Ajker Patrika

২২ কোটি টাকা বকেয়া, দিনাজপুর পৌরসভার বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন 

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১: ১৫
Thumbnail image

২২ কোটি টাকা বকেয়া পরিশোধ না করায় দিনাজপুর পৌরসভার বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) বিক্রয় ও বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান নেসকো। ফলে জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, পানির বিল, ডিজিটাল সেবা ও স্বাস্থ্য বিভাগের ফ্রিজে রাখা শিশুদের বিভিন্ন প্রকার টিকার অ্যাম্পুল নিয়ে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে। তবে জেনারেটর দিয়ে দাপ্তরিক ও সেবা কার্যক্রম ঠিক রাখার চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ। 

গত বুধবার (৩১ জানুয়ারি) ভোরে পৌরসভার ভবনের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। 

এ বিষয়ে উভয় কর্তৃপক্ষের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলাল বলেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিয়মিত বিল পরিশোধ করছেন। অপরদিকে পিডিবির বিক্রয় ও বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান নেসকো-১ এর দিনাজপুর প্রকৌশলী ফজলুর রহমান চুক্তি অনুযায়ী বিল না দেওয়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলে জানান। 

জানা গেছে, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম বরখাস্ত অবস্থায় রয়েছেন। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন প্যানেল মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলাল। অপরদিকে নেসকো দিনাজপুর-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী বিদেশে থাকায় দায়িত্বে রয়েছেন দিনাজপুর-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলুর রহমান। 

জানতে চাইলে নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রায় সাড়ে ২২ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত মেয়রের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল, তাঁরা প্রতি মাসের চলমান বিল পরিশোধ করবেন। সেই সঙ্গে বকেয়া ২৫ শতাংশ হারে হিসাব অনুযায়ী যা আসে, সেটি পরিশোধ করার কথা। 
কিন্তু এতে তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে এ কর্মকর্তা বলেন, ‘তাঁদের দাবির অনুকূলে তাঁরা কোনো ডকুমেন্ট দেখাতে পারেননি।’ 

অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলাল বলেন, ‘আমি গত বছরের ১০ অক্টোবর ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করি। এ সময় নেসকো দিনাজপুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমার বৈঠক হয়। তাদের আমি জানিয়েছি, প্রতি মাসের চলমান বিল পরিশোধ করব। সে অনুযায়ী নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে আসছি। গত ৩০ তারিখ আমি বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে রংপুরে মিটিংয়ে থাকায় ৩১ তারিখ সকালে জানুয়ারি মাসের বিলের চেক প্রদান করি। কিন্তু তারা কোনো নোটিশ ছাড়াই গোপনে বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে। 

ভারপ্রাপ্ত মেয়র বলেন, ‘এতে করে সব ধরনের সেবা যেমন জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন, অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন, পানির বিল প্রদান, ডিজিটাল সেবা এবং পৌরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের ফ্রিজে থাকা শিশুদের বিভিন্ন প্রকার টিকার অ্যাম্পুল নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। আমি এবং আমার প্রকৌশলীরা তাঁদের সঙ্গে একাধিকবার দেখা করে জানুয়ারি মাসের বিদ্যুৎ বিল বাবদ ৩১ জানুয়ারি ইস্যু করা ১১ লাখ টাকার চেকটি গ্রহণ করার জন্য বলি।

কিন্তু কোনো এক অজ্ঞাত কারণে চেকটিও গ্রহণ করছে না এবং বিদ্যুৎ-সংযোগও দেওয়া হচ্ছে না। এতে বাধ্য হয়ে জেনারেটর চালিয়ে পৌরসভায় জনসেবা সচল রেখেছি। অথচ বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে নেসকো দিনাজপুর-২ এর অফিসের জায়গার ভাড়া বাবদ ৩৩ কোটি টাকা পাবে দিনাজপুর পৌরসভা। সেটি তারা পরিশোধ করছে না। কই, আমরা তো তাদের অফিস বন্ধ করে দিই নাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত