Ajker Patrika

বিপৎসীমার ওপরে তিস্তা ও ধরলার পানি, ফের পানিবন্দী নতুন গ্রাম

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ জুন ২০২২, ১৮: ০২
বিপৎসীমার ওপরে তিস্তা ও ধরলার পানি, ফের পানিবন্দী নতুন গ্রাম

লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় আবারও ভয়াবহ বন্যার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে লালমনিরহাটের শিমুলবাড়ী পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপরে ও তিস্তা নদী ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে বন্যা তথ্যকেন্দ্র।

এ ছাড়া জলাবদ্ধতার কারণে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানিবন্দী হয়েছে মানুষজন। সেই সঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতির পূর্বাভাস দিয়েছে বন্যা তথ্যকেন্দ্র।

দেখা গেছে, এ বছরে তৃতীয় দফা বন্যায় অসহায় হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। জেলার পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার তিস্তা ও ধরলা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধিতে জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গীমারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৌলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, রুদ্রেশ্বর, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর পানি প্রবেশে ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। 

১৪ দিন আগের বন্যার জের কাটতে না কাটতেই আবারও বন্যা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে। খাদ্য ও নিরাপদ পানিসংকট, ও পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা অবনতিসহ স্বাভাবিক চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পানিবন্দী এসব মানুষ। নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হয়ে পড়েছে। পশুপাখি ও গবাদিপশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন এসব বানভাসি মানুষ। গরু ছাগলের খাদ্যসংকটসহ নিরাপদ স্থানে রাখতেও ভোগান্তিতে পড়ছেন তাঁরা। গত ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট জেলায় ৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়াও আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তরাঞ্চলের তিস্তা ও ধরলা পাড়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির পূর্বাভাস দিয়েছে বন্যা তথ্যকেন্দ্র।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর ফলিমারী গ্রামের ভুক্তভোগী নারী মিনা বেগম বলেন, ‘বাড়িতে পানি ওঠায় দুই দিন ধরে স্কুলঘরে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে বসবাস করছি। এখনো কোনো ত্রাণ পাইনি।’ 

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘আগের বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই মঙ্গলবার রাত থেকে ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আবার নতুন নতুন এলাকায় পানি ঢুকছে। এ ইউনিয়নে প্রায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়েছে। কিছু কিছু এলাকা নতুন করে পানিবন্দী হওয়ায় তাদের মাঝে ত্রাণ দেওয়া সম্ভব হয়নি।’ 

এ বিষয়ে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘তিস্তা ও ধরলার পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় পানি আরও বাড়তে পারে। আমরা জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছি।’ 

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর জানান, এর আগের বন্যায় পানিবন্দী মানুষজনের মাঝে ত্রাণ দেওয়া হয়েছিল। এবার তালিকা পেলে আবারও ত্রাণ দেওয়া হবে। পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী রয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত