Ajker Patrika

অনলাইনে প্রতারণা: ১২০০ চীনাকে ধরে দেশে পাঠাল মিয়ানমারের মিলিশিয়া গ্রুপ

আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১: ০৩
অনলাইনে প্রতারণা: ১২০০ চীনাকে ধরে দেশে পাঠাল মিয়ানমারের মিলিশিয়া গ্রুপ

অনলাইনে প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রায় ১ হাজার ২০০ চীনা নাগরিককে আটক পর নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে মিয়ানমারের অন্যতম বৃহৎ ও শক্তিশালী একটি মিলিশিয়া গ্রুপ। 

গত শনিবার মিলিশিয়া গ্রুপটির একজন লিয়াজোঁ কর্মকর্তা নি র‍্যাং বলেন, গত ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের ইউনাইটেড ওয়া স্টেট আর্মি নিয়ন্ত্রিত শান রাজ্যের পূর্বাঞ্চলে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়। 

তিনি সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে মোবাইল এসএমএসে বলেন, আটককৃতদের পাংসাংয়ের সীমান্ত দিয়ে চীনা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। মিলিশিয়া গ্রুপটির নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার রাজধানী পাংসাং। গ্রুপটি এর নাম রেখেছে পাংখাম সিটি। এটি চীনের ইউনান প্রদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা। 

এশিয়াতে সাইবার ক্রাইম একটি প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনলাইন প্রতারণাগুলো পরিচালনায় নিযুক্ত স্থানীয় এজেন্টরাও এ অপরাধী চক্রের শিকার হচ্ছেন। ভুয়া কাজের প্রস্তাব দিয়ে তারা শিকারকে প্রলুব্ধ করে। এরপর তাদের অনলাইনে প্রতারণার কাজে সহযোগী হতে বাধ্য করা হয়। 

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে গত মাসে এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ চক্রটি দক্ষিণ এশিয়ার হাজার হাজার মানুষকে এই স্ক্যাম পরিচালনায় অংশ নিতে বাধ্য করেছে। এই অনলাইন প্রতারণার মধ্যে রয়েছে—প্রেমের অভিনয়, ভুয়া বিনিয়োগ এবং জুয়া। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, গৃহযুদ্ধে জর্জরিত মিয়ানমারের অন্তত ১ লাখ ২০ হাজার ও কম্বোডিয়ার ১ লাখ মানুষকে অনলাইন প্রতারণায় যুক্ত হতে বাধ্য করা হচ্ছে। 

বলা হয়, মিয়ানমারের অনলাইন প্রতারণা কেন্দ্রগুলো কায়িন রাজ্যের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলের শহরগুলোতে অবস্থিত। শহরগুলো থাইল্যান্ডের সীমান্ত এবং স্বশাসিত কোকাং ও চীনা সীমান্তের ওয়া মিলিশিয়া গ্রুপ নিয়ন্ত্রিত শান রাজ্যের শহর মং লা ঘেঁষে অবস্থিত। 

মিলিশিয়া গ্রুপটির লিয়াজোঁ কর্মকর্তা নি র‍্যাং বলেন, ইউনিয়ন ওয়া স্টেট আর্মি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় এর আগেও এমন বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। 

গত শুক্রবার ইউনিয়ন ওয়া স্টেট আর্মির অনলাইন সংবাদমাধ্যম ডব্লিউএসটিভির ফেসবুক পেজে বলা হয়, অনলাইন প্রতারণার দায়ে আটক মোট ১ হাজার ২০৭ চীনা নাগরিককে সে দেশের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া চীনের জন নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে বলেছে, গত শুক্রবার একই সংখ্যক নাগরিক তাঁদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্যে ৪১ জন পলাতক আসামি। 

মিয়ানমারের প্রধান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ইউনিয়ন ওয়া স্টেট আর্মি সবচেয়ে শক্তিশালী জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন। প্রায় ৩০ হাজার সুসজ্জিত সৈন্য এবং চীন থেকে আনা ভারী অস্ত্র ও হেলিকপ্টারসহ অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংগঠনটি গঠিত। চীনের সঙ্গে এ সংগঠনটি বেশ সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলে। 

ওয়া সংগঠনটি মিয়ানমারের শান রাজ্যের উত্তর–পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের দুটি ছিটমহল নিয়ন্ত্রণ করে। এর মধ্যে উত্তর–পূর্বাঞ্চলের এলাকাটি চীনের সীমান্তে ও দক্ষিণের এলাকাটি থাইল্যান্ডের সীমান্ত ঘেঁষা। 

গত জুলাইয়ে মিয়ানমারে চীনা রাষ্ট্রদূত চেন হাই দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান শোয়েকে মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অনলাইন জুয়া ও প্রতারণা কেন্দ্রগুলো নির্মূল করে আটকে থাকা চীনা নাগরিকদের উদ্ধার করার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশেও সম্প্রতি অনলাইন প্রতারণার কয়েকটি গ্রুপ ধরা পড়েছে। প্রায় সবকটি গ্রুপের পেছনেই রয়েছে চীনা চক্র।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত