Ajker Patrika

আজ থেকে মাছ ধরা বন্ধ

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ০১ মার্চ ২০২২, ১০: ৩০
আজ থেকে মাছ ধরা বন্ধ

৫ অভয়াশ্রমে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। জাটকা পূর্ণাঙ্গ ইলিশে পরিণত হওয়া নিরাপদ করতেই অভয়াশ্রমগুলোতে সব ধরনের মাছ ধরায় আজ ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। এদিকে মেঘনাসহ বড় নদ-নদীতে মাছ ধরায় বিধিনিষেধে জেলেরা নতুন করে সংকটে পড়তে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মোট ৬টি অভয়াশ্রমে প্রতিবছর ২ মাস করে মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়। মার্চ ও এপ্রিল মাসে মাছ ধরা বন্ধ থাকে ৫টি অভয়াশ্রমে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ৫টি অভয়াশ্রমের মোট জলসীমা হচ্ছে ৩৯২ কিলোমিটার। এ ৫টি অভয়াশ্রমের সীমানা হচ্ছে, বরিশাল সদর উপজেলার কালাবদর নদীর হবিনগর পয়েন্ট থেকে মেহেন্দিগঞ্জের বামনীরচর, মেহেন্দিগঞ্জের গজারিয়া নদীর হাট পয়েন্ট থেকে হিজলা লঞ্চঘাট, হিজলার মৌলভীরহাট পয়েন্ট থেকে মেহেন্দিগঞ্জসংলগ্ন মেঘনার দক্ষিণ-পশ্চিম জাঙ্গালিয়া পয়েন্ট পর্যন্ত মোট ৮২ কিলোমিটার এলাকা। চর ইলিশার মদনপুর থেকে ভোলা জেলার চরপিয়াল পর্যন্ত মেঘনা নদীর শাহাবাজপুর চ্যানেলের ৯০ কিলোমিটার। ভোলা জেলার ভেদুরিয়া থেকে পটুয়াখালী জেলার চররুস্তুম পর্যন্ত তেঁতুলিয়া নদীর ১০০ কিলোমিটার। চাঁদপুর জেলার ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত মেঘনা নদীর ১০০ কিলোমিটার। এবং শরীয়তপুর জেলার নুরিয়া থেকে ভেদরগঞ্জ পর্যন্ত নিম্ন পদ্মার ২০ কিলোমিটার। এ সীমানার মধ্যে থাকা নদীগুলো হচ্ছে—মেঘনা, কালাবদর, আড়িয়াল খাঁ, নয়ভাঙ্গুলী, গজারিয়া ও কীর্তনখোলার আংশিক।

জানা গেছে, শুধু আন্ধারমানিক নদীর ৪০ কিলোমিটার অভয়াশ্রমে ২ মাসের নিষেধাজ্ঞা পালিত হয় ১ নভেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর। অভয়াশ্রমগুলোতে সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। অভয়াশ্রমে সব ধরনের জেলেনৌকা নামা পুরোপুরি নিষিদ্ধ থাকে এ সময়ে।

আড়িয়াল খা নদে দীর্ঘ বছর ধরে মাছ ধরেন সায়েস্তাবাদের জেলে মনু মিয়া। তিনি বলেন ‘সরকার ইলিশ বড় করতে চায়। এ জন্য মাছ ধরাও বন্ধ। কিন্তু আমাদের বিকল্প কর্মসংস্থান কেন সৃস্টি হচ্ছে না।’

কালাবদর নদীর জেলে আকবর আলী জানান, পেটের ক্ষুধায় তারা নদীতে নামেন। একই কথা জানান, চন্দমোহনের জেলে রহিম উদ্দিন গফুর খাঁ।

জানতে চাইলে বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, অভয়াশ্রমে নিষেধাজ্ঞাকালীন সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধে জেলেদের মধ্যে প্রচার চালানো হয়েছে। নদীতে অভিযানও পরিচালনা করা হবে। নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশের যৌথ দল কাজ করবে বলে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তবে হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ, সদর উপজেলার চন্দ্রমোহনের একাধিক জেলে জানান, বিধিনিষেধ জারি করা হলেও তাঁরা সহায়তা পাননি। আর যে ধরনের সহায়তা তা পর্যাপ্ত নয়। ইলিশ ধরার সঙ্গে সম্পৃক্ত জেলেরা এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার আগে তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপপরিচালক আনিছুর রহমান তালুকদার বলেন, ‘অভয়াশ্রমে নিষেধাজ্ঞার মূল উদ্দেশ্যে হলো জাটকা রক্ষা করে বড় ইলিশে পরিণত হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া।’ এ কর্মকর্তা জানান, নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে জেলেপাড়াগুলোতে ইতিমধ্যে ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হয়েছে। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে প্রণোদনা হিসাবে জেলেরা বিশেষ বরাদ্দের চাল পাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত