Ajker Patrika

পুরোনো রড ব্যবহার দুই কোটির সেতুতে

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা
আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮: ২০
পুরোনো রড দিয়ে চলছে সেতু নির্মাণকাজ। সম্প্রতি গাইবান্ধার সাঘাটার হাফানিয়া-বটতলা সড়কে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুরোনো রড দিয়ে চলছে সেতু নির্মাণকাজ। সম্প্রতি গাইবান্ধার সাঘাটার হাফানিয়া-বটতলা সড়কে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় সেতু নির্মাণে পুরোনো রড ব্যবহারের অভিযোগ উঠছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। বিষয়টি স্থানীয়রা জানার পর সেতু নির্মাণকাজে বাধা দিলে চাঁদাবাজির মামলার হুমকি দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধা জেলার সঙ্গে বগুড়ার যোগাযোগব্যবস্থা আরও বেগবান করতে গাইবান্ধার বাদিয়াখালী থেকে সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া হয়ে সোনাতলা উপজেলার মাধ্যমে বগুড়ার সংযোগ সড়কটি সম্প্রসারণ প্রায় শেষ দিকে। কিন্তু সাঘাটার হাফানিয়া-বটতলা সড়কের ২০ মিটার সেতুটি সরু হওয়ায় এলজিইডি এটি প্রশস্ত করার উদ্যোগ নেয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ১২ লাখ ৮২ হাজার ৮০২ টাকা। কাজ পায় নওগাঁর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স বসুন্ধরা হাউস বিল্ডার্স অ্যান্ড দোয়েল এন্টারপ্রাইজ।

স্থানীয় বাসিন্দা ও কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেতু নির্মাণে পুরোনো লোহার বিম, পোস্ট ও অন্যান্য লোহার মালপত্র জোড়াতালি দিয়ে কাজ করছেন ঠিকাদার। বিষয়টি নজরে এলে স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দেন।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, তিন-চারজন শ্রমিক কাজ করছেন। তাঁরা পিলার নির্মাণে পুরোনো লোহা ব্যবহার করছেন। এ ছাড়া কোনো ধরনের যন্ত্রপাতির সাহায্য ছাড়াই ঝুঁকি নিয়ে সনাতন পদ্ধতিতে পিলার মাটির নিচে দিচ্ছেন শ্রমিকেরা। এ সময় পুরোনা লোহা দিয়ে নির্মাণকাজ ও শিডিউল অনুযায়ী কাজ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় যুবক নুর আলম বলেন, ‘সেতু নির্মাণে পুরোনো রড ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা এটি মেনে নিতে পারব না। আমরা চাই সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সেতুটি নির্মাণ করা হোক।’ বটতলা বাজারের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘ঠিকাদার যেন আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সেতু নির্মাণ করতে না পারেন, তাই আমার মাঝেমধ্যে খোঁজখবর নেই। আমরা কয়েক দিন থেকে লক্ষ্য করছি, এই সেতু নির্মাণে নিম্নমানের রড ব্যবহার করা হচ্ছে। রডগুলো জুমাবাড়ির একটি সেতু থেকে কম দামে নেওয়া হয়েছে।’

মথরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জামান মিয়া বলেন, ‘ভাঙারির দোকান থেকে পুরোনো রড কিনে সেতুর গার্ডার তৈরি করা হয়েছে। আমরা বাধা দিলেও ঠিকাদার কথা শুনতেছেন না। ইঞ্জিনিয়ারকে বললে শুধু বলেন, বিষয়টি দেখছি। আমরা এর প্রতিকার চাই।’

জানতে চাইলে ঠিকাদার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সেতু নির্মাণে পুরোনো রড ব্যবহার করা হচ্ছে না। রডগুলো দীর্ঘদিন একটি সিমেন্টের গোডাউনে রাখা ছিল। তাই কালার পরিবর্তন হয়ে মরিচা ধরেছে।’

এ বিষয়ে সাঘাটা উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী নয়ন রায় বলেন, সেতুতে পুরোনো রড ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই।’ বিষয়টি সরেজমিনে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত