শিপুল ইসলাম, রংপুর প্রতিনিধি
ভোরের আলো তখনো পুরোপুরি ছড়িয়ে পড়েনি। রংপুরের পীরগঞ্জের বাবনপুর গ্রাম যেন নিঃশব্দে অপেক্ষা করছিল তার এক সন্তানকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। আজ শহীদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাৎবার্ষিকী। গত বছরের এই দিনে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম মুখ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। এক বছর আগের এই দিনে যে মানুষটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নিজের প্রাণ উৎসর্গ করেছেন, তার স্মরণে আজ গ্রামের প্রতিটি প্রান্তে যেন নীরব কান্না।
সকাল থেকেই গ্রামের পথে পথে মানুষের ঢল। হাতে ফুল, চোখে অশ্রু আর হৃদয়ে শ্রদ্ধা নিয়ে তাঁরা ছুটে যান শহীদ আবু সাঈদের কবরের পাশে। মোনাজাতে মুখর হয়ে ওঠে পরিবেশ। আবেগে নীরব হয়ে পড়ে পুরো গ্রাম।
গৃহবধু নাজমা বেগম বলেন, "আজ আবু সাইদ মারা যাওয়ার এক বছর। তাক আমরা স্মরণ রাখছি। দেশের লোক তার কবর দোয়া করার জন্য সকাল আইসোছে। আমার পরিচিত আত্মীয়-স্বজন ও আসছে। এজন্য ভোরে আগত উঠি ঘর গৃহস্থের কাজ সারছি।"
কবরের পাশে শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন চুপচাপ বসে আছেন। চারপাশের শোকগাথা ছাপিয়ে তিনি যেন গভীরভাবে ছেলের অস্তিত্ব অনুভব করছেন। কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। তার নিঃশব্দ উপস্থিতিই যেন বলছে-ছেলে আমার মরেনি, সে এখনো এই মাটির বুকে জীবন্ত।
মকবুল হোসেন বলেন, "কষ্ট করে লেখাপড়া করছিল। ইনশাল্লাহ লেখাপড়া তো সফল হয়েছিল। আন্দোলনের শরিক হয়া একাই হাতটা চিত করি দিয়া শহীদ হইলো। এটা আমি চিন্তা করি কিছু খুজি পাই না। যা করছে করছে, দেশ মুক্ত হয়েছে। মানুষ মুখ খুলি কথা বলতে পারত না। জেলত থাকি ফাঁসিত থাকি বহুত মানুষ মুক্তি পাইছে।"
আবু সাঈদের বাবা বলেন, "আমার ছেলে মারা গেল এক বছর হইল। আমার ছেলেসহ যাদের হত্যা করা হয়েছে, তাদের বিচার করতে হবে। তারপর নিবার্চন। রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের উন্নয়ন করতে হবে।"
সরেজমিনে দেখা গেছে, আবু সাঈদের কবরের চার পাশে লোহার গ্রিল দিয়ে সাজানো হয়েছে। শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে গ্রামের রাস্তায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যানার দেখা গেছে। বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জেলাপ্রশাসক, এসপি, বেরোবির ভিসিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন শ্রদ্ধা জানায় ও কবর জিয়ারত করেন। অনেকে আবু সাঈদের বাবা, মা, ভাই, বোনের সঙ্গে তোলেন ছবি। এ সময় নানা স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে বাবনপুর এলাকা। শহীদ আবু সাঈদের কবরের পাশে ‘শহীদ আবু সাঈদ ফাউন্ডেশন’ কর্তৃক তাদের চলমান ও পরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
কবর জিয়ারত শেষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলী বলেন, ‘আজ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাত বার্ষিকী। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তার কবর জিয়ারত ও পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আমরা এখানে এসেছি। আবু সাঈদ বাংলাদেশের জন্য যে অবদান রেখে গেছে সেটি সারা বিশ্ববাসী দেখেছে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানতে পারে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আবু সাঈদের মত একজন মেধাবী সাহসী শিক্ষার্থী ছিল। আবু সাঈদ কে আমরা স্মরণে রাখতে চাই।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ রবিউল ফয়সাল বলেন, `স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আবু সাঈদ বুক পেতেছিল। এই জাতি সারা জীবন তাকে মনে রাখবে। যারা শহীদ হয়েছে তাদেরকে আমরা সারাজীবন স্মরণ করে যাব। তাদের যে পরিবার আছে তাদের পাশে থাকব আমরা। আবু সাঈদের স্বপ্ন পূরণের যাত্রা শুরু হয়েছে।’
গত বছরের ১৬ জুলাই রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। তাঁর মৃত্যু দেশের ছাত্র-আন্দোলনে স্ফুলিঙ্গের জন্ম দেয়, যা পরে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পথ খুলে দেয়।
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও দিনব্যাপী কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। সকাল ১০টায় কালো ব্যাজ ধারণ, শোকযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। বিশেষ অতিথি থাকবেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। দিন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটে ‘আবু সাঈদ তোরণ’ এবং পার্ক মোড়ে ‘আবু সাঈদ মিউজিয়াম’-এর উদ্বোধন করবেন অতিথিরা।
ভোরের আলো তখনো পুরোপুরি ছড়িয়ে পড়েনি। রংপুরের পীরগঞ্জের বাবনপুর গ্রাম যেন নিঃশব্দে অপেক্ষা করছিল তার এক সন্তানকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। আজ শহীদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাৎবার্ষিকী। গত বছরের এই দিনে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম মুখ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। এক বছর আগের এই দিনে যে মানুষটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নিজের প্রাণ উৎসর্গ করেছেন, তার স্মরণে আজ গ্রামের প্রতিটি প্রান্তে যেন নীরব কান্না।
সকাল থেকেই গ্রামের পথে পথে মানুষের ঢল। হাতে ফুল, চোখে অশ্রু আর হৃদয়ে শ্রদ্ধা নিয়ে তাঁরা ছুটে যান শহীদ আবু সাঈদের কবরের পাশে। মোনাজাতে মুখর হয়ে ওঠে পরিবেশ। আবেগে নীরব হয়ে পড়ে পুরো গ্রাম।
গৃহবধু নাজমা বেগম বলেন, "আজ আবু সাইদ মারা যাওয়ার এক বছর। তাক আমরা স্মরণ রাখছি। দেশের লোক তার কবর দোয়া করার জন্য সকাল আইসোছে। আমার পরিচিত আত্মীয়-স্বজন ও আসছে। এজন্য ভোরে আগত উঠি ঘর গৃহস্থের কাজ সারছি।"
কবরের পাশে শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন চুপচাপ বসে আছেন। চারপাশের শোকগাথা ছাপিয়ে তিনি যেন গভীরভাবে ছেলের অস্তিত্ব অনুভব করছেন। কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। তার নিঃশব্দ উপস্থিতিই যেন বলছে-ছেলে আমার মরেনি, সে এখনো এই মাটির বুকে জীবন্ত।
মকবুল হোসেন বলেন, "কষ্ট করে লেখাপড়া করছিল। ইনশাল্লাহ লেখাপড়া তো সফল হয়েছিল। আন্দোলনের শরিক হয়া একাই হাতটা চিত করি দিয়া শহীদ হইলো। এটা আমি চিন্তা করি কিছু খুজি পাই না। যা করছে করছে, দেশ মুক্ত হয়েছে। মানুষ মুখ খুলি কথা বলতে পারত না। জেলত থাকি ফাঁসিত থাকি বহুত মানুষ মুক্তি পাইছে।"
আবু সাঈদের বাবা বলেন, "আমার ছেলে মারা গেল এক বছর হইল। আমার ছেলেসহ যাদের হত্যা করা হয়েছে, তাদের বিচার করতে হবে। তারপর নিবার্চন। রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের উন্নয়ন করতে হবে।"
সরেজমিনে দেখা গেছে, আবু সাঈদের কবরের চার পাশে লোহার গ্রিল দিয়ে সাজানো হয়েছে। শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে গ্রামের রাস্তায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যানার দেখা গেছে। বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জেলাপ্রশাসক, এসপি, বেরোবির ভিসিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন শ্রদ্ধা জানায় ও কবর জিয়ারত করেন। অনেকে আবু সাঈদের বাবা, মা, ভাই, বোনের সঙ্গে তোলেন ছবি। এ সময় নানা স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে বাবনপুর এলাকা। শহীদ আবু সাঈদের কবরের পাশে ‘শহীদ আবু সাঈদ ফাউন্ডেশন’ কর্তৃক তাদের চলমান ও পরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
কবর জিয়ারত শেষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলী বলেন, ‘আজ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাত বার্ষিকী। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তার কবর জিয়ারত ও পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আমরা এখানে এসেছি। আবু সাঈদ বাংলাদেশের জন্য যে অবদান রেখে গেছে সেটি সারা বিশ্ববাসী দেখেছে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানতে পারে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আবু সাঈদের মত একজন মেধাবী সাহসী শিক্ষার্থী ছিল। আবু সাঈদ কে আমরা স্মরণে রাখতে চাই।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ রবিউল ফয়সাল বলেন, `স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আবু সাঈদ বুক পেতেছিল। এই জাতি সারা জীবন তাকে মনে রাখবে। যারা শহীদ হয়েছে তাদেরকে আমরা সারাজীবন স্মরণ করে যাব। তাদের যে পরিবার আছে তাদের পাশে থাকব আমরা। আবু সাঈদের স্বপ্ন পূরণের যাত্রা শুরু হয়েছে।’
গত বছরের ১৬ জুলাই রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। তাঁর মৃত্যু দেশের ছাত্র-আন্দোলনে স্ফুলিঙ্গের জন্ম দেয়, যা পরে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পথ খুলে দেয়।
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও দিনব্যাপী কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। সকাল ১০টায় কালো ব্যাজ ধারণ, শোকযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। বিশেষ অতিথি থাকবেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। দিন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটে ‘আবু সাঈদ তোরণ’ এবং পার্ক মোড়ে ‘আবু সাঈদ মিউজিয়াম’-এর উদ্বোধন করবেন অতিথিরা।
খাগড়াছড়িতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সমর্থিত দুই সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও নারী সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের ডাকা আধাবেলা সড়ক অবরোধ চলছে। আজ বুধবার সকাল থেকে জেলায় দূরপালার যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলার কোথাও বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
৪৩ মিনিট আগেকুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে দুই জন নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের বাগোয়ান কান্দিপাড়া এলাকায় মন্ডল গ্রুপ ও সর্দার গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এতে সর্দার গ্রুপের দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন।
১ ঘণ্টা আগেটইটুম্বুর রাঙামাটির কাপ্তাই লেক। লেকের পানির উচ্চতা নিয়ন্ত্রণে না আসায় গতকাল দিবাগত রাত থেকে সাড়ে ৩ ফুট করে পানি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের (কপাবিক) ১৬টি জলকপাট দিয়ে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৬৩ হাজার কিউসেক পানি কাপ্তাই লেক হতে কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশন হচ্ছে।
২ ঘণ্টা আগেবাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন পুর্নবহালের দাবিতে জেলা জুড়ে টানা দুইদিনের হরতাল ও সড়কপথ অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আজ বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) হরতালের প্রথমদিন সকাল ৬টা থেকে বিভিন্ন সড়কে আগুন জ্বালিয়ে ও গাছের গুড়ি ফেলে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতা কর্মীরা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছয়টা পর্যন্ত...
২ ঘণ্টা আগে