Ajker Patrika

কলাবাগানে চিকিৎসক খুন: এখনো ক্লুলেস পুলিশ, স্বজনরাও সন্দেহের বাইরে নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
কলাবাগানে চিকিৎসক খুন: এখনো ক্লুলেস পুলিশ, স্বজনরাও সন্দেহের বাইরে নয়

ঢাকা: রাজধানীর কলাবাগানে চিকিৎসক কাজী সাবিরা রহমান লিপি (৪৬) খুনের ঘটনায় ১০দিনেও অন্ধকারে পুলিশ। খুনি শনাক্ত হয়নি, খুনের কারণ সম্পর্কেও নিশ্চিত হতে পারেনি তদন্ত কর্মকর্তারা। বাসায় কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় মূল সড়কের কয়েকটি সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

গত ৩১ মে রাজধানীর কলাবাগানের ৫০/১ নম্বর ছয়তলা বাড়ির তৃতীয়তলার ফ্ল্যাটে খুন হন গ্রিন লাইফ হাসপাতালের চিকিৎসক কাজী সাবিরা রহমান।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, কেউ জোর করে বাসার ভেতরে ঢোকেনি। ভেঙেও কেউ বের হয় নাই। বাসার কোনো কিছু খোয়াও যায়নি। হত্যাকাণ্ডে কারও কোনো স্বার্থ জড়িত সেটাও প্রমাণ করা যাচ্ছে না। প্রযুক্তিগত সহায়তা ও সোর্স ভিত্তিক তদন্তে এখন পর্যন্ত বলার মতো কোনো মোটিভ ও ক্লু পাওয়া যায়নি। চাকরি জীবনের এক যুগেও এমন খুনের ঘটনা দেখেননি বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ডিএমপির নিউমার্কেট জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) শাহেনশাহ মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, একটি খুনের ঘটনায় কেউ লাভবান হয়, হিংসা থেকে খুন করে কিংবা তাৎক্ষণিক ঘটনায় খুন হয়। কিন্তু খুনটা পরিকল্পিত নাকি তাৎক্ষণিক খুন করা হয়েছে সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা বাসার সাবলেট, নিহতের স্বজন ও দারোয়ানসহ অনেকেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আত্মীয়-স্বজনদের ওপরও সন্দেহ আছে। তবে খুনের সঙ্গে জড়িত এমন পুরোপুরি প্রমাণ আমাদের হাতে নেই। এখন খুনের মামলায় পুরোপুরি প্রমাণ ছাড়া কাউকে তো গ্রেপ্তারও করতে পারছি না। এই খুনের ঘটনার তদন্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব সংস্থার সঙ্গেই আমাদের তথ্যের আদান প্রদান হচ্ছে। তবে সবাই ধোঁয়াশার মধ্যে আছে।

তিনি বলেন, চারিত্রিক বিষয় নিয়ে যে আমরা তদন্ত করে দেখেছি। কিন্তু নারী চিকিৎসকের যে লাইফস্টাইল, সেখানেও সন্দেহ করার মত তেমন কিছু আমরা পাই নাই।

খুনের ঘটনার আলামত বিশ্লেষণ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, খুনি ঠান্ডা মাথায় খুন করেছে। ধারণা করা হচ্ছে ফজরের নামাজের আগে চিকিৎসক সাবিরাকে খুন করা হয়। তাকে প্রথমে পেছন পিঠে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলা কাটে। খুনের ঘটনা ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে কক্ষে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঘটনার ছায়া তদন্ত করছে। সাবিরার ফ্ল্যাটের সাবলেট নুরজাহানকে অফিসে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তবে বুধবার পর্যন্ত তার কাছ থেকে তদন্তে সহায়ক তেমন কোনো তথ্য পায়নি। গত ঈদের দিন থেকে তিনি গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জে চলে যান। গোপালগঞ্জ থেকেই রোববার পিবিআই তাকে ঢাকায় নিয়ে আসে। খুনের ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না পাওয়া তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পিবিআই এর পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম। ঘটনার পর আরেক সহ ভাড়াটিয়া কানিজ সুবর্ণা, তার এক বন্ধু ও দারোয়ানকে তিন দিন ডিবি জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে তাঁদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত