Ajker Patrika

ট্রাম্পের শুল্কে অস্তিত্ব সংকটে পশ্চিমবঙ্গের ১৫ হাজার গার্মেন্টস, আছে বাংলাদেশ ফ্যাক্টরও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পশ্চিমবঙ্গের মেটিয়াবুরুজের একটি গার্মেন্ট কারখানার ভেতরের পরিবেশ। ছবি: ফেসবুক
পশ্চিমবঙ্গের মেটিয়াবুরুজের একটি গার্মেন্ট কারখানার ভেতরের পরিবেশ। ছবি: ফেসবুক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত থেকে পোশাক আমদানিতে ৫০ শতাংশ শুল্ক বসানোর ঘোষণা দেওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের মেটিয়াবুরুজ ও বারাসতের পোশাক উৎপাদন হাবে শঙ্কার ছায়া নেমে এসেছে। এর বাইরে, ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্যিক সম্পর্কও এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়ায় ভারতীয় অর্থনীতিতে যেন ‘দুই আঘাত’ একসঙ্গে হেনেছে।

উৎপাদকেরা জানাচ্ছেন, যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর জন্য কলকাতা ও মুম্বাইয়ের এজেন্টরা এই কেন্দ্রগুলো থেকে পোশাক কেনেন। এখন তারা অর্ডার দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। মেটিয়াবুরুজের পোশাক ব্যবসায়ী সরফরাজ হোসেন বলেন, ‘আমরা সরাসরি রপ্তানি করি না। কলকাতা ও মুম্বাইয়ের এজেন্টরা আমাদের কাছ থেকে কিনে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠান। কিন্তু শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর থেকে তারা আর মার্কিন বাজারে কনসাইনমেন্ট পাঠাচ্ছেন না। এতে আমাদের পোশাক উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

ভারতের অন্যতম বৃহৎ পোশাক উৎপাদনকেন্দ্র মেটিয়াবুরুজে ১৫ হাজারেরও বেশি কারখানা রয়েছে। সেখানে পাঁচ লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করেন। অন্যদিকে বারাসতের রিজেন্ট গার্মেন্ট অ্যান্ড অ্যাপারেল পার্কে প্রায় ২৫০টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান মেটিয়াবুরুজভিত্তিক, যারা রপ্তানির সুবিধার জন্য বারাসতে শাখা খোলেন। কলকাতা থেকে যে পোশাক রপ্তানি হয়, তার প্রায় ২০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে যায়।

পোশাক ব্যবসায়ী দাইয়ান হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে অস্থিরতার কারণে গত বছর আমাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এখন ঢাকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হলেও অর্ডারের পরিমাণ আগের অবস্থায় ফেরেনি। তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আমাদের সমস্যাকে আরও বাড়াবে। এখন আমাদের দেশীয় বাজারের ওপর নির্ভর করতে হবে।’

মেটিয়াবুরুজ ও বারাসতের পোশাক উৎপাদকেরা সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজারে পোশাকের বড় অর্ডার পান। এর মধ্যে রয়েছে সাধারণ পোশাক, শার্ট, ফ্রক ও দেশি পোশাক অন্যতম। আরিফ মণ্ডল নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘রপ্তানি অর্ডার অন্তত ৫ শতাংশ কমে গেছে।’

কলকাতার রপ্তানিকারক প্রভাস আগরওয়াল জানান, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত কনসাইনমেন্ট আমরা আটকে রেখেছি। যদি তারা অর্ডার বাতিল করত, তবে আমরা সেই পোশাক দেশীয় বাজারে ছেড়ে দিতে পারতাম।’

পশ্চিমবঙ্গ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দেবেন্দ্র বৈদ্য বলেন, ‘শুল্ক সমস্যার তাৎক্ষণিক কোনো সমাধান আছে বলে মনে হয় না। আমাদের দেশীয় বাজারের ওপর আরও বেশি নির্ভর করতে হবে এবং বিকল্প বিদেশি বাজার খুঁজতে হবে। অর্ডার আটকে থাকায় এজেন্টদের পাওনাও আটকে গেছে।’

অ্যামরিট এক্সপোর্টসের এমডি ও অ্যাপারেল এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অনিল বুচাসিয়া বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা বাড়ানোর জন্য ১০০ কোটি রুপি বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছিলাম। আপাতত সেই পরিকল্পনা স্থগিত করতে হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে কড়াকড়ি

গ্রেপ্তার হয়ে অবাক ডন, বললেন—‘স্যার আমাকে কীভাবে গ্রেপ্তার করলেন’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন: জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাহিল ৫ অ্যান্টিবায়োটিক

এবার তেলের খনি নাইজেরিয়াতে নজর ট্রাম্পের, অজুহাত—খ্রিষ্টানরা ভালো নেই

সকালে নাশতা না খাওয়ার পাঁচ ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুর্যোগ মোকাবিলায় বিনিয়োগ কমেছে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

অনিয়ন্ত্রিত কার্বন নিঃসরণে বাড়ছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট। দুর্যোগ দিন দিন বাড়লেও তা মোকাবিলায় বিনিয়োগ কমেছে। বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, নদীভাঙন, জলাবদ্ধতা, পানি বৃদ্ধি এবং মাটির লবণাক্ততা মোকাবিলায় গৃহীত উদ্যোগ বাস্তবায়নে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ কমেছে। মূলত চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) টেকসই ও সবুজ অর্থায়নে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ কমেছে ৯ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা। এ প্রান্তিকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট বিনিয়োগ হয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯৭৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এর আগের প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) মোট বিনিয়োগ হয়েছিল ১ লাখ ৫৮ হাজার ৫৮২ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে টেকসই প্রকল্পে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থায়নের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার ১২৫ কোটি টাকা। আর চলতি বছরের মার্চ শেষে টেকসই প্রকল্পে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থায়নের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮১৯ কোটি শূন্য ৫ লাখ টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে টেকসই প্রকল্পে অর্থায়ন কমেছে ৮ হাজার ৬৯৩ কোটি ২ লাখ টাকা।

তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে টেকসই খাতে ব্যাংকগুলো অর্থায়ন করেছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৩৯৫ কোটি ৩১ লাখ টাকা এবং এ খাতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থায়ন করেছে ২ হাজার ৭৩০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স পলিসি অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো সাসটেইনেবল ফিন্যান্সের ১১ ক্যাটাগরিতে মোট ৬৮টি পণ্যের বিপরীতে ঋণ দিতে পারে। এসব পণ্যের অধিকাংশই সবুজ অর্থায়নের অন্তর্ভুক্ত। টেকসই প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, কৃষি, সিএমএসএমই, পরিবেশবান্ধব কারখানা, সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল প্রকল্পে অর্থায়ন। যদিও চলমান ঋণের ২০ শতাংশ টেকসই প্রকল্পে দেওয়ার নির্দেশ আছে বাংলাদেশ ব্যাংকের।

এদিকে পরিবেশবান্ধব প্রকল্পের মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন, বর্জ্য পরিশোধনাগার বা ইটিপি নির্মাণ, পরিবেশবান্ধব ইট উৎপাদন অন্যতম। এ খাতে মোট মেয়াদি ঋণের ৫ শতাংশ ঋণ দেওয়ার শর্ত রয়েছে।

টেকসই ও সবুজ অর্থায়নে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহিত করতে গত কয়েক বছর বিভিন্ন মানদণ্ডে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর (এনবিএফআই) টেকসই বা সাসটেইনেবল রেটিং বা মান প্রকাশ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, পরিবেশবান্ধব তথা সবুজ প্রকল্পে চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থায়নের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৮৪৯ কোটি শূন্য ৪ লাখ টাকা। আর তিন মাস আগে অর্থাৎ চলতি বছরের মার্চ শেষে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থায়নের পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৭৬৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে সবুজ প্রকল্পে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থায়ন কমেছে ৯১৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

তথ্য বলছে, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) সবুজ প্রকল্পে ব্যাংকগুলোর অর্থায়নের পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৭০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা এবং এ খাতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থায়নের পরিমাণ ছিল ৭৭৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, টেকসই কৃষিতে জুন প্রান্তিকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থায়ন বেড়েছে। জুন শেষে এ খাতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৬৩৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আর মার্চ শেষে এ খাতে অর্থায়নের পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৯২৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। সেই হিসাবে জুন প্রান্তিকে টেকসই কৃষিতে অর্থায়ন বেড়েছে ১ হাজার ৭১০ কোটি টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে কড়াকড়ি

গ্রেপ্তার হয়ে অবাক ডন, বললেন—‘স্যার আমাকে কীভাবে গ্রেপ্তার করলেন’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন: জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাহিল ৫ অ্যান্টিবায়োটিক

এবার তেলের খনি নাইজেরিয়াতে নজর ট্রাম্পের, অজুহাত—খ্রিষ্টানরা ভালো নেই

সকালে নাশতা না খাওয়ার পাঁচ ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাজার মূলধন কমল প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাজার মূলধন কমল প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা

গত সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজারে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার চেয়ে বেশি। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের সঙ্গে বাজার মূলধন প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা কমে গেছে। তবে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৭৭টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৬টির। আর ১৭৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ লেনদেনে অংশ নেওয়া ৪৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়েছে।

দরপতনের তালিকা বড় হওয়ায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৫ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৫ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা বা দশমিক ৮২ শতাংশ।

আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে ৬ হাজার ৫৮ কোটি টাকা। তার আগের দুই সপ্তাহে কমে যথাক্রমে ১৭ হাজার ৮৪১ কোটি ও ৭ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ দুই সপ্তাহে ২৫ হাজার কোটি টাকা কমার পর ডিএসইর বাজার মূলধন ৬ হাজার কোটি টাকা বাড়ে। এখন আবার প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা কমল।

বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি ডিএসইতে প্রধান মূল্যসূচকও কমেছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স সপ্তাহজুড়ে কমেছে ২৭ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৩০ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৬০ শতাংশ। তার আগের দুই সপ্তাহে কমে ১৬৪ দশমিক ৩০ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ১১ শতাংশ এবং ১৩২ দশমিক শূন্য ৭ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

এদিকে গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের গতি কিছুটা বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৫৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪২৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ২৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বা ৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ২৭ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক।

এ ছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং, রবি, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, প্রগতি ইনস্যুরেন্স, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, সিটি ব্যাংক এবং সোনালী পেপার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে কড়াকড়ি

গ্রেপ্তার হয়ে অবাক ডন, বললেন—‘স্যার আমাকে কীভাবে গ্রেপ্তার করলেন’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন: জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাহিল ৫ অ্যান্টিবায়োটিক

এবার তেলের খনি নাইজেরিয়াতে নজর ট্রাম্পের, অজুহাত—খ্রিষ্টানরা ভালো নেই

সকালে নাশতা না খাওয়ার পাঁচ ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড: স্বল্পমূল্যের পণ্যবঞ্চিত দেড় কোটির বেশি দরিদ্র মানুষ

  • এক বছরেও বিতরণ করা হয়নি বাতিল হওয়া সাড়ে ৩৮ লাখ ফ্যামিলি কার্ড
  • বেড়েছে পণ্যমূল্য ও দারিদ্র্যের হার, কমেছে উপকারভোগীর সংখ্যা
  • বাতিল কার্ড প্রতিস্থাপনে ধীরগতির কারণ স্থানীয় সরকার থেকে তথ্য পেতে দেরি হওয়া
রোকন উদ্দীন, ঢাকা
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ১০
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার বাসিন্দা আইয়ুব আলী একসময় রিকশা চালাতেন। শারীরিক সমস্যার কারণে এখন আর তা পারছেন না। বাড়ির কাছে বাজারে হকারি করে কিছু আয়-রোজগারের চেষ্টা করছেন; কিন্তু এতে তাঁর সংসার চলে না। বাধ্য হয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ করেন তাঁর স্ত্রী। এমন অভাব-অনটনে থাকা পরিবার বারবার চেয়েও পায়নি স্বল্পমূল্য পণ্য ক্রয়ের ফ্যামিলি কার্ড। শুধু আইয়ুব আলীই নন, তাঁর মতো প্রায় দেড় কোটি দরিদ্র মানুষ স্বল্পমূল্যের পণ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত সাড়ে ৩৮ লাখ ফ্যামিলি কার্ড এখনো বিতরণ না হওয়ায়।

আইয়ুব আলী জানান, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) প্রথম যখন ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ শুরু করে তখন একটা কার্ড চেয়েছিলেন; কিন্তু পাননি। এখনো পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, ‘আগের সরকারের সময় নেতাদের পিছে পিছে অনেক ঘুরেছি, মেম্বার-চেয়ারম্যানের কাছে গেছি, কার্ড পাইনি। এখন মেম্বার-চেয়ারম্যান নাই, কার কাছে যামু? নেতারা তাঁদের দলীয় লোকদের নামে কার্ড করতেই ব্যস্ত।’

পণ্য বিক্রিতে শৃঙ্খলা ফেরানো এবং প্রকৃত উপকারভোগী চিহ্নিত করে তাদের কাছে পণ্য পৌঁছানোর লক্ষ্যে ২০২২ সালে চালু করা হয় ‘ফ্যামিলি কার্ড’ ব্যবস্থা। লক্ষ্য ছিল ১ কোটি পরিবারকে এ কার্ডের আওতায় নিয়ে আসা। সে অনুযায়ী এক বছরের মধ্যে সরাসরি উপকারভোগী হিসেবে ১ কোটি পরিবারকে কার্ডও দেওয়া হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতিটি কার্ডের বিপরীতে ৪ জন করে উপকারভোগী হিসাব করেছিল তখন। সে হিসাবে মোট ৪ কোটি দরিদ্র মানুষ এ কার্ডের আওতায় ছিল।

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে এসব কার্ড বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ফ্যামিলি কার্ড বিতরণে অনিয়ম খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়। নানা যাচাই-বাছাই শেষে গত বছরের নভেম্বরের শুরুতে ৫৭ লাখ কার্ডকে স্মার্টকার্ডে রূপান্তর করা হয়। বাকি ৪৩ লাখ কার্ড বাতিল করে নতুন করে তথ্য চাওয়া হয় স্থানীয় সরকারের কাছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ৫৭ লাখ কার্ডের বিপরীতে পণ্য বিতরণ শুরু করে টিসিবি। টিসিবির সর্বশেষ হিসাবমতে, বর্তমানে ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ডের মধ্যে সচল হয়েছে ৬১ লাখ ৫১ হাজার ২৩২টি। বাকি ৩৮ লাখ ৪৯ হাজার কার্ড এখনো অকার্যকর রয়েছে। প্রতিটি কার্ডের বিপরীতে ৪ জন করে হিসাবে করলে দেড় কোটি দরিদ্র মানুষ ফ্যামিলি কার্ডের সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২২ সালে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। সে হিসাবে তখন দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ১৭ লাখ (জনসংখ্যা ১৭.৯৮ কোটি)।

গত চার বছরে দারিদ্র্যের হার বেড়ে ২৭ দশমিক ৯৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। দেশে বর্তমানে ৫ কোটি দরিদ্র মানুষ রয়েছে। বিপরীতে টিসিবির পণ্য পাচ্ছে ২ কোটি ৪৭ লাখ দরিদ্র মানুষ।

৪ কোটির মধ্যে বাকি ১ কোটি ৫৩ লাখ মানুষ সরকারের এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

টিসিবির কর্মকর্তারা বলছেন, একই ফ্যামিলিতে দুটি কার্ড থাকা, একই ফোন নম্বরে একাধিক কার্ড থাকা, কার্ডধারীর ফোন নম্বর সচল না থাকা, কার্ডধারীর মৃত্যুসহ বিভিন্ন কারণে বাতিল করা হয়। এসব সমস্যা না থাকলে আগের তালিকা অনুসারেই হাতে লেখা কার্ডের পরিবর্তে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হয়েছে। পরে স্মার্টকার্ড বিতরণের পরও অনেকে কার্ড সংগ্রহ ও অ্যাকটিভ করেনি। সে কার্ডগুলোও বাতিল করা হয়।

টিসিবির মুখপাত্র ও উপপরিচালক (বাণিজ্যিক) মো. শাহাদত হোসেন বলেন, ‘বাতিল হওয়া কার্ডগুলো প্রতিস্থাপনে গতিধীর হওয়ার মূল কারণ স্থানীয় সরকার থেকে তথ্য পাওয়ায় ধীরগতি। উপজেলা, জেলা কিংবা সিটি করপোরেশন থেকে কার্ডধারীদের নাম, ফোন নম্বর ও বিস্তারিত তথ্য দিলে আমাদের কাজ কার্ড প্রিন্ট করে বিতরণ করছি এবং পরে এসব কার্ডের বিপরীতে পণ্য বরাদ্দ দিচ্ছি।

’আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি কার্ডগুলো প্রতিস্থাপন হবে করা বলে আশা করছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, ডিসি ও সিটি করপোরেশনের প্রশাসকদের সঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা এ বিষয়ে বৈঠক করে করে দ্রুত তথ্য দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন উপদেষ্টা।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন মনে করছেন, টিসিবি দায়সারা কাজ করছে। তিনি বলেন, এটা ঠিক যে, অনেক জায়গায় চেয়ারম্যান-মেম্বার না থাকায় কিছু সমস্যা হচ্ছে। তাই বলে এক বছরেও ৩৮ লাখ কার্ড বিতরণ করতে পারেননি তাঁরা, তা হলে তাঁরা কী কাজ করেন? তাঁরা সঠিকভাবে মনিটরিং করলে, স্থানীয় সরকারকে চাপ দিলে এত দিনে কার্ড হয়ে যেত। এ কার্ডগুলো বিতরণ করা হলে এই দুর্মূল্যের বাজারে দেড় কোটি মানুষ স্বস্তি পেত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে কড়াকড়ি

গ্রেপ্তার হয়ে অবাক ডন, বললেন—‘স্যার আমাকে কীভাবে গ্রেপ্তার করলেন’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন: জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাহিল ৫ অ্যান্টিবায়োটিক

এবার তেলের খনি নাইজেরিয়াতে নজর ট্রাম্পের, অজুহাত—খ্রিষ্টানরা ভালো নেই

সকালে নাশতা না খাওয়ার পাঁচ ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএসটিআইয়ের ল্যাব: আন্তর্জাতিক মানের অত্যাধুনিক পরীক্ষাগার বানাচ্ছে সরকার

  • প্রকল্পের ব্যয় ৮৫১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা
  • রাসায়নিক ও খাদ্যপণ্যের পরীক্ষণ বাড়বে ৩৩ শতাংশ
  • ইলেকট্রিক্যাল ও টেক্সটাইল পণ্যের পরীক্ষণ বাড়বে ৫০%
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশে উৎপাদিত ও আমদানি করা পণ্যের মান আন্তর্জাতিক স্তরে উন্নীত করতে অত্যাধুনিক পরীক্ষাগার তৈরি করছে সরকার। শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেওয়া এ প্রকল্পের নাম ‘বিএসটিআইর পদার্থ (ফিজিক্যাল) ও রসায়ন (কেমিক্যাল) পরীক্ষণ ল্যাবরেটরির সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন’।

শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের মোট ব্যয় ৮৫১ কোটি ৯৩ লাখ, যার মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৮০১ কোটি ৯৩ লাখ এবং বাকি ৫০ কোটি টাকা দেবে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। ইতিমধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছে।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে স্থাপন করা হবে এই ল্যাব। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পটি চলতি বছরের জুলাইয়ে শুরু হয়েছে, শেষ হবে ২০২৮ সালের জুনে। ল্যাবটিতে আন্তর্জাতিক মান অনুসরণে পণ্যের মান পরীক্ষা করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশীয় শিল্পে মানসম্মত পণ্য উৎপাদন বাড়বে, রপ্তানিযোগ্য পণ্যের পরিধিও বাড়বে। একই সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে ওজন ও পরিমাপের যথার্থতা নিশ্চিত করা যাবে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, প্রকল্পের আওতায় বেসমেন্টসহ ১৩ তলার একটি ভবন নির্মাণ করা হবে, আয়তন ১২ হাজার ৫১৯ বর্গমিটার। সেখানে নতুন করে ২০টি রসায়ন পরীক্ষাগার গড়ে তোলা হবে এবং বিদ্যমান ১৮টি আধুনিকায়ন করা হবে। একইভাবে ১৫টি নতুন পদার্থ পরীক্ষাগার স্থাপন ও ১৪টি পুরোনো ল্যাব সম্প্রসারণ করা হবে। মোট ৭৮১টি আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা হবে, যার মধ্যে রয়েছে ৫৪১টি রসায়ন ও ২৪০টি পদার্থ পরীক্ষার সরঞ্জাম। প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি বিশেষ সিস্টেম ল্যাব (এসি, ফ্রিজ, ট্রান্সফরমার, এলইডি ল্যাম্প ও সোলার মডিউল) স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি ১৫৭টি কম্পিউটার, ৩৩ ধরনের অফিস সরঞ্জাম ও ৭৩৬টি আসবাব কেনা হবে।

জানতে চাইলে শিল্পসচিব ওবায়দুর রহমান বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশে উৎপাদিত ও আমদানি করা পণ্যের পরীক্ষণ সক্ষমতা বহুলাংশে বাড়বে। রাসায়নিক ও খাদ্যপণ্যের পরীক্ষণ সুবিধা ৩৩ শতাংশ এবং পদার্থ, ইলেকট্রিক্যাল ও টেক্সটাইল পণ্যের পরীক্ষণ সুবিধা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।

বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম বলেন, নতুন ল্যাব চালু হলে বছরে ২০ হাজারের বেশি রাসায়নিক ও খাদ্যপণ্যের এবং ১২ হাজারের বেশি পদার্থ ও টেক্সটাইল পণ্যের পরীক্ষণ রিপোর্ট দেওয়া সম্ভব হবে।

বর্তমানে বিএসটিআই ২৯৯টি বাধ্যতামূলক পণ্য পরীক্ষণ করে। এ ছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি নীতি আদেশে থাকা ৭৯টি পণ্যও বিএসটিআই ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। ঢাকাসহ সাতটি বিভাগে সংস্থাটির কার্যালয় থাকলেও স্বল্পসংখ্যক কার্যালয় ও সীমিত সাংগঠনিক কাঠামোর মাধ্যমে সারা দেশে কার্যক্রম পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে কড়াকড়ি

গ্রেপ্তার হয়ে অবাক ডন, বললেন—‘স্যার আমাকে কীভাবে গ্রেপ্তার করলেন’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন: জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাহিল ৫ অ্যান্টিবায়োটিক

এবার তেলের খনি নাইজেরিয়াতে নজর ট্রাম্পের, অজুহাত—খ্রিষ্টানরা ভালো নেই

সকালে নাশতা না খাওয়ার পাঁচ ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত