Ajker Patrika

ভুল গ্রুপের রক্ত প্রয়োগে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
ভুল গ্রুপের রক্ত প্রয়োগে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ভুল গ্রুপের রক্ত প্রয়োগে কুলসুম বেগম নামের এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। লক্ষ্মীপুরের মডেল হাসপাতাল প্রাইভেটে রোগীর রক্তের গ্রুপ ভুল নির্ণয় করে ভুল গ্রুপের এক ব্যাগ রক্ত প্রয়োগ করে। ঘটনার তিন দিন পর রোগীকে কোনো কারণ ছাড়া ছাড়পত্র দেওয়া হয়। ঘটনার এক সপ্তাহ পর ঢাকার একটি হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় রোগীর আত্মীয় মো. আলাউদ্দিন লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।জানা গেছে, ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে কুলসুম বেগম একটি পুত্রসন্তান প্রসব করেন। প্রসবের সময় তাঁর রক্তক্ষরণ শুরু হলে লক্ষ্মীপুরের মডেল হাসপাতাল প্রাইভেটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রসূতিরোগ বিশেষজ্ঞ মুমতাহিনা ও চিকিৎসক মো. ইকবাল হোসেনের তত্ত্বাবধানে রোগীকে ভর্তি করা হয়।

ওই দিনই চিকিৎসকের উপদেশে কিছু পরীক্ষা করানো হয়। চিকিৎসক রোগীর হিমোগ্লোবিন টেস্ট না করে জরুরি ভিত্তিতে রক্ত দেওয়ার পরামর্শ দেন। হাসপাতালে পরীক্ষায় রোগীর রক্তের গ্রুপ ‘এ’ পজিটিভ নির্ণয় করা হয়। স্বজনদের রক্ত সংগ্রহ করার জন্য বললে তাঁরা এক ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করেন, যা রোগীর শরীরের দেওয়া হয়।

১৮ সেপ্টেম্বর রোগীকে ওই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু ডিসচার্জ সামারি ছাড়াই রোগীকে রিলিজ দেওয়া হয়।
পরে রোগীর লিভারে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ শারীরিক অবস্থার ব্যাপক অবনতি ঘটে। তাঁকে আবার চিকিৎসক মো. ইকবাল হোসেনের কাছে নেওয়া হয়। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রোগীর কিডনিতে সমস্যা পাওয়ায় সরাসরি জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটে নেওয়ার পরামর্শ দেন। কিডনি হাসপাতালে স্থান না পাওয়ায় ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ভর্তির পর রোগীর রক্তস্বল্পতার কারণে চিকিৎসক মডেল হাসপাতালের নির্ণয় করা রক্তের গ্রুপ অনুযায়ী ‘এ’ পজিটিভ রক্ত সংগ্রহ করার পরামর্শ দেন। কিন্তু ঢামেকের পরীক্ষায় রোগীর রক্তের গ্রুপ ‘ও’ পজিটিভ আসে। পরে চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন, মডেল হাসপাতাল প্রাইভেটে রোগীর রক্তের গ্রুপ ভুল নির্ণয় করে ভুল গ্রুপের রক্ত প্রয়োগ করা হয়েছে। ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ সেপ্টেম্বর বেলা পৌনে ৩টার দিকে কুলসুম বেগম মারা যান।

কুলসুম বেগমের স্বামী প্রবাসী হাফিজ উল্যা বলেন, মডেল হাসপাতাল প্রাইভেটের ভুল চিকিৎসা ও অবহেলার কারণে তাঁর স্ত্রী মারা গেছেন, তিনি এর বিচার চান।

কুলসুম বেগমের আত্মীয় আলাউদ্দিন বলেন, ভুল চিকিৎসায় জড়িত সব ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে তিনি আবেদন করেছেন।

মডেল হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘কেউ ইচ্ছা করে ভুল করে না, হাসপাতালের চেয়ারম্যান হিসেবে আমি এই দায় এড়াতে পারি না। আমি আমার হাসপাতালের লোকদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিব’ সিভিল সার্জন মো. আহমেদ কবির বলেন, অভিযোগের কপি তিনি হাতে পেয়েছেন। তিনি লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট সালাউদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে দেবেন। কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দিলে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: তিন দফা দাবিতে সোমবার মাঠে নামছেন শিক্ষার্থীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত