Ajker Patrika

জাতীয় নির্বাচনের পর দেশে বড় বিনিয়োগ আসবে: বিএসইসি চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জাতীয় নির্বাচনের পর দেশে বড় বিনিয়োগ আসবে: বিএসইসি চেয়ারম্যান

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে আরও স্মার্ট হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সব সময় বলেন, স্মার্ট হতে হবে প্রতিটা কাজে। বিনিয়োগে ঝুঁকি যেভাবে বেড়েছে, স্মার্ট না হলে সেগুলো এড়িয়ে চলা যাবে না। 

আজ সোমবার বিএসইসির মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচনের পর দেশে বড় বিনিয়োগ আসবে।  

বিশ্ব পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশনের (আইওএসসিও) সদস্য হিসেবে ২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর সপ্তাহটি পালন করছে বিএসইসি। এরই ধারাবাহিকতায় ২ থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত ‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ ২০২৩’ পালনের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিএসইসি। 

বাংলাদেশ সম্পর্কে বহির্বিশ্বের নেতিবাচক ধারণা বিনিয়োগ আনতে প্রতিবন্ধকতা ছিল উল্লেখ করে অধ্যাপক শিবলী বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগকারী কীভাবে আসবে? তারা ভাবে আমরা গরিব দেশ। দুর্যোগ, বন্যা, সাইক্লোনে আক্রান্ত। তাহলে কেন বিদেশিরা এ দেশে বিনিয়োগ করবে? তাদের এই ভুল ধারণা ভাঙানোর জন্যই আমরা কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং করেছি।’ 

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিনিয়োগ এখন বাংলাদেশের জন্য খুবই জরুরি। আমাদের দেশে এখন বিনিয়োগের অনেক ক্ষেত্র রয়েছে। বিনিয়োগের মাধ্যমে কৃষি, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি সব ক্ষেত্রেই উন্নয়নকে আরও বেগবান করার সুযোগ রয়েছে। এ জন্য আমাদের কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং দরকার ছিল। আমরা বিভিন্ন দেশে রোড শো করে সেটাই করতে চেষ্টা করেছি। এটা বিএসইসির দায়িত্ব না হওয়া সত্ত্বেও আমরা দেশের স্বার্থে করেছি। ইতিমধ্যে বেশ কিছু সাড়াও পাওয়া গেছে।’ 

আগামী জাতীয় নির্বাচনের পর দেশে বেশ কিছু বড় বিনিয়োগ আসবে জানিয়ে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘ইতিমধ্যে অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী আমার কাছে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের কাছেও বেশ কিছু বড় বিদেশি বিনিয়োগ আসার প্রস্তাব এসেছে। নির্বাচনের পরই কান্ট্রি ব্র্যান্ডিংয়ের সুফল আসবে।’ 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ইমেরিটাস অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশের। এখন যে গতিতে বাংলাদেশ এগোচ্ছে, তা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হতে পারবে। 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগ সপ্তাহে বেশ কিছু আয়োজন রয়েছে, যার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারবেন। কীভাবে ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ নিশ্চিত করা যায়, তার জন্যও থাকবে বিশেষ কিছু প্রোগ্রাম। অনিবন্ধিত এবং আনঅথোরাইজড কেউ যেন মার্কেটে ‘রোল প্লে’ করতে না পারে, সে বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করতে থাকবে বিশেষ আয়োজন।’ 

‘ইনভেস্টর রিসাইলিয়েন্স’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় আলোচক ছিলেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি মো. মনিরুজ্জামান, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি মো. সাইফুদ্দিন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চিফ রেগুলেটরি অফিসার খায়রুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ। প্যানেল আলোচনা পরিচালনা করেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান। 

মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বিনিয়োগকারী এবং বাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আপত্কালীন বা বিপদ ফান্ড থাকা উচিত। যদি আপত্কালীন ফান্ড থাকত, তবে এই মুহূর্তে বাজারে বিনিয়োগ করতে পারত। বাজারও দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতো। 

মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আদি যুগ থেকেই মানুষের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে টিকে থাকা। যুগে যুগে মানুষের জীবনযাত্রা পরিবর্তন হয়েছে। যারা পুঁজিবাজারের বাজে অবস্থার সময় ছিলেন বা দায়ী ছিলেন, তাঁরা হারিয়ে গেছেন। কিন্তু পুঁজিবাজার ঠিকই টিকে আছে। 

মো. সাইফুদ্দিন বলেন, ‘যারা ইক্যুইটি মার্কেটে আছে, তাঁদের ডেট মার্কেটেও থাকা উচিত। এতে ঝুঁকি কমবে। বিএসইসি চেষ্টা করছে ডেট মার্কেটকে দাঁড় করানোর জন্য। আর বিশ্বব্যাপী অ্যাসেট হিসেবে ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রচলন শুরু হয়েছে। তাই আমাদেরও ভাবতে হবে। ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কে শিখতে হবে, জানতে হবে।’ 

খায়রুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ বলেন, সার্কিট ব্রেকার, ফ্লোর প্রাইজ, ম্যানিপুলেশন ইত্যাদি বিষয়ে ডিএসই এবং বিএসইসি একসঙ্গে মনিটরিংয়ের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। 

সমাপনী বক্তব্যে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএসইসির কমিশনার আব্দুল হালিম বলেন, বাংলাদেশে ব্যাপক মানুষকে পুঁজিবাজারে সম্পৃক্ত করা ও বিনিয়োগে নিয়ে আসার সুযোগ রয়েছে। এ জন্য বিনিয়োগ শিক্ষা আরও ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন। 

অনুষ্ঠানে বিএসইসির কমিশনার ড. মিজানুর রহমান, ড. রুমানা ইসলামসহ পুঁজিবাজারে বিভিন্ন পর্যায়ের অংশীজনের অংশগ্রহণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত