Ajker Patrika

খননে ধীরগতির সুযোগে অবাধে নদের বালু লুট

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
খননে ধীরগতির সুযোগে অবাধে নদের বালু লুট

ময়মনসিংহে পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদ খননে ধীরগতির সুযোগে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অবৈধ বালু ব্যবসায়ী চক্র। নগরীর কাঠগোলা জেলখানা গুদারাঘাট থেকে বেগুনবাড়ি পর্যন্ত শতাধিক স্থানে খননযন্ত্র দিয়ে তোলা হচ্ছে বালু। এতে জলবায়ুর ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ার পাশাপাশি রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

ব্রহ্মপুত্রের নাব্য ফিরিয়ে আনতে ২০১৯ সালের শেষ দিকে ২ হাজার ৭৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২২৭ কিলোমিটার নদ খননের কাজ শুরু করে বিআইডব্লিউটিএ। জামালপুর জেলার কুলকান্দি থেকে কিশোরগঞ্জ জেলার টোক পর্যন্ত নদটি ৩০০ ফুট প্রশস্ত ও শুষ্ক মৌসুমে ১০ ফুট গভীর করে খনন করার কথা। ২০২৪ সালের জুন মাসে খননকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত ৪০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। করোনাসহ নানা কারণে ময়মনসিংহের অংশে কাজের ধীরগতির সুযোগে খননযন্ত্র বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালীরা।পুলিশ লাইনস এলাকার বাসিন্দা মোশারফ হোসেন খোকন বলেন, ‘এদিকে এখনো নদ খনন শুরু হয়নি। কিন্তু আমরা কয়েক বছর ধরে দেখছি সারা বছরই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

অভিযুক্ত বালু ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কয়েকজন মিলে কয়েক লাখ বালু সরকারের কাছ থেকে কিনেছি। আমরা কোনো অবৈধ বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নই।

আগে টুকটাক বালু তুললেও এখন তা করা হচ্ছে না।’ আরেক অভিযুক্ত রফিকুজ্জামান তপন বলেন, ‘কাঠগোলা ঘাটে আমরা ৬৫ লাখ বালু কিনেছি। আশপাশে তা রাখার জায়গা নেই। ব্রহ্মপুত্র নদের সীমানা ঘেঁষে আমাদের জায়গা রয়েছে। তাই সেখানে উত্তোলিত বালু রাখার জন্য ভেকু দিয়ে বাঁধ দিচ্ছি। এতে একটি পক্ষ আমাদের নামে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।’

ময়মনসিংহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে আমরা অবগত রয়েছি। মাঝেমধ্যেই অভিযান পরিচালনা করা হয়। আসলে একটি মোবাইল টিম দিয়ে কিছুই হচ্ছে না। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বসেছিলাম। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধসহ নানা অব্যবস্থাপনা কঠোর হস্তে দমন করা হবে।’

জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাফিজার রহমান বলেন, বালু ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তাদের ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪টি স্থানে বালু উত্তোলন করা হবে। এ নিয়ে কোনো অজুহাত প্রশাসন মানবে না।

বিআইডব্লিউটিএর প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) রকিবুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘২২৭ কিলোমিটারের মধ্যে আমরা ১৬০ কিলোমিটারে কাজ ধরতে পেরেছি। বরাদ্দসহ নানা কারণে সম্পূর্ণ নদে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। ইতিমধ্যে ৪০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের ময়মনসিংহ অংশের খননকাজ সম্পন্ন করা হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত