Ajker Patrika

বিলুপ্তির ঝুঁকিতে বিশ্বের স্বাদু পানির এক-চতুর্থাংশ মাছ 

বিলুপ্তির ঝুঁকিতে বিশ্বের স্বাদু পানির এক-চতুর্থাংশ মাছ 

বিভিন্ন কারণে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বিপুল পরিমাণ স্বাদু পানির মাছ বিলুপ্তির ঝুঁকির তালিকায় উঠে গেছে। অনেকগুলো কারণের মধ্যে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, অতিরিক্ত মাছ শিকার এবং দূষণ এসব মাছের বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়েছে। বিশ্বজুড়ে জীব বৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার বা আইইউসিএন এই তালিকা প্রকাশ করেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

আইইউসিএনের লাল তালিকাভুক্ত প্রজাতির মূল্যায়নে আফ্রিকা থেকে শুরু করে এশিয়া—দুনিয়ার প্রায় সব প্রান্তেই এমন স্বাদু পানির মাছ বিলুপ্তির ঝুঁকিতে চলে গেছে। বিশ্বে যে পরিমাণ স্বাদু পানির মাছের প্রজাতি রয়েছে তার মধ্যে এক-পঞ্চমাংশই মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকির মুখে পড়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি, ঋতু পরিবর্তন, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া, সমুদ্রের পানির নদী হয়ে ভূভাগের আরও গভীরে চলে এর মধ্যে অন্যতম মূল কারণ। আইইউসিএনের মূল্যায়ন অনুসারে বিশ্বের ১৪ হাজার ৮৯৮ প্রজাতির স্বাদু পানির মাছের মধ্যে ৩ হাজার ৮৬টি প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে। 

আটলান্টিক স্যামনকে আগে ন্যূনতম উদ্বেগকর প্রজাতি হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হলেও বিগত কয়েক বছরে এই মাছের পরিমাণ ২৩ শতাংশ কমে যাওয়ার পর একে আইইউসিএন লাল তালিকাভুক্ত করেছে। যুক্তরাজ্যের অনেক নদী থেকেও এই মাছের প্রজাতিটি প্রায় বিলীন হয়ে যাওয়ার পথে। 

এই মাছটি স্বাদু ও লবণাক্ত উভয় পানিতেই বাস করে। কিন্তু বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, নদীতে বাঁধ তৈরি ইত্যাদির কারণে এই প্রজাতির মাছগুলো প্রজননস্থলগুলোতে প্রবেশে বাধা পাওয়ায় এই মাছে সংখ্যা কমে গেছে। এ ছাড়া চাষকৃত স্যামনের সঙ্গে আটলান্টিক স্যামনের প্রজননের ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও দুর্বল হয়ে গেছে। ফলে তাদের জায়গা দখল করেছে আক্রমণাত্মক প্রশান্ত মহাসাগরীয় গোলাপি স্যামন। 

আইইউসিএনের স্পিসিস সারভাইভাল কমিশনের কো-চেয়ার ও স্বাদু পানির মাছ বিশেষজ্ঞ ক্যাথি হিউজ বলেন, ‘মিঠা পানির মাছ বিশ্বের পরিচিত যে পরিমাণ মাছ রয়েছে তার অর্ধেকেরও বেশি। কিন্তু এসব প্রজাতির মাছের বেঁচে থাকার জন্য বিশ্বের মাত্র এক শতাংশ জলভাগ আছে এখন। এই বৈচিত্র্যময় প্রজাতিগুলো বাস্তুতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এগুলো বাস্তুতন্ত্রের স্থিতিস্থাপকতার জন্য অত্যাবশ্যক। মিঠা পানির বাস্তুতন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল কোটি কোটি মানুষ এসব মাছের চাষের ওপর নির্ভরশীল।’ 

ক্যাথি হিউজ আরও বলেন, ‘জলবায়ু সহনশীল বিশ্বে বিভিন্ন প্রজাতির হ্রাস ঠেকানো, খাদ্য নিরাপত্তা, জীবিকা ও অর্থনীতির গতি ঠিক রাখা ও পানির গুণগতমান নিশ্চিত করার জন্য মিঠা পানির বাস্তুসংস্থানের টিকে থাকা সুনিশ্চিত করা, পর্যাপ্ত পানির অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত