Ajker Patrika

শিক্ষার্থীদের জন্য শহীদ রুমী স্মৃতি পাঠাগার

ফারিয়া রহমান খান
শিক্ষার্থীদের জন্য শহীদ রুমী স্মৃতি পাঠাগার

ঢাকার কড়াইল বস্তির নাম নিশ্চয় অনেকে শুনেছেন। এখানে একটি ছোট্ট পাঠাগারও আছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সেখানে বই পড়তে আসে। শুধু বই পড়ে চলে যায়, তা কিন্তু নয়। বছরের বিশেষ দিনগুলোয় নানান ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। 

২০১৪ সালের ১ অক্টোবর এখানে যাত্রা শুরু করে শহীদ রুমী স্মৃতি পাঠাগার। কড়াইলের জামাই বাজার এলাকায় ৫ বাই ৭ ফুট একটা জায়গায় পাঠাগারটি গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রাফসানুল এহসান সাজ্জাদ। তখন পাঠাগারের সদস্যসংখ্যা ছিল কড়াইলের ৭টি শিশু। ২০১৫ সালে এই উদ্য়োগে যুক্ত হন এ পাঠাগারের পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছায়েদুল হক নিশান। রাফসানুল এহসান সাজ্জাদ শুরুতে নিজের কিছু বই দিয়ে এটি শুরু করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে শুরুর দিকের শিক্ষার্থীরাও কিছু বই জোগাড় করেছিল। ৫০-৬০টি বই দিয়ে শুরুতে পাঠাগারটি খোলা হতো। বছরখানেক পর থেকে সদস্যসংখ্যা বাড়তে থাকলে সপ্তাহে ৩ দিন খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেন উদ্যোক্তারা। এখন প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পাঠাগারটি বইপ্রেমীদের জন্য খোলা থাকে।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাঠাগারটির আয়তনও বেড়েছে। বর্তমানে ১২ বাই ২৭ ফুটের একটি ঘরে বইয়ের ৮টি তাকে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি বই রয়েছে। আছে একটি কম্পিউটার। বসে পড়াশোনার জন্য কয়েকটি চেয়ার-টেবিলের ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া বিশেষ দিনগুলোয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য একটি ছোট মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে সেখানে। 

বর্তমানে এই পাঠাগারে সক্রিয় সদস্য রয়েছে প্রায় ৩০ জন। উদ্যোক্তারা চেষ্টা করছেন এখানে পড়তে আসা শিশুদের সামাজিকভাবে সচেতন করে তুলতে। পাশাপাশি শিশুরা যেন নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে, সেদিকেও সচেষ্ট রয়েছেন তাঁরা।
ছায়েদুল হক নিশান জানিয়েছেন, পাঠাগারের সদস্য ছেলে-মেয়েদের নবম, দশম ও এসএসসি পাস করানোর দায়িত্ব নেন তাঁরা।

পড়াশোনার যাবতীয় ব্যয় বহন করে নিজেরা ফ্রি কোচিং করাতেন শিক্ষার্থীদের। সেই উদ্যোগ চলেছিল ২০২০ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত। ২০১৬ সালে করাইল বস্তিতে আগুন লাগলে এ পাঠাগারের উদ্যোগে ১ হাজার ৫০০ জনকে তিন দিন দুই বেলা করে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আর চলতি বছর পরিবেশ দিবসে ফলদ গাছ রোপণের উদ্যোগও নেওয়া হয় পাঠাগার থেকে।

এই পাঠাগারের সদস্য হতে হলে কড়াইলবাসী হতে হবে এমন নয়। যে কেউ সদস্য হতে পারে। এ জন্য ১০ টাকা দিয়ে সদস্য ফরম পূরণ করে জমা দিতে হবে। সঙ্গে এক কপি ছবি এবং স্কুল বা কলেজের আইডি কার্ডের কপি জমা দিতে হবে। আর প্রতি মাসে ২০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত মাসিক চাঁদা জমা দিতে হবে। তবে সদস্য হওয়ার জন্য পাঠাগারে প্রত্যেক নতুন সদস্যকে একটি ফরম জমা দিতে হয়। তা ছাড়া পাঠাগারে নিয়মিত আসতে হয় এবং অন্তত ১৫ মিনিট কোনো বই পড়তে হয়। কেউ চাইলে ৭ থেকে ১৫ দিনের জন্য বই বাসায় নিয়ে যেতে পারে।

সদস্য না হয়েও কেউ চাইলে শহীদ রুমী স্মৃতি পাঠাগারে শিশুতোষ, বিজ্ঞানমনস্ক, জীবনীনির্ভর এবং যুক্তিবাদী চিন্তাধারার বই অনুদান দিতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ.লীগের এমপি শাম্মীর বাসায় ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি ও ভাগ-বাঁটোয়ারার বিবরণ দিলেন রিয়াদ

ইউটিউবে ১০০০ ভিউতে আয় কত

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

আক্কেলপুরে পুলিশের মোটরসাইকেলের ধাক্কায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের স্ত্রী নিহত

আপিল বিভাগে ঝুলে আছে আবেদন, এখনো কনডেম সেলে অনেকে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত