Ajker Patrika

মজুত শেষ, বুধবার থেকে বন্ধ বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
Thumbnail image

দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ভূগর্ভের ১১১৩ কোল ফেসের (কয়লা উত্তোলন বা নির্গমন মুখ) মজুত শেষ হয়ে যাওয়ায় আগামীকাল বুধবার থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মাইন অপারেশন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) খান মো. জাফর সাদিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ১১১৩ ফেস থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়। ওই ফেস থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলনের পর উৎপাদিত কয়লা বড়পুকুরিয়া কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ করা হয়। এই ফেসে মজুত শেষ হয়ে যাওয়ার ফলে নতুন ফেসে যন্ত্রপাতি স্থানান্তরের জন্য আগামীকাল বুধবার থেকে খনি থেকে কয়লা উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

সূত্রমতে, বর্তমানে বড়পুকুরিয়া কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বিসিএমসিএল-এর ইয়ার্ডে ১ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা মজুত আছে। যা দিয়ে প্রায় দুই মাস তাপবিদ্যুৎ সচল রাখা সম্ভব হবে।

কয়লা খনির মাইন অপারেশন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) খান মো. জাফর সাদিক বলেন, ‘খনির ১১১৩ ফেসের কয়লার মজুত শেষ হওয়ায় এবং নতুন ফেস ১৪১২ চালু করার জন্য যন্ত্রপাতি স্থানান্তর করার জন্য বুধবার থেকে কয়লা উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে।’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘১৪১২ ফেসে নতুন করে ওপেন আব কাট নির্মাণ, ১১১৩ ফেস থেকে সকল ইকুইপমেন্ট স্যালভেজ ও যথাযথ মেইনটেন্যান্স করে ১৪১২ ফেসে স্থাপন কাজ করতে প্রায় দুই মাস সময় লাগবে।’

আশা করা যায় সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী অক্টোবরের শেষ নাগাদ নতুন ফেস থেকে আবারও উৎপাদন চালু করা সম্ভব হবে। ধারণা করা হচ্ছে, ১২১৪ নতুন ফেস থেকে প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার মেট্রিকটন কয়লা পাওয়া যাবে বলে জানান মো. জাফর সাদিক।

 
বড়পুকুরিয়া কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, বর্তমানে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ৩ নম্বর ইউনিটটি চালু আছে। যা থেকে প্রতিদিন গড়ে ১৮০ থেকে ২২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়ে জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে। ইউনিট চালু রাখতে প্রতিদিন ২ হাজার মেট্রিক টন কয়লা প্রয়োজন হয়। বর্তমানে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি ইয়ার্ড ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইয়ার্ডে ১ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা মজুত রয়েছে। যা দিয়ে প্রায় দুই মাস তাপবিদ্যুতের এই ইউনিটটি সচল রাখা সম্ভব।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাপবিদ্যুতের তিনটি ইউনিটের মধ্যে ওভার হোলিং-এর কারণে দুই নং ইউনিটটি বন্ধ হয়ে আছে এবং কয়লা স্বল্পতার কারণে ২০১৯ সাল থেকে এক নম্বর ইউনিটটিও বন্ধ রয়েছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রংপুর বিভাগে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা। বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট থেকে মাত্র ১৮০ থেকে ২২০ মেগাওয়াট উৎপন্ন করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়। তিনি আরও বলেন, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে তিনটি ইউনিট চালু রাখতে গেলে প্রতিদিন ৪ হাজার ৮০০ মেট্রিকটন থেকে পাঁচ হাজার মেট্রিকটন কয়লার প্রয়োজন।

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম সরকারের সঙ্গে যোগযোগ করা হলে তিনি ১-২ দিনের মধ্যে খনি বন্ধ হয়ে যাবে বলে নিশ্চিত করেন। তিনি এ বিষয়ে খনির মাইন অপারেশন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) খান মো. জাফর সাদিকের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানতে বলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত