Ajker Patrika

রংপুরে স্কুল কমিটির সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ

রংপুর প্রতিনিধি
আনসারুল ইসলাম বাবু। ছবি: সংগৃহীত
আনসারুল ইসলাম বাবু। ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের সাহেবগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক সভাপতি আনসারুল ইসলাম বাবু ও তাঁর পরিবারে সদস্যদের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সহকারী শিক্ষক মোস্তফা জামান।

অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন হারাগাছ থানার ডিউটি অফিসার এএসআই আসাদ।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা সাহেবগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষকে অপসারণের দাবিতে কয়েক দফা বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে। সরকার পতনের পর গা ঢাকা দেন অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান ও সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহিদা আক্তার বানু। সাত মাস ধরে অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান ও সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহিদা আক্তার প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত রয়েছেন।

গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হঠাৎ সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহিদা আক্তার বানু তাঁর মেয়ে সুরভীকে নিয়ে বিদ্যালয়ে যান। এ সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শাহিদা আক্তার বানুকে বহিষ্কারের দাবিতে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আনসারুল ইসলাম বাবু তাঁর স্ত্রী–সন্তানসহ ১০-১৫ জনকে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও মারধর করেন। অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন। এতে বাধা দিতে গেলে শিক্ষার্থীদের মারধর করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নানা হুমকি দেন তাঁরা। পরে খবর পেয়ে হারাগাছ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।

এ ঘটনায় সন্ধ্যায় ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোস্তফা জামান সাবেক সভাপতি আনসারুল ইসলাম বাবু, তাঁর স্ত্রী লিনা বেগম, ছেলে শাহারিয়ার কল্লোল, সাহেবগঞ্জ এলাকার সাহিদুল ইসলাম (৩৫), হামিদুল ইসলাম (৩৮), আতিকুল ইসলামসহ (৫৫) অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।

ওই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিশাত জামান অভিযোগ করে বলেন, ‘বেতন–ভাতাসহ নানা অজুহাতে শাহিদা আক্তার ম্যাম আমাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সভাপতি বাবুর যোগসাজশে অধ্যক্ষ ও সহকারী প্রধান শিক্ষক অনেক দুর্নীতি ও অনিয়ম করেছেন। দীর্ঘ সাত মাস ধরে তাঁরা ভয়ে বিদ্যালয়ে আসেননি। শাহিদা ম্যাম গতকাল এলে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে তাঁকে অপসারণে স্লোগান দিচ্ছিলাম। কিন্তু সভাপতি বাবুসহ তাঁর লোকজন এসে বাধা দেন এবং আমাদের মারধর করেন। এতে বাধা দিতে গেলে আমাকে এলোপাতাড়ি চরথাপ্পড় মারেন। আমাকে বাঁচাতে সহপাঠীরা ছুটে এলে তাদেরও কিল–ঘুষি মারেন। এতে অনেকের শরীর ফুলে গেছে।’

জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোস্তফা জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর শাহিদা আক্তার বানু স্কুলে এসেছিল। কিন্তু বাচ্চারা উনাকে এলাউ করে নাই। যার কারণে প্রতিবাদকারী বাচ্চাদের ওপর সভাপতির লোকজন এসে হামলা করেছে। শিক্ষকদের হুমকি দিয়েছে। এলাকাবাসী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করে এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক সভাপতি আনসারুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘যে কেউ অভিযোগ দিতে পারে। আমি কোনো শিক্ষার্থীকে মারিনি। আমি ওখানে ছিলাম না। বরং চায়নিজ কুড়াল নিয়ে মাঠে আমার ছেলের পেছনে দৌড়াইছে।’

রংপুর মেট্রোপলিটন হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম সোহেল বলেন, ‘গতকাল সাহেবগঞ্জ অ্যান্ড কলেজে এক সহকারী শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। আমরা তাকে উদ্ধার করেছি। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযোগের বিষয়টি জানি না।’

রংপুর মেট্রোপলিটন হারাগাছ থানার ডিউটি অফিসার এএসআই আসাদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি এখনও ওসি স্যারকে জানাতে পারিনি। কারণ ওসি স্যার চলে যাওয়ার পর তারা অভিযোগ নিয়ে থানায় আসে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গলাধাক্কার পর ছোট্ট মেয়েটিকে লাঠি দিয়ে পেটালেন কফিশপের কর্মচারী

বিশ্বব্যাংকে সিরিয়ার ঋণ পরিশোধ করে দিচ্ছে সৌদি আরব

মাত্র তিনজনের জন্য লাখ লাখ মানুষ মরছে, কাদের কথা বললেন ট্রাম্প

জুয়ার বিজ্ঞাপনের প্রচার: আলোচিত টিকটকার জান্নাতের স্বামী তোহা কারাগারে

‘চরিত্র হননের চেষ্টা’: গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পর দুদককে পাল্টা আক্রমণ টিউলিপের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত