Ajker Patrika

গ্যাংস্টারদের জীবনী নিয়ে বলিউডের যত ব্লকবাস্টার সিনেমা

জিন্নাত আরা ঋতু, ঢাকা
গ্যাংস্টারদের জীবনী নিয়ে বলিউডের যত ব্লকবাস্টার সিনেমা

গ্যাংস্টারের জীবন কেমন? তাঁদের অন্দর, উত্থান, পতন নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহের শেষ নেই! বলিউডে সরাসরি আন্ডারওয়ার্ল্ডের প্রভাব থাকলেও এক সময় তাঁদের জীবন নিয়েই নির্মিত হতে থাকে সিনেমা। ২০০০–এর দশকের শুরুর দিক থেকে যখন মুম্বাইয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডের প্রভাব বাড়ছিল, তখন চলচ্চিত্র নির্মাতারা গ্যাংস্টারদের গল্পকেই উপজীব্য করতে থাকেন। এর মধ্যে ভয়ংকর গ্যাংস্টার মুম্বাই মাফিয়া দাউদ ইব্রাহিম, তাঁর দোসর ছোটা রাজনসহ অনেক গ্যাংস্টারের রিয়েল লাইফ উঠে এসেছে রিলে। এমনকি নারী গ্যাংস্টার ফুলন দেবী ও দাউদ ইব্রাহিমের বোন হাসিনা পারকারের জীবন নিয়েও তৈরি হয়েছে সিনেমা। মাফিয়াদের নিয়ে তৈরি কয়েকটি বলিউড সিনেমা নিয়েই এই আয়োজন: 

ছবি: সংগৃহীতডি-ডে
আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিমকে নিয়ে কাল্পনিক গল্পের সিনেমা এটি। নিখিল আদভানি পরিচালিত ডি-ডে অ্যাকশন-থ্রিলার ঘরানার ছবি। এতে ঋষি কাপুর পাকিস্তান–ভিত্তিক গ্যাংস্টার ইকবাল শেঠ ওরফে গোল্ডম্যানের ভূমিকায় অভিনয় করেন। মূলত দাউদ ইব্রাহিমের জীবন থেকে অনুপ্রাণিত এই চরিত্র। এতে দেখানো হয় ভারতীয় এজেন্সিরা তাঁকে ধরার চেষ্টা করে এবং পরিকল্পনায় কিছু ভুলের কারণে মিশনটি ভেস্তে যায়। 

ছবি: সংগৃহীতওয়ান্স আপন অ্যা টাইম ইন মুম্বাই
গ্যাংস্টার হাজি মাস্তানের জীবনের ওপর ভিত্তি করে ২০১০ সালে সিনেমাটি তৈরি। যিনি ৬০ ও ৭০–এর দশকে মুম্বাইয়ের ডন ছিলেন। সিনেমাটিতে হাজি মাস্তান অর্থাৎ সুলতান চরিত্রে অভিনয় করেন অজয় দেবগন। তাঁর শিষ্য দাউদ ইব্রাহিম অর্থাৎ শোয়েব চরিত্রে ছিলেন ইমরান হাশমি। মিলন লুথরিয়ার পরিচালনায় সিনেমায় দাউদের উত্থান, অর্থাৎ তিনি কীভাবে একটি ভয়ংকর গ্যাংস্টারে পরিণত হন সেটি তুলে ধরা হয়েছে। 

ছবি: সংগৃহীতওয়ান্স আপন অ্যা টাইম ইন মুম্বাই দোবারা
আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিম এবং ছোট রাজনের জীবনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এই সিনেমা। ওয়ান্স আপন অ্যা টাইম ইন মুম্বাই সিনেমার সিক্যুয়াল এটি। মিলন লুথরিয়া পরিচালিত এ সিনেমায় দাউদ ইব্রাহিমের চরিত্রে অক্ষয় কুমার এবং আসলামের চরিত্রে ইমরান খান অভিনয় করেছেন। প্রথম অংশে অক্ষয়ের স্থলে ছিলেন ইমরান হাশমি। 

ছবি: সংগৃহীতব্ল্যাক ফ্রাইডে
 ১৯৯৩ সালে মুম্বাই বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে তৈরি ব্ল্যাক ফ্রাইডে। এস হুসেন জাইদির বইয়ের ওপর ভিত্তি করে ২০০২ সালে অনুরাগ কাশ্যপ সিনেমাটি নির্মাণ করেন। সিনেমাটিতে অভিনয় করেছিলেন পবন মালহোত্রা, কে কে মেনন–এর মতো অভিনেতারা। কীভাবে মুম্বাই শহরে মাফিয়ার ছায়া পড়েছিল এবং মুম্বাইয়ের গ্যাংস্টারেরা কীভাবে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিল তা দেখানো হয়েছে। সিনেমায় দাউদ ইব্রাহিমের সংক্ষিপ্ত ভিজ্যুয়াল দেখানো হয়েছে, কারণ এই বিস্ফোরণের পেছনে তাঁকে মাস্টারমাইন্ড হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। 

ছবি: সংগৃহীতশুটআউট অ্যাট লোখান্ডওয়ালা 
সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে মায়া দোলাসের জীবনের ওপর ভিত্তি করে। মায়া এক সময় দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। ২০০৭ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমায় অভিনয় করেন অমিতাভ বচ্চন, সঞ্জয় দত্ত ও বিবেক ওবেরয়। 

ছবি: সংগৃহীতশুট আউট অ্যাট ওয়াদালা
সঞ্জয় গুপ্তা পরিচালিত সিনেমাটি মুম্বাই গ্যাংস্টার মান্য সুরভের জীবনের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত। ২০১৩ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমায় মান্য সুরভের চরিত্রে অভিনয় করেন জন আব্রাহাম। গল্পটি একজন উচ্চ শিক্ষিত অপরাধী, যিনি বিশেষজ্ঞের মতো ডাকাতির পরিকল্পনা করতে জানেন। পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তাঁর মৃত্যু হয়। মুম্বাইয়ের প্রথম ‘এনকাউন্টার’ ছিল এটি। 

ছবি: সংগৃহীতকোম্পানি
 ২০০২ সালে মুক্তি পায় বলিউড সিনেমা কোম্পানি। পরিচালক রাম গোপাল ভার্মা পরিচালিত এ সিনেমাটিতে দাউদ ইব্রাহিম ও ছোটা রাজনের মধ্যকার সম্পর্কের চূড়ান্ত পরিণতি তুলে ধরা হয়। অজয় দেবগন এবং বিবেক ওবেরয় অভিনয় করেছেন এই সিনেমায়। 

ছবি: সংগৃহীতড্যাডি
মুম্বাইয়ের দাগদি চলে (বস্তি) বেড়ে ওঠা একজন ভারতীয় রাজনীতিবিদ, আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন অরুণ গাওলির জীবনের ওপর ভিত্তি করে সিনেমাটি তৈরি। যিনি ১৯৭০ এবং ১৯৮০ দশকের ভারতের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাফিয়া দাউদ ইব্রাহিমের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। অসীম আহলুওয়ালিয়া পরিচালিত এ সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন অর্জুন রামপাল। 

ছবি: সংগৃহীতগ্যাংস অব ওয়াসেপুর
অনুরাগ কাশ্যপ পরিচালিত গ্যাংস অব ওয়াসেপুর সিনেমাটি ২০১২ সালে মুক্তি পায়। সিনেমাটি ধানবাদের কয়লা মাফিয়াকে কেন্দ্র করে নির্মিত। এতে মনোজ বাজপেয়ি, নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকীর মতো অভিনেতা প্রধান প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সুলতান এবং শহিদ খানের মধ্যে দ্বন্দ্বের ফলে খানকে ওয়াসেপুর থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং তিন প্রজন্মের মধ্যে একটি মারাত্মক রক্তপাতের জন্ম দেয়—এ নিয়ে এগিয়ে গেছে সিনেমার গল্প। 

ছবি: সংগৃহীতবাস্তব: দ্য রিয়্যালিটি
দাউদ ইব্রাহিমের দোসর ছোটা রাজনের জীবনের ওপর ভিত্তি করে সিনেমাটি নির্মিত। মহেশ মঞ্জেরকার পরিচালিত সিনেমাটিতে মুম্বাই মাফিয়া ছোটা রাজনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সঞ্জয় দত্ত। ১৯৯৯ সালে সিনেমাটি মুক্তি পায়। এই হার্ড–হিটিং ফিল্মটি আন্ডারওয়ার্ল্ডের বাস্তবতাকে তুলে ধরে। সম্ভবত এই সিনেমাতেই দক্ষতার সঙ্গে দেখানো হয়েছে যে, আন্ডারওয়ার্ল্ড শুধু রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের শীতল গল্প নয়, এখানেও আছে মানুষের গল্প, আছে আবেগ অনুভূতি। 

ছবি: সংগৃহীতরইস
শাহরুখ খান অভিনীত রইস সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০১৭ সালে। যেটি গুজরাটের অপরাধী আবদুল লতিফের জীবনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। তিনি আন্ডারওয়ার্ল্ড গ্যাংস্টার দাউদ ইব্রাহিমের সহযোগীও ছিলেন। গুজরাটের অবৈধ মদের ব্যবসায় একচেটিয়া দখল ছিল তাঁর। লতিফের নামে ১০০ টিরও বেশি মামলা ছিল। এ ছাড়া তিনি ১৯৯৩ সালের মুম্বাই বিস্ফোরণে ব্যবহৃত বিস্ফোরকের মূল সরবরাহকারী ছিলেন। 

ছবি: সংগৃহীতমুম্বাই সাগা 
একজন সবজি বিক্রেতা থেকে অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়া অমর নায়েকের জীবনের ওপর ভিত্তি করে মুম্বাই সাগা নির্মিত। অমর ১৯৯০ সালে মোস্ট ওয়ান্টেড গ্যাংস্টার ছিলেন। দাউদ ইব্রাহিম, ছোটা রাজন, হাজি মাস্তান, অরুণ গাওলির মতো শীর্ষ গ্যাংস্টারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। ২০২১ সালে পরিচালক সঞ্জয় গুপ্তের পরিচালনায় অমর নায়েকের চরিত্রের নাম ছিল অমর্ত্য রাও। নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন জন আব্রাহাম। অমর নায়েক পুনে, দাদার, পারল ইত্যাদির মতো মহারাষ্ট্রের প্রধান অংশ নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন। সিনেমায় অমর নায়েকের উত্থান এবং ১৯৯৬ সালে এনকাউন্টারে মৃত্যু চিত্রিত করা হয়েছে। 

ছবি: সংগৃহীতহাসিনা পারকার
অপূর্ব লাখিয়া পরিচালনায় ২০১৭ সালে মুক্তি পায় সিনেমাটি। ডন দাউদ ইব্রাহিমের বোন হাসিনা পারকারের জীবনের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত এই সিনেমা। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন শ্রদ্ধা কাপুর। ১৯৯৩ সালের মুম্বাই বিস্ফোরণের পর দাউদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর আন্ডারওয়ার্ল্ড পরিচালনা করতে গিয়ে হাসিনা পারকার কত ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হন সেই গল্পই উঠে এসেছে সিনেমায়। 

ছবি: সংগৃহীতব্যান্ডিট কুইন
ব্যান্ডিট কুইন (দস্যু রানি) ফুলন দেবীর জীবনের ওপর ভিত্তি করে নির্মাণ করা হয়েছে সিনেমাটি। মাত্র ১১ বছর বয়সে ফুলন দেবীর বিয়ে হয়। ২০ বছর বয়সী স্বামী পুট্টিলাল মোল্লার কাছে ক্রমাগত যৌন নির্যাতনের শিকার হন। স্বামীর কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং বিক্রম মাল্লার বিখ্যাত ডাকাত দলের সঙ্গে যোগ দেন। এটি বিক্রমের সঙ্গে ফুলনের সম্পর্কের শুরু। দুজনে যৌথভাবে গ্যাং পরিচালনা করেন। দস্যু হিসেবে শুরু হয় ফুলনের জীবন। ১৯৯৪ সালে শেখর কাপুরের পরিচালনায় এই সিনেমায় ফুলন দেবীর চরিত্রে অভিনয় করেন সীমা বিশ্বাস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সারজিসের পোস্টে কমেন্ট করে বরখাস্ত মৎস্য মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী

‘৩ শর্তে’ সশস্ত্র বাহিনীর চাকরিচ্যুতদের বিক্ষোভ স্থগিত

আলটিমেটাম শেষ হওয়ার আগেই আসতে পারে অন্তর্বর্তী প্রশাসনের ঘোষণা

ভারতের সঙ্গে টক্কর দিলে বাঁচতে পারবে না বাংলাদেশ: বিজেপি নেতা

চিরকুটে শিক্ষাব্যবস্থাকে দায়ী করে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীর ‘আত্মহত্যা’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত