্ত্রিকের মন্ত্রের শক্তি পরীক্ষা হয়। আমরা ১৫ বছর ধরে এই খেলা খেলছি। যে যত মন্ত্রের শক্তি দেখাতে পারবে, সে বিজয়ী হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত