Ajker Patrika

ইংল্যান্ডে দরিদ্র এলাকার শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় ভালো করছে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২৫, ১৮: ৩৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইংল্যান্ডের কিশোর-কিশোরীরা এ মুহূর্তে ভবিষ্যৎ নিয়ে একধরনের অনিশ্চয়তায় ভুগছে। তারা জিসিএসই পরীক্ষা দিয়েছে, যা বেশির ভাগ শিক্ষার্থী ১৬ বছর বয়সে দিয়ে থাকে। আগামী ২১ আগস্ট ফলাফল তাদের হাতে আসবে।

এই পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে তাদের দুশ্চিন্তা স্বাভাবিক। কারণ, ভালো ফলাফল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা খুলে দেয়। খারাপ ফলাফল তা বন্ধ করে দেয়। তবে বড় শহরের শিক্ষার্থীরা কিছুটা নিশ্চিন্তে রয়েছে। তারা দেশের অন্য এলাকার সমবয়সীদের চেয়ে ভালো করছে, এমনকি আগের প্রজন্মের চেয়েও।

ইংল্যান্ডের দরিদ্র এলাকার শিক্ষার্থীদের কী অবস্থা?

২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার শহরের রাষ্ট্রীয় স্কুলগুলোর ২৭ শতাংশ জিসিএসই শিক্ষার্থী ইংরেজি, গণিত ও অন্য তিন বিষয়ে ‘সি’ গ্রেড বা তার বেশি পেয়েছিল। অথচ সে বছর গোটা ইংল্যান্ডে এ হার ছিল ৪৩ শতাংশ। যেসব শিক্ষার্থী দারিদ্র্যের কারণে বিনা মূল্যে খাবার পেত, তাদের অবস্থা ছিল আরও শোচনীয়।

দরিদ্র পরিবার থেকে আসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ম্যানচেস্টারে মাত্র ১৫ শতাংশ ভালো ফল করেছিল, যেখানে সারা দেশে এই হার ছিল ১৮ শতাংশ।

গত দুই দশকে ইংল্যান্ডে পরীক্ষার গ্রেডিং পদ্ধতি বদলেছে। এখন অক্ষরের বদলে সংখ্যা ব্যবহৃত হয় এবং মূল্যায়নের মানদণ্ড শুধু ইংরেজি ও গণিতের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়।

তবুও ম্যানচেস্টারে পরিবর্তনটা স্পষ্ট। সেখানে এখন যারা বিনা মূল্যে খাবার পায়, তারা ইংল্যান্ডের গড় ফলাফলের চেয়েও ভালো করছে। বার্মিংহাম ও লন্ডনের দরিদ্র শিক্ষার্থীরা তো আরও ভালো করছে। লিডসে ফলাফল ‘ভয়াবহ’ থেকে উঠে এখন গড়ের কাতারে।

লন্ডনের দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সাফল্য নতুন কিছু নয়। দুই দশক আগে থেকেই তা নজরে আসতে শুরু করে। শক্তিশালী অর্থনীতি ও শিক্ষা খাতে উন্নয়নের সমন্বয়ে লন্ডন হয়ে ওঠে আত্মবিশ্বাসী ও বৈশ্বিক নগরী। এখন ইংল্যান্ডের অন্যান্য বড় শহরও লন্ডনের মতো সাফল্য পাচ্ছে।

লন্ডন অনেক আগে থেকেই জাতিগতভাবে বৈচিত্র্যময়। সেখানে বিদেশে জন্ম নেওয়া মানুষের সংখ্যা দেশের অন্য যেকোনো জায়গার চেয়ে বেশি।

এই বৈচিত্র্য লন্ডনের শিক্ষা খাতে উন্নতির পেছনে সহায়ক হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, দরিদ্র শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশ শিক্ষার্থীদের চেয়ে অন্য প্রায় সব জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা স্কুলে ভালো করছে।

ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ সাইমন বার্গেস ২০১৪ সালে দেখান, লন্ডনের শিক্ষার্থীদের সফলতার মূল কারণ তাদের বড় অংশই সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর।

বার্গেস মনে করেন, জাতিগত পরিচয় নয়, বরং অভিবাসী পরিবারের সন্তান হওয়াই আসল বিষয়। এই শিক্ষার্থীরা বড় হচ্ছে এমন পরিবারে, যেখানে মা-বাবা নিজের জীবনের উন্নতির জন্য দেশ ছেড়েছেন। তাঁদের এই উচ্চাকাঙ্ক্ষা সন্তানদের পড়াশোনার দিকে ঠেলে দেয়।

এক গবেষণায় বার্গেস দেখিয়েছেন, যেসব শিক্ষার্থীর মাতৃভাষা ইংরেজি, তাদের আর্থিক পুরস্কার দিলে গণিতে ভালো ফল করে। কিন্তু যাদের প্রথম ভাষা ইংরেজি নয়, তারা এমনিতেই পড়াশোনায় বেশি আগ্রহী থাকে।

লন্ডন এখনো ইংল্যান্ডের অন্যতম বৈচিত্র্যপূর্ণ শহর। অবশ্য অন্যান্য শহর ধীরে ধীরে তাদের কাছাকাছি চলে আসছে।

২০১১ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বার্মিংহাম ও ম্যানচেস্টারে বিদেশি বংশোদ্ভূত মানুষের সংখ্যা লন্ডনের চেয়েও দ্রুত হারে বাড়ে। লন্ডনের পাশের স্লাউ শহরে এখন ইংল্যান্ডের যেকোনো শহরের চেয়ে বেশি অভিবাসী বাস করেন।

সম্ভবত এই কারণেই ২০২৩ সালে স্লাউয়ের দরিদ্র শিক্ষার্থীরা জিসিএসইতে লন্ডনের কিছু এলাকা ও ছোট সিলি দ্বীপপুঞ্জ ছাড়া দেশের যেকোনো জায়গার চেয়ে ভালো করে।

তথ্যসূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২১ বছর বয়সেই ব্যবসায় বাজিমাত, দুই বছরে বিক্রি আড়াই কোটির বেশি

ভারী বৃষ্টি কোথায় কত দিন থাকবে, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

এখন ইরানের ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে ঢুকতে পারবে না ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান

ইয়েমেনে ক্লিনিক খুলে ফেঁসে গেছেন ভারতীয় নার্স, এখন ফাঁসির অপেক্ষা

ইরানের শীর্ষ কমান্ডারদের হত্যার আগে যেভাবে খোঁজ পেত মোসাদ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত