Ajker Patrika

সাড়ে চার হাজার টাকায় ৮ জনকে ভাড়া করে হত্যা

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
সাড়ে চার হাজার টাকায়  ৮ জনকে ভাড়া করে হত্যা

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা রাজীবকে সাড়ে চার হাজার টাকার বিনিময়ে আটজন মিলে হত্যা করা হয়। রাজীব ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

ভাড়ায় মোটরসাইকেলচালক রাজীবের মোটরসাইকেলে করে ইয়াবা আনা-নেওয়া করতে চেয়েছিলেন স্থানীয় কয়েকজন মাদক কারবারি। কিন্তু রাজীব তাতে রাজি হননি। এতে তাঁরা রাজীবের প্রতি ক্ষুব্ধ হন। ফলে মাদক কারবারে সহযোগিতা না করার জেরেই ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যা করা হয় তাঁকে। কিলিং মিশনে অংশ নেন আটজন। পিবিআইয়ের নেত্রকোনা কার্যালয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুর কবির গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। এই সময় সংস্থাটির পরিদর্শক অভিরঞ্জন দে ও জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

গত দুই দিনে হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। তাঁরা হলেন উপজেলার হাটনাইয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেন দিলু ও মাহবুব।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, গত বছরের ৭ মে মোহনগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়া গ্রামের একটি পুকুর থেকে রেজাউল করিম রাজীবের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রাজীব ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন। তাঁর বাড়ি মোহনগঞ্জ পৌর শহরের দেওথান গ্রামে।

এই ঘটনার দুই দিন পর রাজীবের বাবা বাচ্চু মিয়া মোহনগঞ্জ থানায় ১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এদের অনেককে গ্রেপ্তার করা হলেও কেউ হত্যার দায় স্বীকার করেননি। পরে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব নেয় পিবিআই। রাজীবের লাশ যে পুকুরে পাওয়া যায় সেই পুকুরের পাহারাদার যতন মিয়াকে এর আগে গ্রেপ্তার হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যে পিবিআই নিশ্চিত হয়—মোহনগঞ্জের হাটনাইয়া গ্রামের ইয়াবা কারবারি মিজানুর রহমান, মাহবুব ও আবুল হোসেন এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী।

তাঁরা রাজীবের মোটরসাইকেলে করে এলাকায় ইয়াবা আনা-নেওয়া করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রাজীব তাতে রাজি হননি। এতে তাঁরা রাজীবের প্রতি ক্ষুব্ধ হন। এই ঘটনার জেরে রাজীবকে মেরে ফেলার জন্য একই গ্রামের দেলোয়ার হোসেন দিলুকে সাড়ে চার হাজার টাকা দেওয়া হয়। ওই টাকার বিনিময়ে দিলুসহ আটজন হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন। বাকি সাতজন হলেন মোহনগঞ্জের হাটনাইয়া গ্রামের মিজানুর রহমান, মাহবুব, আবুল হোসেন, আনোয়ার হোসেন, যতন মিয়া, কলমাকান্দার শুক্কুর ও ময়মনসিংহের তারাকান্দার নলদীঘি গ্রামের সিরাজুল।

তাঁরা রাজীবকে প্রথমে ভাটিয়া গ্রামের শেখ ইসলামের পুকুর পাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে সিমেন্টের জমাটবাঁধা বস্তার সঙ্গে বেঁধে মরদেহটি পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক জাকির হোসেন বলেন, ‘ওই পুকুরের পাহারাদার যতন মিয়াকে গত সপ্তাহে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের নাম বলেন। তাঁর দেওয়া তথ্যে সোমবার রাতে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থেকে দেলোয়ার হোসেন দিলু ও মঙ্গলবার সকালে হাটনাইয়া গ্রাম থেকে মাহবুবকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে দিলুও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত