Ajker Patrika

চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নিয়ে লাপাত্তা

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নিয়ে লাপাত্তা

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় বিভিন্ন সেবা ও চাকরি দেওয়ার কথা বলে কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) এনভায়রনমেন্ট অ্যাওয়ারনেস অ্যান্ড হিউম্যানিটি সোসাইটি (ইয়াস)। এনজিওটির বাউরা ইউনিয়ন ও পাটগ্রাম পৌর শহরের বাইপাস মোড়ের কার্যালয়ে তালা ঝুলছে।

জানা গেছে, জানুয়ারিতে ইয়াস পাটগ্রামের বাউরা ইউনিয়নে শাখা ও কয়েক মাস পর পাটগ্রাম পৌরসভায় আইন সহায়তা সংস্থা কার্যালয় খোলে। শুরু থেকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করার বিষয়ে প্রচারণা চালাতে থাকে এনজিওটি। একপর্যায়ে ১২৪টি বিদ্যালয়ে ১২৪ জন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষকদেরই বাড়িতে বিদ্যালয় চালু করা হয়। শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের সময় প্রত্যেকের কাছ ২৫ থেকে ৩০ হাজার করে টাকা নেওয়া হয় এবং মাসে ৫ হাজার টাকা করে বেতন দেওয়ার কথা বলা হয়।

পাশাপাশি হতদরিদ্র পরিবারকে পাকা বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়ার কথা বলে ৫০টি পরিবারের কাছ থেকে ১০ হাজার করে টাকা নেওয়া হয়। অপর দিকে পৌর শহরের বাইপাস মহাসড়কের পাশে খোলা হয় আইন সহায়তা সংস্থা কার্যালয়। এই কার্যালয়ে ২৫ জনকে ১ থেকে দেড় লক্ষাধিক করে টাকা নিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়।

নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের অভিযোগ, ইয়াস এনজিওটি পাটগ্রাম উপজেলায় আনেন উপজেলার সরকারেরহাট এলাকার ফরিদুল ইসলাম। তাঁর মাধ্যমে বিদ্যালয় চালু, শিক্ষক ও কর্মচারী-কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়টি জানতে পেরে টাকা দিয়ে চাকরি নেন স্থানীয়রা। একই এলাকার মাঠকর্মী মিনহাজুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘ইয়াস অনেক লোভ দেখিয়ে টাকা নিয়ে আমাদের নিয়োগ দেয়। বেকার ছেলে হিসেবে আমি নিজেও ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। এখন ইয়াসের কোনো খোঁজ নেই। যোগাযোগ করে টাকা চাইলে ভয়, হুমকি দেখায় তারা।’

বাউরা ইউনিয়নের নবীনগর গ্রামের শিক্ষক সম্পা বেগম বলেন, নিজ বাড়িতে প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করে দুই মাস পরিচালনা করা হলেও ইয়াস সংস্থা কোনো বই-খাতা দেয়নি। উপরন্তু প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ভর্তির জন্য ১০০ টাকা ও উপবৃত্তির কথা বলে ৫০ টাকা করে তুলে ইয়াস কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়। শিক্ষক হিসেবে চাকরি নেওয়ার সময় ২৫ হাজার টাকা দিই।

জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২১ এপ্রিল সরকারের জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ইয়াস পরিবেশ সচেতনতা ও মানবাধিকার সম্পর্কিত সামাজিক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধন নেয়। কার্যালয়ের ঠিকানা দেখানো হয় ঢাকার মতিঝিলের ৯ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ।

ইয়াসের পাটগ্রাম উপজেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা পরিদর্শক আরিফুজ্জামান চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়েছেন। প্রধান কার্যালয়ে জানিয়েছি। তাঁরা আরিফুজ্জামানকে বেঁধে রেখে টাকা আদায় করতে বলেছেন। এরপর আরিফুজ্জামান আমাদের ২১ লাখ টাকার চেক দিয়েছেন।’

ইয়াসের লালমনিরহাট জেলা পরিচালক দুর্নীতি হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘সরঞ্জাম বাবদ কিছু টাকা নেওয়া হয়েছে; কিন্তু মাঠকর্মী ও পরিদর্শকেরা অনেক বেশি টাকা নিয়েছেন। জামানত বা চাকরি বাবদ টাকা নেওয়া হয়নি। ফরিদুল ইসলাম ও অন্য মাঠকর্মী এবং পরিদর্শকেরা নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি যে টাকা পেয়েছি সেগুলো সংস্থার কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছি। মূলত ইয়াসের কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।’

ইয়াসের মহাসচিব জাহেদ হাসান বলেন, ‘আমরা লালমনিরহাটে একটা শাখা খোলার অনুমতি দিয়েছিলাম। কিন্তু আরিফুজ্জামান পুরো জেলায় অফিস খুলে অনেক লোকের কাছে নাকি টাকা নিয়েছেন। আমরা লিখিতভাবে বিভিন্ন দপ্তরে জানিয়েছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত