Ajker Patrika

মাকসুদুল আলম

মাকসুদুল আলম

মাকসুদুল আলম ছিলেন বাংলাদেশি জিনতত্ত্ববিদ। পাটের জীবনরহস্য উন্মোচন করে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট ও ডেটাসফটের একদল উদ্যমী গবেষকের যৌথ প্রচেষ্টায় ২০১০ সালে সফলভাবে উন্মোচিত হয় পাটের জীবনরহস্য। 

তিনি ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞান বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন। সেই ভাবনা থেকে একসময় তাঁর কনিষ্ঠ ভ্রাতা এবং একজন বন্ধু মিলে গঠন করেন ‘অনুসন্ধানী বিজ্ঞান ক্লাব’। এই ক্লাবের প্রধান কাজ ছিল বৃক্ষ পর্যবেক্ষণ করা, বিভিন্ন গাছের চারা লাগানো এবং পাতা সংগ্রহ করা। এরপর সংগৃহীত গাছের পাতা অ্যালবামে সাজিয়ে গাছগুলোর বৈজ্ঞানিক নাম বই দেখে দেখে বের করতেন তাঁরা।

মাদারীপুরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য তিনি রাশিয়ায় চলে যান। সেখানে মস্কো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮২ সালে অণুপ্রাণবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং ১৯৮৭ সালে জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাংক ইনস্টিটিউট থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ে বসবাস করতেন।

তিনি বিভিন্ন গবেষণার কাজে বিদেশে থাকলেও নিজ দেশকে কখনোই ভুলে যাননি। নিজের অর্জিত জ্ঞান ও প্রতিভার প্রতিদানস্বরূপ তিনি দেশের উন্নতির দিকেও নজর দিয়েছিলেন। তাঁর এই মানসিকতা অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের গবেষকদের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে।
পাট ছাড়াও তিনি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হয়ে পেঁপে, মালয়েশিয়ার হয়ে রাবারসহ আটটি উদ্ভিদের জীবনরহস্য উন্মোচন করেন।

তিনি হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘এক্সিলেন্স অব রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড’, এনআইএইচ ‘শ্যানন অ্যাওয়ার্ড’, জার্মান সায়েন্স ফাউন্ডেশন থেকে ‘হাম্বল্ট রিসার্চ ফেলোশিপ’ লাভ করেন। 

তাঁকে বাংলাদেশ সরকার ২০১৬ সালে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক প্রদান করে। দীর্ঘদিন যকৃতের সিরোসিস রোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। এই প্রথিতযশা জিনতত্ত্ববিদ ৬০ বছর বয়সে ২০১৪ সালের ২০ ডিসেম্বরে মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত