Ajker Patrika

রাজপথে তারুণ্য

মুসাররাত আবির
আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২৪, ০৮: ০৫
রাজপথে তারুণ্য

কয়েক দিন ধরে রাজধানী ঘুরে একটি দৃশ্য প্রায়ই চোখে পড়ছে। একদল শিক্ষার্থী রংতুলি নিয়ে দেয়ালে গ্রাফিতি আঁকছেন। পাশেই আরেক দল শিক্ষার্থী নিয়ম মেনে ট্রাফিক সামলাচ্ছেন। গত মঙ্গলবার থেকে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় শত শত শিক্ষার্থীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করতেও দেখা যাচ্ছে। তাঁরা হাতে গ্লাভস পরে ঝাড়ু দিয়ে সড়ক পরিষ্কার করছেন। আবার অনেকে আবর্জনা কুড়িয়ে বস্তায় ভরছেন। বিষয়টিকে ভীষণ ইতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে পুরো দেশে।

মিরপুর ১২ নম্বরে গ্রাফিতির কাজ করছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাঁদের একজন হলেন সামিহা সাইয়ারা সাবা। তিনি জানালেন, মানুষ যখন এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করবেন, তখন যেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কথা জানতে পারেন, তাঁদের কথা দীর্ঘদিন মনে রাখেন, সে জন্য তাঁরা গ্রাফিতি তৈরি করছেন। মিরপুর ১০ নম্বরে মেট্রোরেলের নিষ্প্রাণ পিলারগুলো রংতুলি দিয়ে রাঙিয়ে তুলেছেন ফয়সাল ও তাঁর বন্ধুরা। ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের শিক্ষার্থী তাঁরা। 

শুধু ছবি এঁকেই নয়, প্রতিবাদী ভাষায় দেয়াল লিখনেও পিছিয়ে ছিলেন না শিক্ষার্থীরা। শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী যারীন তাসনিম বলেন, ‘এবারের আন্দোলন ও এর পরবর্তী পুরোটা সময়জুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গ্রাফিতি করা হয়েছে। এটি সাধারণত করা হয় দেয়াললিখনের মাধ্যমে নিজেদের দাবিদাওয়াগুলো উপস্থাপন করার জন্য। আমরাও মূলত এ কারণেই গ্রাফিতি করেছি। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্কারের পাশাপাশি নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আমাদের কী কী দাবি রয়েছে, সেগুলো প্রশাসনের কাছে তুলে ধরার একটা সহজ ও সুন্দর মাধ্যম এই গ্রাফিতি।’

সেখানকারই আরেকজন শিক্ষার্থী কাজী ওমর যুক্ত ছিলেন রাস্তাঘাট পরিষ্কার করার কার্যক্রমে। তিনি বলেন, ‘দেশটা তো আমাদেরই, তাই এর দেখভাল-রক্ষণাবেক্ষণের দায়ও আমাদের।’ 

ছবি: সামিহা সাইয়ারা সাবাপথে নামলেই এখন ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণরত শিক্ষার্থীদের দেখা যাচ্ছে। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী কাজী সাজিদ জানান, তিনি যেহেতু সশরীরে আন্দোলনে উপস্থিত থাকতে পারেননি, তাই ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজে নেমে পড়েছেন। যাতে একটু হলেও আন্দোলনে অংশ না নেওয়ার দুঃখ লাঘব হয়। 

রাজধানীর মিরপুর এলাকায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আদিবা নওমী। তিনি জানিয়েছেন, সহিংস পরিস্থিতির জেরে পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন দাবি জানিয়ে কর্মবিরতিতে গেছেন। ফলে দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। তাই নিজের এলাকার সড়কের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে পথে নেমেছেন তাঁরা। 

ছবি: গোলাম সোহান মহিউদ্দিনআদিবা নওমী শাড়ি পরে সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে এসেছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন,‘শাড়ি পরে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকে ভিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই। শাড়ি বাঙালি নারীর ভূষণ। একটি মেয়ে যেভাবে সালোয়ার-কামিজ পরে সব কাজ করতে পারেন, একইভাবে একই কাজ শাড়ি পরেও করতে পারেন। আমাদের মায়েরা বেশির ভাগ সময় শাড়ি পরেন।’ 

শুধু ঢাকা শহরেই নয়; চট্টগ্রাম, যশোর, রংপুর, নরসিংদীসহ ঢাকার বাইরের আরও বেশ কিছু জায়গায় শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতি চোখে পড়েছে আন্দোলন-পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য। বোঝা যাচ্ছে, আমাদের ভবিষ্যৎ দেশ গঠনে এই তরুণসমাজ অনেক অবদান রাখবে। তাদের নেতৃত্বেই দেশ এগিয়ে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ.লীগের এমপি শাম্মীর বাসায় ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি ও ভাগ-বাঁটোয়ারার বিবরণ দিলেন রিয়াদ

ইউটিউবে ১০০০ ভিউতে আয় কত

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

আক্কেলপুরে পুলিশের মোটরসাইকেলের ধাক্কায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের স্ত্রী নিহত

আপিল বিভাগে ঝুলে আছে আবেদন, এখনো কনডেম সেলে অনেকে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত