Ajker Patrika

কারখানায় একাধিক নিরীক্ষা চায় না বিজিএমইএ

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫: ৫৯
কারখানায় একাধিক নিরীক্ষা চায় না বিজিএমইএ

শিল্পমালিকদের খরচ কমাতে তৈরি পোশাকশিল্প কারখানাগুলোকে একাধিক নিরীক্ষা কমাতে মার্কিন ক্রেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাকশিল্পের বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে এক গোলটেবিল বৈঠকে এ আহ্বান জানান সংগঠনটির সভাপতি। বাংলাদেশ দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ১০ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, মার্কিন সরকার ও সংশ্লিষ্টদের অংশগ্রহণে ‘রানা প্লাজা-পরবর্তী সাত বছর : কে কী করছে?’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। যুক্তরাষ্ট্রে সফররত বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসানের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্রিস্টোফার উইলসন, টেক্সটাইলবিষয়ক সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি উইলিয়াম জ্যাকসন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার পরিচালক জেনিফার লারসন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ডেমোক্রেসি, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড লেবারের পরিচালক মরিন হ্যাগার্ডসহ যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া ম্যাকলার্টি অ্যাসোসিয়েটসের প্রতিনিধি টেরেসিতা শ্যাফার, বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট মিরান আলী,  ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রতিনিধি, আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএএফএ) এর প্রতিনিধি এবং ওয়ালমার্ট ও টার্গেট এর প্রতিনিধিদের পাশাপাশি বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা এতে অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকে বাংলাদেশে তৈরি পোশাকশিল্পের কারখানা নিরাপত্তা এবং শ্রমিকদের কল্যাণের লক্ষ্যে চলমান প্রচেষ্টার পাশাপাশি কীভাবে আরও মার্কিন আমদানিকারকদের বাংলাদেশি তৈরি পোশাক আমদানিতে উৎসাহিত করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়। 

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান তাঁর বক্তব্যে একটি সাবলীল ও টেকসই সরবরাহব্যবস্থা এবং সোর্সিংয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের খরচ কমানোর নিমিত্তে কারখানার একাধিক নিরীক্ষা কমানোর জন্য মার্কিন ক্রেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। বাংলাদেশে শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি এবং তৈরি পোশাকের ক্রমবর্ধমান উৎপাদন খরচ বিবেচনায় বিজিএমইএর সভাপতি বাংলাদেশ তৈরি পোশাকের উচ্চ ও ন্যায্যমূল্য প্রদানের জন্য মার্কিন ক্রেতাদের অনুরোধ জানান। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের জন্য শুল্ক কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করতে মার্কিন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। 

বৈঠকে ফারুক হাসান বাংলাদেশ সরকার এবং বিজিএমইএ কর্তৃক নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। এর মধ্যে পোশাকশ্রমিকদের কল্যাণে গঠিত আরএমজি সাসটেইনেবিলিটি কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা এবং কর্মস্থলের নিরাপত্তা বজায় রাখতে গঠিত ট্রাইপাট্রাইট কনসালটেটিভ কাউন্সিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে তিনি করোনা মহামারির কারণে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে নতুন  চ্যালেঞ্জ এবং বিজিএমইএ কীভাবে এই কঠিন সময়ে শ্রমিকদের সহযোগিতা করেছে তার উল্লেখ করেন। এ ছাড়া তিনি ইনসেনটিভ প্যাকেজের মাধ্যমে সরকারের উদার অবদানের কথা স্বীকার করেন। 

ইন্টারেকটিভ সেশন চলার সময় সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্রিস্টোফার উইলসন দেশে ও বিদেশে শ্রমিকদের কল্যাণে বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন। ট্যারিফ ইস্যুকে মার্কিন কংগ্রেসের বিশেষ ক্ষমতা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি শ্রম এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দুই সরকারের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। 

স্বাগত বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং এর আর্থসামাজিক উন্নয়নে তৈরি পোশাকশিল্পের অপরিসীম অবদানের কথা তুলে ধরেন।  তিনি উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার শ্রমিকদের কল্যাণ ও শিল্পকে রক্ষা করার জন্য বিশেষত, রানা প্লাজার ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ ও উদ্যোগ গ্রহণ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত