Ajker Patrika

বাবার ফাঁসি চেয়ে সন্তানদের মানববন্ধন

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
বাবার ফাঁসি চেয়ে সন্তানদের মানববন্ধন

পরকীয়া বাধা দেওয়ায় সেলিনা আক্তারকে (৪২) নির্যাতন করতেন স্বামী। একপর্যায়ে বাড়ি ও জমি লিখে দিতে চাপ দেন। কিন্তু প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সেলিনাকে বিষ খাইয়ে হত্যা করেন। এমন অভিযোগ উঠেছে লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে।

এদিকে মায়ের হত্যার বিচার চেয়ে বাবার ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সন্তান ও এলাকাবাসী। আজ সোমবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার জকসিন বাজারে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নিহত সেলিনার চার সন্তান রোজিনা আক্তার, আসমা আক্তার, লাভলী আক্তার ও আবদুল আজিজ সৌরভ। এ ছাড়াও অংশ দেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ফিরোজ মাহমুদ বাকী, বেলায়েত হোসেন, জকসিন বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুল আজিম শাকিল, নিহত সেলিনার ভাই মুক্তার হোসেন ও নুর হোসেন। তাঁরা হত্যার ঘটনায় জসিমের ফাঁসির দাবি জানান।

নিহতের সন্তান রোজিনা ও আসমা জানান, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড বাঞ্চানগর এলাকায় তাঁদের নিজস্ব বাসভবন রয়েছে। সেখানেই বাবা-মায়ের সঙ্গে তারা বসবাস করতেন। তাঁদের বাবার এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া ছিল। এ নিয়ে বাধা দেওয়ায় তাঁদের মা সেলিনাকে জসিম বিভিন্ন সময়ে নির্যাতন করতেন। প্রায় ৬ মাস আগে শাহীন আক্তার নামে ওই নারীকে বিয়ে করেন। এতে তাঁদের মায়ের সঙ্গে জসিমের দাম্পত্য কলহ বেড়ে যায়। এর মধ্যেই বাঞ্চানগর এলাকার বাসভবন ও জমি জসিমের নামে লিখে দেওয়ার জন্য সেলিনাকে চাপ দিতেন। এতে রাজি না হওয়ায় সেলিনার ওপর নির্যাতন আরও বেড়ে যায়।

বাবার ফাঁসি চেয়ে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার জকসিন বাজারে সন্তানদের মানববন্ধনতাঁরা আরও জানান, ২৭ মে বিকেলে জসিম তার প্রথম স্ত্রী সেলিনাকে বাঞ্চানগর এলাকার বাসা থেকে গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের কাঁচারিবাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে জসিম ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী শাহিন পরিকল্পিতভাবে সেলিনাকে মারধর করেন। একপর্যায়ে জসিম সেলিনার মুখে বিষ ঢেলে দেয়। এতে ওই বাড়ির অন্যান্যরাও সহযোগিতা করেন। পরে সেলিনাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করে। পরে মরদেহ ফেলে রেখে জসিম পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় ৩১ মে নিহত সেলিনার ভাই মুক্তার হোসেন বাদী হয়ে জসিম ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী শাহিনসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ দেন। কিন্তু থানা-পুলিশ অভিযোগটি নথিভুক্ত করেননি। পরে ৪ জুন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী অঞ্চল (সদর) আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘ঘটনাটি নিয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা রয়েছে। এ জন্য পরবর্তী মামলাটি গ্রহণ করা হয়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তখন পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত