Ajker Patrika

ডলারের মজুত বাড়ছে না কিছুতেই, রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতেও প্রভাব নেই

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
ডলারের মজুত বাড়ছে না কিছুতেই, রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতেও প্রভাব নেই

এক ডলার-সংকটেই দেশীয় ও বৈদেশিক বাণিজ্য, কলকারখানায় উৎপাদন, পরিবহন ও যোগাযোগ এবং কর্মসংস্থানে শ্লথগতি দেখা দিয়েছে। ডলারের মজুত বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের লাগাতার পদক্ষেপেও কাজ হচ্ছে না। উল্টো কমছে রিজার্ভ। গত কয়েক মাসে রেমিট্যান্স সংগ্রহ ধারাবাহিকভাবে বাড়লেও রিজার্ভের মজুত বাড়ানো যাচ্ছে না। রমজান ও আসন্ন ঈদ ঘিরে রেমিট্যান্সে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু রিজার্ভে এই উল্লম্ফনের প্রভাব সামান্যই। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রতিবছরের মতো এবারও রমজানের শুরু থেকেই প্রতিদিন গড়ে ৬ কোটি ৪৩ লাখ ডলার এসেছে। মাস শেষে ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। অথচ গতকাল বিপিএম হিসাবে রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার। গত বছর ডিসেম্বর শেষে তা ছিল ২১ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি মার্চ মাসের প্রথম ২২ দিনে দেশে বৈধ পথে ১৪১ কোটি ৪৫ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। দেশীয় মুদ্রায় যার (প্রতি ১ ডলার সমান ১১০ টাকা ধরে) পরিমাণ প্রায় ১৫ হাজার ২০৮ কোটি টাকা। এ হিসাবে ২২ দিনে দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৬ কোটি ৪২ লাখ ডলার।

তথ্য বিশ্লেষণে লক্ষণীয় যে, রেমিট্যান্স সংগ্রহে প্রথম ১০টি ব্যাংকের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক পিএলসি। এককভাবে ৪০২ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে ব্যাংকটি। 

রেমিট্যান্স সংগ্রহ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত জুলাইতে রেমিট্যান্স এসেছে ১ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। পরে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে কমে তা হয়েছে যথাক্রমে ১ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ও ১ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার। পরের মাস অক্টোবরে বেড়ে দাঁড়ায় ১ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। সেই বৃদ্ধির প্রবণতায় নভেম্বরে এসেছে ১ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার, ডিসেম্বরে ১ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন, জানুয়ারিতে ২ দশমিক ১১ বিলিয়ন এবং ফেব্রুয়ারিতে ২ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রেমিট্যান্স সংগ্রহ হয়েছিল ২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার ও তার আগের অর্থবছরে ছিল ২১ বিলিয়ন ডলার। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী রিজার্ভ ক্রমান্বয়ে কমছে। গতকাল মোট রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের পরামর্শে বিপিএম-৬ অনুযায়ী তা ১৯ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার। আয়-দায় বাদ দিলে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ ছিল ১৪ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার। 

গত ফেব্রুয়ারি মাসে মোট রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ও বিপিএমে ২০ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। তার আগের মাস জানুয়ারিতে আকু বিল পরিশোধে একটু টান পড়ে মোট রিজার্ভ দাঁড়ায় ২৫ দশমিক ১১ বিলিয়ন ও বিপিএম হিসাবে ছিল ১৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন। ডিসেম্বরে রিজার্ভ ছিল ২৭ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার ও বিপিএমে ২১ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন, নভেম্বরে ছিল ২৪ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ও বিপিএম হিসাবে ১৯ দশমিক ৩০ বিলিয়ন, অক্টোবরে ছিল ২৬ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ও বিপিএমে ২০ দশমিক ৭১ বিলিয়ন। সেপ্টেম্বরে রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার ও বিপিএম হিসাবে ২১ দশমিক শূন্য বিলিয়ন, আগস্টে ছিল ২৯ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ও আইএমএফের হিসাবে ২৩ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার। এর আগে ২০২১ সালের আগস্টের রেকর্ড রিজার্ভ ছিল ৪৮ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার, তখন বিপিএম হিসাবে দেখানো হতো না। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, ডলার-সংকট সামলাতে নানা উদ্যোগের ফল পাওয়া শুরু হয়েছে। রেমিট্যান্স বেড়েছে। ঈদকে কেন্দ্র করে প্রবাসী আয়ে উল্লম্ফন হয়েছে। কিন্তু রেমিট্যান্স সরাসরি রিজার্ভে যোগ হয় না। আবার অন্যান্য খাতের কিছু নেতিবাচক প্রভাবে রিজার্ভ না বেড়ে উল্টো কমছে। সামনে রিজার্ভ বাড়বে। এই নিয়ে শঙ্কার কিছু নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চকরিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজের আগেই বের হয়ে যেতে বলা হয় জেলেনস্কিকে

‘আমাদের অনুমতি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করব’, সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল

এনসিপির কর্মীদের ঢাকায় আনতে সরকারের বাস রিকুইজিশন, সমালোচনার ঝড়

সিরিয়ায় রাশিয়ার ঘাঁটি রাখতে যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের তদবির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত