Ajker Patrika

প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ৬ আসামির জিজ্ঞাসাবাদের পর রিমান্ডের আবেদন

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ৬ আসামির জিজ্ঞাসাবাদের পর রিমান্ডের আবেদন

গাজীপুরের কালীগঞ্জ জনসেবা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষের অবহেলায় শিরিনা আক্তার (৩০) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত ৬ আসামিকে জেলগেটে দুদিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তদন্তের অগ্রগতির জন্য আদালতে দুই আসামির আরও ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।  

মৃত শিরিনা আক্তার উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চুয়াারিয়াখোলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক মিয়ার স্ত্রী। 

আসামিরা হলেন- টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার থানার আগদেউলি গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে ওটি বয় আশিকুর রহমান আশিক (২৫), কালীগঞ্জের পিপ্রাশৈর গ্রামের অরুন কস্তার মেয়ে সিনিয়র নার্স সংগিতা তেরেজা কস্তা (৩৩), তুমলিয়া গ্রামের ক্লেমেন্ট ক্রুশের স্ত্রী জুনিয়র নার্স মেরী গমেজ (৪০), একই গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে হাসপাতালের অন্যতম অংশীদার ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক বন্যা আক্তার (৩১), ঢাকার লালবাগ এলাকার ধানেছ আলীর মেয়ে রিসেপশনিস্ট শামীমা আক্তার (৩২), বালিগাঁও গ্রামের শরিফ মিয়ার স্ত্রী নার্স সীমা আক্তার (৩৪)। তাঁদের সকলকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। 

এ ছাড়া ৩ আসামি বালিগাঁও গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে জনসেবা হাসপাতালের ব্যবস্থাপক জহিরুল ইসলাম (৩১), টাঙ্গাইল সদরের পাড়াদিঘুলীয়া গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের ছেলে ডা. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাসুদ (৫০) ও মাগুরা জেলার মহাম্মদপুর থানার নজির মিয়ার ছেলে প্যাথলজিস্ট শাওন (২৪) পলাতক রয়েছেন।

আজ সোমবার সকালে মামলার সার্বিক বিষয়ে কথা হয় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মশিউর রহমান খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কালীগঞ্জ জনসেবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় মৃতের স্বামী আবদুর রাজ্জাক মিয়া বাদী হয়ে চিকিৎসক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাসুদসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ ও ৭ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ১৮। পরে ওই মামলায় গ্রেপ্তার ৬ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে গত ২৫ আগস্ট আদালতে আবেদন করা হয়। পরে রিমান্ড শুনানি শেষে গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের ২ দিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদেশ দেন গাজীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ২-এর বিচারক রাগীব নূর।’

উপপরিদর্শক আরও বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের গত দু’দিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদের কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে, যা মামলার তদন্ত অগ্রগতিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। অধিকতর তদন্তের জন্য গ্রেপ্তারকৃত বন্যা আক্তার ও আশিকুর রহমান আশিক নামে দুই আসামিকে আরও ৫ দিনের জন্য গাজীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। মামলা তদন্তের স্বার্থে এর চেয়ে বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।’

উল্লেখ্য, গত ২৪ আগস্ট র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) অভিযুক্ত ৬ আসামিকে গ্রেপ্তার করে কালীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। পরে অন-অনুমতি ব্যক্তির মাধ্যমে রক্ত পরিচালনা করে রক্তগ্রহীতার মারাত্মক ক্ষতি করে এবং অবহেলার কারণে প্রসূতির মৃত্যু হওয়ার অপরাধে ৩০৪ (ক) ও ১০১/৩৪ ধারায় এবং নিরাপদ রক্ত সঞ্চালন আইনের ২৫ ধারায় ওই দিন রাতেই মামলা নথিভুক্ত করা হয়।

এর আগে গত ২১ আগস্ট জনসেবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি শিরিনা আক্তারের মৃত্যু হয়। রক্তশূন্য ওই প্রসূতির এবি পজিটিভ রক্তের প্রয়োজন থাকলেও তাঁকে দেওয়া হয় বি পজিটিভ রক্ত। এ ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মনজুর-ই-এলাহী ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনি ডাক্তার সানজিদা পারভীনকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন- একই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. মুনমুন আক্তার ও মো. এমরান (অ্যানেসথেসিয়া)।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত