Ajker Patrika

বড় ব্যবসায়ী পরিচয়ে প্রতারণা করতেন তাঁরা: পিবিআই 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

তাঁরা নিজেদের পরিচয় দিতেন বড় ব্যবসায়ী। কখনো ফার্নিচারের ব্যবসায়ী, কখনো কেমিক্যালের ব্যবসায়ী। যখন যাকে যেভাবে প্রলুব্ধ করা যায়, সেই ব্যবসার নাম বলতেন। বহুমাত্রিক ব্যবসার লোভ দেখিয়ে প্রতারক চক্রটি এ পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে এক কোটি টাকার বেশি। 

গতকাল শনিবার রাজধানীর উত্তরা থেকে এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। গ্রেপ্তার কৃতরা হলেন আব্দুল বারী ওরফে আফসার উদ্দিন খাঁন ওরফে বজলুর রহমান (৬৬), মো. রাশেদ ওরফে রাসেল (৩৭) ও মো. নাঈম (৪৩)। 

আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম। 

মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সাইফুল ইসলাম (৩২) নামের এক ব্যক্তি জমি বিক্রির জন্য অনলাইনে একটি বিজ্ঞাপন দেন। ওই বিজ্ঞাপনের সূত্র ধরে তাঁর সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ার শরীফের (৫০) সঙ্গে পরিচয় হয়। এই শরীফও প্রতারক চক্রের সদস্য। শরীফ তাঁর মালিক আফসার উদ্দিন খাঁন ওরফে বজলুর রহমান মাসুদ ওরফে বারেক এই জমি কিনবেন বলে সাইফুলকে জানান। জমির কাগজপত্র নিয়ে তিনি সাইফুলকে উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরে তাঁদের অফিসে যেতে বলেন। গত ১৭ জুলাই সাইফুল তাঁর এক পরিচিতজনকে নিয়ে শরীফ ও বজলুর অফিসে যান। সেখানে জমি বিক্রির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। একই সঙ্গে গত ১৯ জুলাই চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে জমি রেজিস্ট্রি করার জন্য যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ওই সময় বজলুরদের অফিসে মোয়াজ্জেম হোসেন (৬৫) নামে চক্রের আরও এক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। জমি বিক্রির আলাপ শেষ হলে মোয়াজ্জেম বজলুরকে বলেন তাঁর এক মালিক ভারতীয় নাগরিক কিছু দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি কিনতে চান। ঘড়ি দিতে পারলে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকার ব্যবসা হবে। বজলুর মোয়াজ্জেমের ভারতীয় নাগরিক মালিককে আসতে বললে আধা ঘণ্টা পর ভারতীয় নাগরিক পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি আসেন। তিনি ঘড়ির ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে অগ্রিম প্রায় ৩৫ লাখ টাকা দেয় এবং পরদিন অবশিষ্ট টাকা পরিশোধ করে  ঘড়ি বুঝে নেবেন বলে চলে যান। 

পিবিআই জানায়, পরে আফসার উদ্দিন খাঁন সাইফুলকে তাঁদের সঙ্গে পার্টনার হিসেবে থেকে ২০ লাখ টাকা দিলে সবাই সমানভাবে ব্যবসার টাকা বণ্টন করে নেবেন বলে জানান। পরদিন সাইফুল নগদ ২০ লাখ টাকা নিয়ে যান। 

জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ‘গতকাল উত্তরা থেকে তিন প্রতারককে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। এদের বিগত দিনেও আপনারা মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করতে দেখেছেন। এ চক্রের মূল হোতা বজলুর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নাম দিয়ে থাকেন তাঁর। আমরা এ পর্যন্ত তাঁর তিনটি আইডি কার্ডের নাম পেয়েছি। একটিতে নাম আফসার উদ্দিন, অন্যটিতে বজলুর রহমান। তাঁর বিরুদ্ধে ২০১১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন থানায় মোট ছয়টি মামলা পাওয়া গেছে।’ 

তিনি আরও বলেন, বজলুর দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলেন। বিদেশ থেকে আসার পর তিনি এ প্রতারণার কাজে জড়িত হয়ে পড়েন। চক্রের সদস্য সংখ্যা নির্দিষ্ট নয়। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষকে সম্পৃক্ত করেন তিনি। এ ছাড়া একেক সময় একেক জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। নিজেদের পরিচয় দেন বড় ব্যবসায়ী তাঁরা। প্রতারণার অভিযোগে এর আগে ৫ থেকে ৬ বার গ্রেপ্তার হয়েছেন বজলুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত