Ajker Patrika

নতুন ধান কাটা শুরু হলেও প্রভাব পড়েনি চালের বাজারে 

জসিম উদ্দিন, নীলফামারী
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৩, ০৯: ৫৭
নতুন ধান কাটা শুরু হলেও প্রভাব পড়েনি চালের বাজারে 

নতুন আমন ধানের কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে নীলফামারীতে। কৃষি বিভাগের মতে, পুরোদমে না হলেও গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট আবাদের ৩৫ শতাংশ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। 

এদিকে নতুন ধান বিক্রি শুরু হলেও দামের প্রভাব পড়েনি চালের বাজারে। কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন চাল বাজারে আসেনি এখনো। তাই পুরোনো চাল বিক্রি হচ্ছে আগের দরে। তবে নতুন ধান ওঠায় চালের দাম রয়েছে স্থিতাবস্থায়। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় এবার রোপা আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১২ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার ৪২৮ টন চাল। 

সেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ১৭২ হেক্টর জমিতে। অনুকূল আবহাওয়ায় ছাড়াবে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও। জমিতে থাকা পাকা ধান গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৫ শতাংশ কর্তন হয়েছে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা সদরের দুটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, মাঠভরা আমন ধানের আবাদ। কোথাও পুরো মাঠ ছেয়ে রয়েছে সোনালি রঙে, আবার কোথাও মাঠজুড়ে কাঁচা-পাকা ধান। মাঠে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে কৃষকেরা শুরু করেছেন ধান কাটা। অনেকে ধান কেটে শুকানোর জন্য ফেলে রেখেছেন মাঠে। আবার অনেকে বহন করে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। 

ধান কেটে মাঠে রাখা হয়েছেএ সময় সদরের সোনারায় ইউনিয়নের দারোয়ানী গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন আলী (৩৫) জানান, এবার আমন ধানের আবাদ করেছেন পাঁচ বিঘা জমিতে। দুই বিঘা জমির আগাম জাতের ধান কেটে মাড়াই করার জন্য বাড়িতে এনেছেন। অনেকে ধান মাড়াই করে বাজারে বিক্রি করেছেন ১ হাজার ১০০ টাকা মণ (৪০ কেজি) দরে। সেখানে পুরোনো ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা দরে। নতুন ধান বাজারে এলেও চালের দামে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি বলে জানান তিনি। 

তিনি বলেন, ‘এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় আশানুরূপ ফলন পাওয়ার আশা করছি। কিন্তু শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় কৃষকের তেমন লাভ থাকছে না।’ 

জেলা সদরের পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের ধনতলা গ্রামের কৃষিশ্রমিক রাজু আহমেদ বলেন, ‘আমরা ১৩ জন একত্রে গত ১৫ দিন ধরে ধান কাটার কাজ করছি। প্রতিদিন আমরা অন্তত আট বিঘা জমির ধান কাটতে পারি। প্রতি বিঘা জমির ধান কাটা এবং বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া বাবদ মজুরি ২ হাজার ৫০০ টাকা করে নিচ্ছি’। 

নীলফামারী শহরের চাল ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বাবুল বলেন, ‘বর্তমানে মোটা চাল ৪০ টাকা, ২৮ জাতের চাল ৫২ টাকা এবং চিকন চাল ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রায় ১৫ দিন ধরে চালের বাজার এমনটাই চলছে। বাজারে নতুন ধানের চাল সরবরাহ আসেনি। আসলে দাম কমার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না। তবে নতুন ধান কাটা-মাড়াই শুরু হওয়ায় চালের বাজার স্থিতাবস্থায় আছে।’ 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের উপপরিচালক এস এম আবু বকর ও সাইফুল ইসলাম বলেন, জেলায় এবার রোপা আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার ৪২৮ টন চাল। মৌসুমের শেষের দিকে চাহিদা মাফিক বৃষ্টিপাত হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। এতে করে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। প্রতি বিঘা জমিতে ধান উৎপাদনে কৃষকের খরচ হয়  ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা। বিঘায় ফলন পাওয়া যায় গড়ে ১৩ থেকে ১৪ মণ পর্যন্ত। 

তিনি বলেন, এখন আগাম জাতের ধান কাটা চলছে। নতুন ধান যারা বিক্রি করছেন, দাম ভালোই পাচ্ছেন। এতে করে কৃষকের ভালোই লাভ হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত