Ajker Patrika

পুলিশের গুলিতে পুলিশ নিহত

সম্পাদকীয়
পুলিশের গুলিতে পুলিশ নিহত

ঘটনাটি দুঃখজনক এবং অপ্রত্যাশিত। পুলিশের হাতে অস্ত্র থাকে মূলত দুর্বৃত্ত বা অপরাধীকে ভয় দেখানোর জন্য অথবা আত্মরক্ষার জন্য। গুলিভর্তি আগ্নেয়াস্ত্র হাতে থাকে বলেই তা দিয়ে যখন-তখন যাকে-তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া যায় না। কোনো অস্ত্রেরই যথেচ্ছ ব্যবহার করা যায় না। সে রকম হলে আইনের শাসন নয়, স্বেচ্ছাচারী ব্যবস্থা কায়েম হয়ে যায়! মানুষের নিরাপত্তা বিধান করা সশস্ত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব। কারও জীবনই অনিরাপদ করে তোলা পুলিশের কাজ হতে পারে না। অথচ শনিবার রাতে সে ঘটনাই ঘটেছে।

রাজধানীর বারিধারা ডিপ্লোমেটিক জোনে অবস্থিত ফিলিস্তিন দূতাবাসের গার্ডরুমের সামনে মনিরুল ইসলাম নামে এক পুলিশ সদস্যকে গুলি করে হত্যা করেছেন কাওছার আলী নামের অপর এক পুলিশ সদস্য। কী কারণে এবং কোন পরিস্থিতিতে মনিরুল হককে গুলি করে হত্যা করেছেন কাওছার আলী, তা এখনো স্পষ্ট নয়। 

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন শনিবার দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিটে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বলেছেন, রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে দুজন কনস্টেবল ডিউটিরত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে কনস্টেবল কাওছার আলীর গুলিতে কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ ঘটনায় জাপান দূতাবাসের গাড়িচালক সাজ্জাদ হোসেন গুলিবিদ্ধ হন এবং তিনি এখন ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সাজ্জাদ হোসেনের শরীরে ৩টি গুলি লাগে। আক্রমণকারী কনস্টেবলকে নিরস্ত্র করে থানায় নেওয়া হয়েছে এবং তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। 

সুরক্ষিত দূতাবাস এলাকায় পুলিশের গুলিতে পুলিশ নিহত হওয়ার ঘটনাটি কূটনীতিকদের মধ্যে ভীতির কারণ হয়তো হবে না, তবে এটা আইনশৃঙ্খলার দুর্বলতা হিসেবে কেউ দেখলেও দেখতে পারেন। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উচিত হবে বিষয়টিকে হালকাভাবে না দেখা। 

আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ডিউটিরত মনিরুল ও কাওছারের মধ্যে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে কাওছার মনিরুলকে লক্ষ্য করে কয়েকটি গুলি করেন। এতে ঘটনাস্থলেই মনিরুল নিহত হন এবং একজন পথচারী আহত হন। এই পুলিশ সদস্য উন্মাদের মতো আচরণ করছিলেন বলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। 

পুলিশের চাকরি সব সময় শান্তি রক্ষায় যুক্ত। কিন্তু কখনো কখনো অশান্তি সৃষ্টি করা হয়, এটি তার একটি উদাহরণ। 

আবার ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফুল ইসলাম সরকার বলেছেন, প্রাথমিকভাবে আক্রমণকারী পুলিশ সদস্যের ব্যাপারে জানা গেছে, তিনি পাঁচ-ছয় দিন ধরে খুব চুপচাপ ছিলেন। অন্য সহকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলছিলেন না। আবার এটাও জানা গেছে, ডিপ্লোমেটিক এলাকায় একজন কনস্টেবলকে এক দিনে ১৬ ঘণ্টা ডিউটি করতে হয়। এই ডিউটি করার কারণে কেউ মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হচ্ছেন কি না, সেটাও দেখা দরকার। আক্রমণকারী পুলিশ সদস্যদের ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজ-খবর নেওয়া দরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাবির সিন্ডিকেটে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের চূড়ান্ত অনুমোদন

শ্বশুরকে জামাতার ফোন: ‘আপনার মেয়েকে মাইরা ফেলছি, লাশ নিয়ে যান’

স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে গেলেন ইমামতি করতে

ঐতিহাসিক শিমলা চুক্তি বাতিল করল পাকিস্তান, এর প্রভাব কী

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের জামাতাকে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত