Ajker Patrika

টাঙ্গাইলের ১২ উপজেলায় নেই কোনো চক্ষু চিকিৎসক

আনোয়ার সাদাৎ ইমরান, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলের ১২ উপজেলায় নেই কোনো চক্ষু চিকিৎসক

টাঙ্গাইলের ৩৮ লাখ জনসংখ্যার জন্য জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে নেই কোনো চক্ষু চিকিৎসক। ফলে চোখের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসা রোগীদের ফিরে যেতে হচ্ছে বিনা চিকিৎসায়। অন্যদিকে  বেশি টাকা খরচ করে বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাসেবা নিতে হচ্ছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষকে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলার মধ্যে সদর, দেলদুয়ার ও মির্জাপুর উপজেলায় চক্ষু চিকিৎসকের কোনো পদ নেই। অপরদিকে মধুপুর, ঘাটাইল, গোপালপুর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, বাসাইল, সখীপুর, ধনবাড়ী ও নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চক্ষু চিকিৎসকের পদ রয়েছে শূন্য। এসব হাসপাতালে কনসালট্যান্ট না থাকায় তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে।

আবার সেখানেও চক্ষু বিশেষজ্ঞের পদশূন্য রয়েছে। মাত্র দুজন প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্য সহকারী প্রতিদিন চোখের চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন। অন্যদিকে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। তবে তাঁরা ক্লাসের অবসরে পর্যায়ক্রমে হাসপাতালে রোগীদের সেবা দেন বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চোখের ছানি পড়া, দৃষ্টিশক্তির দুর্বলতাসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্তরা টাঙ্গাইলের সরকারি কোনো হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না। তাঁদের সম্পূর্ণভাবে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রের ওপর নির্ভর করতে হয়। এতে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। এ ছাড়া বিশেষজ্ঞ কোনো চিকিৎসক ও সার্জন না থাকায় ৪ বছর ধরে চোখের কোনো অপারেশন হয় না টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে।

এদিকে বাড়ছে চোখওঠা রোগের প্রকোপ। এতে দেখা দিয়েছে প্রয়োজনীয় ওষুধের সংকট।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন ৮০-১০০ জন রোগী চোখের চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। বর্তমানে এই সংখ্যা বেড়ে ১৭০ অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশই ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত।

চোখে ভাইরাসজনিত প্রদাহ রোগে আক্রান্ত নরকোনা গ্রামের ইসমাইল হোসেন জানান, তাঁর চোখ লাল হয়ে ফুলে গেছে। চুলকানি ও ব্যথা অনুভব করেন। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে চোখের রোগ নিরাময়ের জন্য ওষুধ খেয়েছেন, ড্রপ দিয়েছেন। কিন্তু ৬ দিনেও কমেনি। তাই হাসপাতালে এসেছেন তিনি।

চিকিৎসা নিতে আসা শিক্ষক মুর্শিদা খাতুন বলেন, চোখের চিকিৎসক যথেষ্ট না থাকায় শরীরের মহামূল্যবান এই অঙ্গটি অজান্তেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী নাজমুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে চোখের রোগীর ভিড় অনেক বেড়েছে। গত সপ্তাহে ১ হাজার ৯৭ জন রোগী চোখের চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৫০২ জনই ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত। এতে বাকিদের চিকিৎসাও সঠিকভাবে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন বলেন, বর্তমান সমস্যা সহজে দূর করা সম্ভব নয়। চোখে ভাইরাস আক্রান্তদের সচেতনতা বাড়াতে হবে। সব সময় হাত পরিষ্কার রাখতে হবে। চোখে বারবার হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত