Ajker Patrika

প্রধান শিক্ষকের হাতে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ‘লাঞ্ছিত’

পাবনা প্রতিনিধি
প্রধান শিক্ষকের হাতে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ‘লাঞ্ছিত’

স্কুলের সংগৃহীত অর্থ অন্য শিক্ষকদের মধ্যে প্রাপ্যতা অনুযায়ী বণ্টন করায় পাবনা সদরের দুবলিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আব্দুল হককে (৫৩) লাঞ্ছিত ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষক প্রতিকার চেয়ে গত ২৭ অক্টোবর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও আতাইকুলা থানা-পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনাটি কয়েক দিন আগের হলেও গতকাল বুধবার তা জানাজানি হয়।

অভিযোগে ভুক্তভোগী শিক্ষকের পক্ষে সই দিয়েছেন একই বিদ্যালয়ের ১২ শিক্ষক। লিখিত অভিযোগে আব্দুল হক বলেছেন, গত ২০ অক্টোবর বিকেলে স্কুল প্রাঙ্গণে প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে তাঁর শার্টের কলার ধরে ধাক্কা মেরে অফিস কক্ষের মেঝেতে ফেলে দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেন আনোয়ার হোসেন। স্কুলে আসার পথে বড় ধরনের ক্ষতি করার হুমকিও দেন তিনি। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেন, শিক্ষার্থীদের বেতন ও ফিসহ বিভিন্নভাবে সংগৃহীত টাকা শিক্ষকদের মধ্যে বিতরণের জন্য ‘অর্থ কমিটি’ করা হয় জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আব্দুল হকের নেতৃত্বে।

সেই কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, স্কুলের সংগৃহীত টাকা আব্দুল হক অন্য শিক্ষকদের দেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের বিরোধিতা করেন। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আব্দুল হককে তাঁর কক্ষে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একপর্যায়ে তাঁর কাছে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেন এবং লাঞ্ছিত করেন। পরে অন্য শিক্ষকেরা এগিয়ে এলে তাঁদের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। শিক্ষকেরা আরও বলেন, ওই ঘটনার দুদিন পর সব শিক্ষককে ডেকে নিয়ে স্কুলের কক্ষে আটকে রাখার হুমকি দেওয়া হয়। বিষয়টি যাতে প্রশাসন ও গণমাধ্যমের কেউ না জানে এ মর্মে মুচলেকা নেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতির দ্বারস্থ হন শিক্ষকেরা। তাঁর সঙ্গে দেখা করে ফেরার পর আরেক শিক্ষক রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন প্রধান শিক্ষক।

পাবনা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতি-লাঞ্ছিত করার কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে কয়েক দিন আগে প্রধান শিক্ষক আমাকে জানিয়েছিলেন যে ওই স্কুলের শিক্ষকেরা স্কুলের সংগৃহীত টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজেরা ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন।’ 
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে ডিসি স্যার, জেলা শিক্ষা অফিস, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ সবাই জানে। আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না। ওরা যা ইচ্ছা করুক। আমি কিছু বলব না।’

বিষয়টি তদন্তের দায়িত্বে থাকা দুবলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি সরেজমিনে তদন্ত করেছি। ঘটনাটা পুরোপুরি সত্য নয়। তাঁদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়েছে। কিন্তু মারধর বা টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি।’

এ বিষয়ে স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও পাবনা সদর উপজেলার চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে অন্য শিক্ষকদের একটা ঝামেলা হয়েছিল, এটা সত্য। এ বিষয়ে কিছু শিক্ষক আমার কাছে এসেছিলেন। আমি প্রতিষ্ঠানটি রক্ষার স্বার্থে ঝামেলাটি সমাধান করারও আশ্বাস দিয়েছিলাম তাঁদের। কিন্তু আমার কাছ আসার পরও বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়েছেন তাঁরা। তারপরও আমি উভয় পক্ষকে নিয়ে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করব।’

পাবনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুস্তম আলী হেলালী বলেন, অভিযোগ পেলে অভিযোগ তদন্ত করে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত