জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা)
বেঁচে নেই জমিদার। নেই তাঁদের জমিদারি, বাসগৃহ, অতিথিশালা, রাজদরবার আর হাতিশালা। তাঁদের স্থাপনার নেই কোনো চিহ্ন। এরপরেও সবাই জানে এটি জমিদার বাড়ি। বলছিলাম বামনডাঙ্গা জমিদার বাড়ির কথা। সংরক্ষণ আর উদ্যোগের অভাবে জমিদার বাড়ির নানা স্থাপনার কোনো চিহ্নই আর অবশিষ্ট নেই এখানে। তাই নতুন প্রজন্মের কাছে এখন প্রবীণদের গল্পের খোরাকে পরিণত হয়েছে জমিদার বাড়ির ইতিহাস-ঐতিহ্য।
সময়মতো পদক্ষেপ নিলে ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থানে পরিণত হতো এ জায়গাটি। এতে একদিকে যেমন সম্যক ধারণা পেত দর্শনার্থীরা তেমনি অন্যদিকে বিপুল পরিমাণ অর্থ যোগ হতো রাজস্ব আয়ে।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নে ঐতিহাসিক এ জমিদার বাড়ির অবস্থান। যদিও এটি বামনডাঙ্গা জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত। বাড়িতে জমিদারের বসবাসের জন্য ছিল বাসগৃহ, অতিথিদের জন্য অতিথিশালা, রাজকার্য পরিচালনার জন্য রাজদরবার, ধর্ম চর্চার জন্য ছিল দুর্গা মন্দির, তিনটি পিরামিড সদৃশ মঠ, খাজনা আদায়ে ট্রেজারি, গো-শালা ও হাতি রাখার জন্য হাতিশালা। আর এসব স্থাপনা তৈরি হয়েছিল ইট, সুরকি ও লোহা দিয়ে। এ জমিদার বাড়িতে দিঘি ছিল তিনটি। একটি দিঘিতে সারা রাত সোনার চালুনি ও আরেকটি দিঘিতে কালো পাথর ভেসে থাকত। বলা হয়, কালো পাথর ভাসাকালে পানির রংও কালো হয়ে থাকত। আর সোনার চালুন ও কালো পাথরের ভয়ে দিঘিতে অনেকে নামতে ভয় পেত।
সরেজমিনে দেখা যায়, বর্তমানে ঐতিহাসিক এ জমিদার বাড়িটির অবকাঠামো, রাজ দরবার, ট্রেজারি, অতিথিশালা, দুর্গা মন্দির, মঠ, গো-শালা, হাতিশালা ও প্রাচীরসহ দৃশ্যমান কোন স্মৃতিচিহ্নই আর অবশিষ্ট নেই। অনেক আগেই বাসগৃহ, অতিথিশালা, রাজদরবার, দুর্গামন্দির, মঠ, ট্রেজারিসহ অন্যান্য নিদর্শনগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। সর্বশেষ ২০১০ সালে হাতিশালাটিও ভেঙে ফেলা হয়। আর এ হাতিশালা ভেঙে ফেলার মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক বামনডাঙ্গা জমিদার বাড়ির শেষ চিহ্নটুকুও নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
বর্তমানে জমিদার বাড়ির জমিতে সর্বানন্দ ইউনিয়ন ভূমি অফিস, মসজিদ, প্রাথমিক স্কুল, দু'টি আশ্রয়ণ কেন্দ্র ও একটি বাজার রয়েছে। খাসজমির মধ্যে ৪৭ দশমিক ২৪ একর জমি ১৬৮ জনকে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে ও ৩৫ শতাংশ জমি এখনো কোন বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি বলে ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়। পুকুর তিনটির মধ্যে একটিতে আশ্রয়ণ কেন্দ্রের লোকজন মাছ চাষ করেন এবং বাকি দুটি সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসের নিয়ন্ত্রণে আছে।
জমিদারদের সঙ্গে মিশতেন এমন শতবর্ষী প্রবীণ ব্যক্তি আবু বকর সিদ্দিক স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে কেঁদে কেঁদে বলেন, 'জমিদার শরৎ রায় চৌধুরী, তাঁর মেয়ে জমিদার সুমতি বালা চৌধুরী (সুনীতি), জমিদার বীপিন রায় চৌধুরী, তাঁর দুই ছেলে জমিদার মনিন্দ্র রায় চৌধুরী ও জমিদার জগৎ রায় চৌধুরী এদের সবারই জমিদারি দেখেছি আমি। তাঁরা হিন্দু হলেও আমাকে খুব স্নেহ করতেন, প্রজাদেরকেও ভালোবাসতেন। জমিদারি চলে যাওয়ার পর জমিদার মনিন্দ্র রায় চৌধুরীসহ অন্যান্যরা এক এক করে কলকাতা চলে যান ও জমিদার জগৎ রায় এখানেই মারা যান। তবে বাড়ি-ঘরগুলো ভেঙে ফেলায় খুব কষ্ট পেয়েছি।'
এ জমিদারি বাড়ির গোড়াপত্তনের ইতিহাস সঠিক জানা না গেলেও জমিদার কৃষ্ণ কান্ত রায় চৌধুরীই যে বামনডাঙ্গার প্রথম জমিদার ছিলেন এবং তিনিই এ জমিদার বাড়ির পত্তন করেছিলেন তা জানা যায় বিভিন্ন সূত্রে। জনশ্রুতি রয়েছে, গৌড় বংশীয় ব্রাহ্মণ কৃষ্ণ কান্ত রায় চৌধুরী সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গায় বসতি স্থাপনের পাশাপাশি জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সময়ে বামনডাঙ্গা জমিদারের সুনাম ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি প্রজাদের মনে সুখ ও শান্তি বিরাজমান থাকায় এলাকাটির নামকরণ হয়ে যায় সর্বানন্দ।
বামনডাঙ্গা জমিদার পরিবারের অতীত বংশধরদের সঠিক নাম পরিচয় না জানা গেলেও নবম কিংবা দশম বংশধরের নাম ব্রজেশ্বর রায় চৌধুরী। তিনি একসময় জমিদারি লাভ করেন। তার মৃত্যুর পর একমাত্র ছেলে নবীন চন্দ্র রায় চৌধুরী জমিদারি গ্রহণ করেন। মূলত তাঁর জমিদারি আমলেই বামনডাঙ্গা জমিদারের খ্যাতি চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। নবীন চন্দ্র রায়ের দুই ছেলে শরৎ চন্দ্র রায় চৌধুরী ও বিপীন চন্দ্র রায় চৌধুরী। বাবা নবীন রায় চৌধুরীর মৃত্যুর পর শরৎ রায় চৌধুরী ও বিপীন রায় চৌধুরী বামনডাঙ্গার জমিদারি লাভ করেন। দুই ভাই বামনডাঙ্গার জমিদারিকে দু'ভাগ করে পৃথক পৃথকভাবে জমিদারি পরিচালনা করেন। জমিদার শরৎ চন্দ্র রায় চৌধুরীর মৃত্যুর পর তাঁর একমাত্র মেয়ে সুনীতি বালা দেবী জমিদারি লাভ করেন। জমিদারি লাভের আগেই সুনীতি বালা দেবীর বিয়ে হয়েছিল দিনাজপুর জেলার ভাতুরিয়ার প্রিয়নাথ পাকড়াশীর সঙ্গে। বলা হয়, সুনীতি বালা দেবীর একটি গাভি ছিল। ওই গাভিকে কলাপাতায় লবণ না খাওয়ালে সে দুধও দিত না। হাতিতে চড়ে সুনীতি বালা দেবী শ্বশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে আসার সময় এক শ হাতির বহর থাকত সঙ্গে।
অন্যদিকে, জমিদার বীপিন চন্দ্র রায়ের মৃত্যুর পর তাঁর দুই ছেলে মনিন্দ্র চন্দ্র রায় চৌধুরী ও জগৎ চন্দ্র রায় চৌধুরী বাবা বীপিন চৌধুরীর জমিদারিকে দুই ভাগে ভাগ করে পৃথক পৃথকভাবে জমিদারি পরিচালনা করেন। এর মধ্য দিয়ে বামনডাঙ্গার জমিদার বংশের জমিদারি মূলত তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। তবে, জমিদার মনিন্দ্র চন্দ্র রায় চৌধুরী ও জগৎ রায় চৌধুরী তাঁদের জমিদারি সফলতার সঙ্গে পরিচালনা করতে পারলেও সুনীতি বালা দেবী তাঁর জমিদারি সফলভাবে পরিচালনা করতে পারেননি। ফলে জমিদার সুনীতি বালা দেবী ব্রিটিশ সরকারকে খাজনা প্রদানে ব্যর্থ হন। সে কারণে ১৯৪৬ সালে সুনীতি বালা দেবীর জমিদারি নিলামে ওঠে এবং পুর্ণিয়ার মহারাজা কৃষাণ লাল সিংহ তা ক্রয় করেন।
এদিকে, দুই ভাই মনিন্দ্র চন্দ্র রায় চৌধুরী ও জগৎ রায় চৌধুরী সাফল্যের সঙ্গে জমিদারি চালাতে থাকেন। কিন্তু ভারতবর্ষ ভাগের পর ১৯৫০ সালে পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশ) জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে ঐতিহ্যবাহী এ জমিদার বংশের জমিদারির যবনিকাপাত ঘটে। জমিদারি চলে যাওয়ার পরে বড় ভাই জমিদার মনিন্দ্র রায় চৌধুরী ভারতের আসামে চলে যান ও ছোট ভাই জমিদার জগৎচন্দ্র রায় চৌধুরী এ জমিদার বাড়িতেই থেকে যান। এ বাড়িতেই ১৯৬৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর মৃত্যু হয়। জমিদার জগৎ চন্দ্র রায়ের মৃত্যুর পরে জমিদারের বংশধররা পালাক্রমে ভারতে চলে যান। আর বাজেয়াপ্ত হয়ে যায় তাঁদের সব সম্পদ।
বেঁচে নেই জমিদার। নেই তাঁদের জমিদারি, বাসগৃহ, অতিথিশালা, রাজদরবার আর হাতিশালা। তাঁদের স্থাপনার নেই কোনো চিহ্ন। এরপরেও সবাই জানে এটি জমিদার বাড়ি। বলছিলাম বামনডাঙ্গা জমিদার বাড়ির কথা। সংরক্ষণ আর উদ্যোগের অভাবে জমিদার বাড়ির নানা স্থাপনার কোনো চিহ্নই আর অবশিষ্ট নেই এখানে। তাই নতুন প্রজন্মের কাছে এখন প্রবীণদের গল্পের খোরাকে পরিণত হয়েছে জমিদার বাড়ির ইতিহাস-ঐতিহ্য।
সময়মতো পদক্ষেপ নিলে ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থানে পরিণত হতো এ জায়গাটি। এতে একদিকে যেমন সম্যক ধারণা পেত দর্শনার্থীরা তেমনি অন্যদিকে বিপুল পরিমাণ অর্থ যোগ হতো রাজস্ব আয়ে।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নে ঐতিহাসিক এ জমিদার বাড়ির অবস্থান। যদিও এটি বামনডাঙ্গা জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত। বাড়িতে জমিদারের বসবাসের জন্য ছিল বাসগৃহ, অতিথিদের জন্য অতিথিশালা, রাজকার্য পরিচালনার জন্য রাজদরবার, ধর্ম চর্চার জন্য ছিল দুর্গা মন্দির, তিনটি পিরামিড সদৃশ মঠ, খাজনা আদায়ে ট্রেজারি, গো-শালা ও হাতি রাখার জন্য হাতিশালা। আর এসব স্থাপনা তৈরি হয়েছিল ইট, সুরকি ও লোহা দিয়ে। এ জমিদার বাড়িতে দিঘি ছিল তিনটি। একটি দিঘিতে সারা রাত সোনার চালুনি ও আরেকটি দিঘিতে কালো পাথর ভেসে থাকত। বলা হয়, কালো পাথর ভাসাকালে পানির রংও কালো হয়ে থাকত। আর সোনার চালুন ও কালো পাথরের ভয়ে দিঘিতে অনেকে নামতে ভয় পেত।
সরেজমিনে দেখা যায়, বর্তমানে ঐতিহাসিক এ জমিদার বাড়িটির অবকাঠামো, রাজ দরবার, ট্রেজারি, অতিথিশালা, দুর্গা মন্দির, মঠ, গো-শালা, হাতিশালা ও প্রাচীরসহ দৃশ্যমান কোন স্মৃতিচিহ্নই আর অবশিষ্ট নেই। অনেক আগেই বাসগৃহ, অতিথিশালা, রাজদরবার, দুর্গামন্দির, মঠ, ট্রেজারিসহ অন্যান্য নিদর্শনগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। সর্বশেষ ২০১০ সালে হাতিশালাটিও ভেঙে ফেলা হয়। আর এ হাতিশালা ভেঙে ফেলার মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক বামনডাঙ্গা জমিদার বাড়ির শেষ চিহ্নটুকুও নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
বর্তমানে জমিদার বাড়ির জমিতে সর্বানন্দ ইউনিয়ন ভূমি অফিস, মসজিদ, প্রাথমিক স্কুল, দু'টি আশ্রয়ণ কেন্দ্র ও একটি বাজার রয়েছে। খাসজমির মধ্যে ৪৭ দশমিক ২৪ একর জমি ১৬৮ জনকে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে ও ৩৫ শতাংশ জমি এখনো কোন বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি বলে ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়। পুকুর তিনটির মধ্যে একটিতে আশ্রয়ণ কেন্দ্রের লোকজন মাছ চাষ করেন এবং বাকি দুটি সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসের নিয়ন্ত্রণে আছে।
জমিদারদের সঙ্গে মিশতেন এমন শতবর্ষী প্রবীণ ব্যক্তি আবু বকর সিদ্দিক স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে কেঁদে কেঁদে বলেন, 'জমিদার শরৎ রায় চৌধুরী, তাঁর মেয়ে জমিদার সুমতি বালা চৌধুরী (সুনীতি), জমিদার বীপিন রায় চৌধুরী, তাঁর দুই ছেলে জমিদার মনিন্দ্র রায় চৌধুরী ও জমিদার জগৎ রায় চৌধুরী এদের সবারই জমিদারি দেখেছি আমি। তাঁরা হিন্দু হলেও আমাকে খুব স্নেহ করতেন, প্রজাদেরকেও ভালোবাসতেন। জমিদারি চলে যাওয়ার পর জমিদার মনিন্দ্র রায় চৌধুরীসহ অন্যান্যরা এক এক করে কলকাতা চলে যান ও জমিদার জগৎ রায় এখানেই মারা যান। তবে বাড়ি-ঘরগুলো ভেঙে ফেলায় খুব কষ্ট পেয়েছি।'
এ জমিদারি বাড়ির গোড়াপত্তনের ইতিহাস সঠিক জানা না গেলেও জমিদার কৃষ্ণ কান্ত রায় চৌধুরীই যে বামনডাঙ্গার প্রথম জমিদার ছিলেন এবং তিনিই এ জমিদার বাড়ির পত্তন করেছিলেন তা জানা যায় বিভিন্ন সূত্রে। জনশ্রুতি রয়েছে, গৌড় বংশীয় ব্রাহ্মণ কৃষ্ণ কান্ত রায় চৌধুরী সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গায় বসতি স্থাপনের পাশাপাশি জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সময়ে বামনডাঙ্গা জমিদারের সুনাম ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি প্রজাদের মনে সুখ ও শান্তি বিরাজমান থাকায় এলাকাটির নামকরণ হয়ে যায় সর্বানন্দ।
বামনডাঙ্গা জমিদার পরিবারের অতীত বংশধরদের সঠিক নাম পরিচয় না জানা গেলেও নবম কিংবা দশম বংশধরের নাম ব্রজেশ্বর রায় চৌধুরী। তিনি একসময় জমিদারি লাভ করেন। তার মৃত্যুর পর একমাত্র ছেলে নবীন চন্দ্র রায় চৌধুরী জমিদারি গ্রহণ করেন। মূলত তাঁর জমিদারি আমলেই বামনডাঙ্গা জমিদারের খ্যাতি চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। নবীন চন্দ্র রায়ের দুই ছেলে শরৎ চন্দ্র রায় চৌধুরী ও বিপীন চন্দ্র রায় চৌধুরী। বাবা নবীন রায় চৌধুরীর মৃত্যুর পর শরৎ রায় চৌধুরী ও বিপীন রায় চৌধুরী বামনডাঙ্গার জমিদারি লাভ করেন। দুই ভাই বামনডাঙ্গার জমিদারিকে দু'ভাগ করে পৃথক পৃথকভাবে জমিদারি পরিচালনা করেন। জমিদার শরৎ চন্দ্র রায় চৌধুরীর মৃত্যুর পর তাঁর একমাত্র মেয়ে সুনীতি বালা দেবী জমিদারি লাভ করেন। জমিদারি লাভের আগেই সুনীতি বালা দেবীর বিয়ে হয়েছিল দিনাজপুর জেলার ভাতুরিয়ার প্রিয়নাথ পাকড়াশীর সঙ্গে। বলা হয়, সুনীতি বালা দেবীর একটি গাভি ছিল। ওই গাভিকে কলাপাতায় লবণ না খাওয়ালে সে দুধও দিত না। হাতিতে চড়ে সুনীতি বালা দেবী শ্বশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে আসার সময় এক শ হাতির বহর থাকত সঙ্গে।
অন্যদিকে, জমিদার বীপিন চন্দ্র রায়ের মৃত্যুর পর তাঁর দুই ছেলে মনিন্দ্র চন্দ্র রায় চৌধুরী ও জগৎ চন্দ্র রায় চৌধুরী বাবা বীপিন চৌধুরীর জমিদারিকে দুই ভাগে ভাগ করে পৃথক পৃথকভাবে জমিদারি পরিচালনা করেন। এর মধ্য দিয়ে বামনডাঙ্গার জমিদার বংশের জমিদারি মূলত তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। তবে, জমিদার মনিন্দ্র চন্দ্র রায় চৌধুরী ও জগৎ রায় চৌধুরী তাঁদের জমিদারি সফলতার সঙ্গে পরিচালনা করতে পারলেও সুনীতি বালা দেবী তাঁর জমিদারি সফলভাবে পরিচালনা করতে পারেননি। ফলে জমিদার সুনীতি বালা দেবী ব্রিটিশ সরকারকে খাজনা প্রদানে ব্যর্থ হন। সে কারণে ১৯৪৬ সালে সুনীতি বালা দেবীর জমিদারি নিলামে ওঠে এবং পুর্ণিয়ার মহারাজা কৃষাণ লাল সিংহ তা ক্রয় করেন।
এদিকে, দুই ভাই মনিন্দ্র চন্দ্র রায় চৌধুরী ও জগৎ রায় চৌধুরী সাফল্যের সঙ্গে জমিদারি চালাতে থাকেন। কিন্তু ভারতবর্ষ ভাগের পর ১৯৫০ সালে পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশ) জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে ঐতিহ্যবাহী এ জমিদার বংশের জমিদারির যবনিকাপাত ঘটে। জমিদারি চলে যাওয়ার পরে বড় ভাই জমিদার মনিন্দ্র রায় চৌধুরী ভারতের আসামে চলে যান ও ছোট ভাই জমিদার জগৎচন্দ্র রায় চৌধুরী এ জমিদার বাড়িতেই থেকে যান। এ বাড়িতেই ১৯৬৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর মৃত্যু হয়। জমিদার জগৎ চন্দ্র রায়ের মৃত্যুর পরে জমিদারের বংশধররা পালাক্রমে ভারতে চলে যান। আর বাজেয়াপ্ত হয়ে যায় তাঁদের সব সম্পদ।
মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে এক শিশু ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার চার আসামির রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আদালত সূত্রে জানা গেছে, নিরাপত্তার স্বার্থে গতকাল রোববার গভীর রাতে আসামিদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদনের শুনানি করা হয়...
১০ মিনিট আগেএকসময় রাজশাহী নগরে পানি সরবরাহের জন্য প্রতিটি পাম্পে একাধিক অপারেটর থাকতে হতো। প্রযুক্তির কল্যাণে এখন পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকেই এই পাম্প নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তারপরও পাম্পগুলোয় দুই থেকে তিনজন করে পাম্প অপারেটর রাখা হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেসিলেটের কানাইঘাটের দরিদ্র পরিবারের সন্তান মো. জাহাঙ্গীর আলম। ২০০৯ সালে যোগ দেন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী (ইউএফপিএ) পদে। এরপর ‘জাল-জালিয়াতি, বদলি, নিয়োগ-বাণিজ্যসহ অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে’ ১৭ বছরে তৃতীয় শ্রেণির এই কর্মচারী বাড়ি-গাড়িসহ নামে-বেনামে অঢেল সম্পত্তির মালিক হন।
৭ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে নারীদের স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের প্রবণতা বেড়েছে। গত বছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে সিজারিয়ান সেকশন (‘সিজার’ বলে পরিচিত) অস্ত্রোপচারের চেয়ে স্বাভাবিক প্রসব ১ হাজার ৫৫২টি বেশি হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে