Ajker Patrika

নিউইয়র্কে সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ছিলেন কুলাউড়ার গর্ব

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৫, ২০: ৫৭
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম রতন মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার সন্তান। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম রতন মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার সন্তান। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের ম্যানহাটনে সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত হয়েছেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার সন্তান দিদারুল ইসলাম রতন (৩৬)। তিনি নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ ডিপার্টমেন্টের একজন কর্মঠ ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা ছিলেন। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে একটি বহুতল অফিস ভবনে দায়িত্ব পালনকালে ২৭ বছর বয়সী শেন তামুরা নামের এক যুবকের ছোড়া গুলিতে প্রাণ হারান তিনি।

দিদারুল ইসলাম রতনের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভার মাগুরা এলাকায়। বাবার নাম মো. আব্দুর রব, মায়ের নাম মিনারা বেগম। রতনের দুই বোন নাঈমা ও নাদিমা। রতনের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা, তিনি নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসের পার্চেস্টার এলাকায় বসবাস করেন। কর্মস্থল ছিল ব্রঙ্কসের ৪৭ প্রিসিঙ্কট।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে কুলাউড়ার মাগুরা এলাকায় রতনের শূন্য বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তাঁর আত্মীয় তাহেরা বেগম দুলির সঙ্গে। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘রতনের মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। ও খুব শান্ত, ভদ্র ও মেধাবী ছেলে ছিল। আমেরিকায় পুলিশে চাকরি করত, কত গর্ব করতাম আমরা! তাকে হত্যা করা হলো।’

পরিবারের অন্য একজন জানান, নিউইয়র্কে থাকা রতনের মা-বাবা, স্ত্রী ও বোনেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। হাসপাতাল থেকে মরদেহ বুঝে নেওয়ার সময় তাঁরা সবাই ছিলেন।

রতনের জন্ম বড়লেখা উপজেলার শিক্ষারমহল গ্রামে। তাঁর বাবা আব্দুর রব দীর্ঘদিন কুয়েতে কর্মরত ছিলেন। পরে কুলাউড়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। রতন ২০০৯ সালে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। উচ্চশিক্ষা শেষ করে যুক্ত হন নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম রতন মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার সন্তান। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম রতন মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার সন্তান। ছবি: সংগৃহীত

এলাকার শিক্ষক আবু জাফর বলেন, ‘রতন আমার ছাত্র ছিল। মাগুরা এলাকার গর্ব ছিল। দেশে থাকতে সে ভালো খেলোয়াড় ছিল, খুবই মেধাবী ছিল। তাঁর মৃত্যু আমাদের ক্রীড়াঙ্গনেও গভীর শোকের ছায়া ফেলেছে।’

রতনের মৃত্যু কেবল একটি পরিবারের নয়, কুলাউড়ার, মৌলভীবাজারের, এমনকি প্রবাসী বাংলাদেশি সমাজেরও এক অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে দেখছেন এলাকাবাসী। প্রতিবেশী ও এলাকার যুবক হাসিম খান ভুট্টো বলেন, ‘রতন ভাই ছিলেন আমাদের গর্ব। ছোটবেলা থেকেই দেখতাম, পড়াশোনায় দারুণ ছিলেন, খেলাধুলাতেও এগিয়ে ছিলেন। পরে শুনি, আমেরিকায় গিয়ে পুলিশে চাকরি পেয়েছেন—তখন খুব গর্ব লাগত। এলাকায় এসে আমাদের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতেন। তাঁর মতো ভদ্র ও নম্র একজন মানুষকে এভাবে হারাব, তা কখনো কল্পনাও করিনি। রতনের মৃত্যু আমাদের চোখে জল এনে দিয়েছে, এটা শুধু তাঁর পরিবারের নয়, পুরো মাগুরা এলাকারই অপূরণীয় ক্ষতি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত