Ajker Patrika

প্রকল্পে কাজ করে মজুরি পাননি ৪ শ্রমিক, অভিযোগ দিলেন ডিসিকে

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪: ৩৩
প্রকল্পে কাজ করে মজুরি পাননি ৪ শ্রমিক, অভিযোগ দিলেন ডিসিকে

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) প্রকল্পে কাজ করে মজুরি পাননি চারজন শ্রমিক। এতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তাঁরা। বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে টাকা না পেয়ে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে ও দুর্নীতি দমন কমিশনে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন তাঁরা। 

ইজিপিপি সূত্রে জানা গেছে, চিলমারী উপজেলায় প্রতি অর্থবছরে ইজিপিপি প্রকল্পের আওতায় নয়ারহাট ইউনিয়নে ২৯৩ জন শ্রমিক মাটি কাটার কাজ করেন। প্রথম পর্যায়ের ৪০ দিন ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ৩২ দিন কাজ করা হয়। শ্রমিকেরা মজুরি হিসেবে প্রতি কর্মদিবসের জন্য ৪০০ টাকা করে পেলেও চারজন শ্রমিক টাকা পাননি। 

অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, নয়ারহাট ইউনিয়নের ইজিপিপি প্রকল্পের অন্য শ্রমিকেরা মজুরির টাকা পেলেও নয়ারহাট ইউনিয়নের নাইয়ার চরের মোছা কদভানু বেগম ও রায়হান ইসলাম এবং দক্ষিণের চরের মাসুদ রানা ও নুর ইসলাম দুই অর্থবছরের ১৮০ কর্মদিবসের মজুরির ৭২ হাজার টাকা করে পাননি। ইউনিয়ন পরিষদ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দফায় দফায় যোগাযোগ করেও তাঁদের কোনো সমাধান মেলেনি। 

ভুক্তভোগী শ্রমিক রায়হান ইসলাম বলেন, ‘আমি কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পের শ্রমিক সর্দার। প্রায় সাত-আট বছর ধরে এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত। কয়েক বছর ঠিকমতো আমার মজুরির টাকা পেলেও গত ১৮০ দিনের টাকা পাইনি। সবশেষ ১২ দিনের টাকা পেয়েছি।’ 

রায়হান ইসলাম জানান, ১৮০ দিনের মজুরির টাকা না পেয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তাঁর হিসাব নম্বরটি পরিবর্তন করে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি চেয়ারম্যানের কাছে গেলে অসদাচরণ করেন। তিনি নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান, “কী করার আছে করো” বলে ধমক দেন।’ 

লেবার সর্দার রায়হান ইসলাম জানান, তাঁর সঙ্গে আর তিনজন শ্রমিকের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। 

অন্য ভুক্তভোগী শ্রমিক নুর ইসলাম, মাসুদ রানা ও কদভানু বেগম বলেন, দীর্ঘদিন চেয়ারম্যান ও মেম্বারের কাছে ঘুরেছি। টাকা পাব বলে তাঁরা আশ্বাস দিয়েছিলেন, কিন্তু পাইনি। সম্প্রতি তালিকা তুলে দেখতে পাই আমাদের দেওয়া রকেট হিসাব নম্বর পরিবর্তন করে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। 

ভুক্তভোগীরা বলেন, প্রতিকার পেতে জেলা প্রশাসক ও দুর্নীতি দমন কমিশন কুড়িগ্রামের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। বর্তমানে আমরা মানবেতর জীবন যাপন করছি। সংসার চালাতে পারছি না। 

এদিকে টাকা তুলে নেওয়া মোবাইল ফোনের চারটি রকেট হিসাব নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনটি বন্ধ পাওয়া গেছে। সচল থাকা নম্বরটি বড়চরের শফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির। তিনি ইজিপিপি প্রকল্পের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেন। 

অভিযোগের বিষয়ে নয়ারহাট ইউপির চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে ওয়ার্ড সদস্য হামিদের সঙ্গে সমস্যা ছিল, তিনি সমাধান করেছেন। 

অভিযোগ অস্বীকার করে নয়ারহাট ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হামিদ বলেন, ‘আমি কোনো মোবাইল ফোনের হিসাব নম্বর পরিবর্তন করিনি। শ্রমিকেরা ঠিকমতো টাকা পাচ্ছেন।’ 

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন, ‘আমি কুড়িগ্রামে সবে যোগদান করেছি। অভিযোগটি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

ইটনায় এবার ডিলার নিয়োগে ঘুষ চাওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

কুষ্টিয়ায় গভীর রাতে বিএনপি নেতার বাড়িতে গুলি, দেখে নেওয়ার হুমকি

মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনে প্রক্রিয়া মানা হয়নি: ইউনেসকো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত