Ajker Patrika

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: হবিগঞ্জে ‘টাকার বিনিময়ে পকেট কমিটি’, অবাঞ্ছিত ঘোষণা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান এনামুল হক সাকিব। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান এনামুল হক সাকিব। ছবি: আজকের পত্রিকা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নবগঠিত হবিগঞ্জ জেলা আহ্বায়ক কমিটিকে ‘পকেট কমিটি’ আখ্যা দিয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন সংগঠনের একাংশ। কমিটি গঠনে টাকার লেনদেন, রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব, নারী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ এনেছে তারা।

আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ তোলেন নবগঠিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক সাকিব। তাঁর সঙ্গে ৪৫ জন সহযোদ্ধা রয়েছে বলে জানান সাকিব। নতুন কমিটি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সংশোধন করা না হলে হবিগঞ্জে এই সংগঠনকে আর কাজ করতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে এনামুল হক সাকিব অভিযোগ করে বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমার সংগ্রাম, ত্যাগ ও আত্মত্যাগ হবিগঞ্জবাসী জানে। অথচ কমিটিতে পদ কেনাবেচার মাধ্যমে অযোগ্যদের স্থান দেওয়া হয়েছে। আমাকে গুরুত্বপূর্ণ পদ না দিয়ে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। কারণ, আমি টাকা দিইনি। অথচ যারা অর্থের বিনিময়ে পদ কিনেছেন, তারা আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন।’

এনামুল হক সাকিব বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসিব আমাকে জানানোর চেষ্টা করছেন, মৌলভীবাজারে এটা নিচ্ছে, মৌলভীবাজার নিয়ে টেনশন না করতে, সাকিবের (মানে আমার) সঙ্গে টাকার বিষয়ে আলোচনা করতে। এর থেকে পরিষ্কার হয়, মৌলভীবাজারেও টাকার লেনদেন হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই কমিটিতে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও স্বৈরাচার সরকারের দোসরদের স্থান দেওয়া হয়েছে। আহ্বায়ক করা হয়েছে ছাত্রদল সংশ্লিষ্ট আরিফ তালুকদারকে, সদস্যসচিব হয়েছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির মাহদি, আর মুখ্য সংগঠক হিসেবে শিবিরকর্মী সুজনকে রাখা হয়েছে। ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদেরও পুনর্বাসন করা হয়েছে, যা গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।’

নতুন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অভিযোগ করেন, ‘নবগঠিত কমিটিতে নারী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি চরম বৈষম্য করা হয়েছে। ২৯৪ সদস্যের মধ্যে ২০০ জন পুরুষ, মাত্র ১৪ জন নারী এবং মাত্র একজন ভিন্ন ধর্মাবলম্বী রয়েছেন। অথচ গণ-অভ্যুত্থানে নারী ও সংখ্যালঘুদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। এ ছাড়া, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে বানিয়াচংয়ের ছয়জন শহীদ হলেও কমিটিতে তাদের কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘এই কমিটি হবিগঞ্জবাসীর সঙ্গে প্রতারণা এবং গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থী। তাই আমি ও আমার ৪৫ জন সহযোদ্ধা এই কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি এবং হবিগঞ্জের মাটিতে এই পকেট কমিটির কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নবগঠিত জেলা কমিটির সহসদস্যসচিব সুরাইয়া সামান্থা পুষ্পিতা, সদস্য শেখ হৃদয়, শফিকুল ইসলাম মান্না, ইশতিয়াক আহমেদ, বাহুবল উপজেলার সমন্বয়ক আরাফাতুজ্জামান শাওন প্রমুখ। তাঁরা সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ কমিটি গঠনের দাবি জানান।

গত মঙ্গলবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হবিগঞ্জ জেলা শাখার ২২৬ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ওই দিনই হবিগঞ্জে কমিটি প্রত্যাখ্যান করে হবিগঞ্জ শহরসহ কয়েকটি স্থানে ঝাড়ু মিছিল বের করে একাংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত