Ajker Patrika

সেহরিতে মাইকে ডাকা নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৩১

পঞ্চগড় প্রতিনিধি 
আহত অবস্থায় হাসপাতালে শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহত অবস্থায় হাসপাতালে শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পঞ্চগড়ে সেহরিতে মাইকে ডাকা নিয়ে সংঘর্ষে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ ৩১ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার বিকেলে সদর উপজেলার হাফিজাবাদ এলাকার তেলিপাড়া নেছারিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মাদ্রাসার শিক্ষক, ছাত্র, কমিটির সভাপতিসহ আহত হয়েছেন ২৯ জন। অপর পক্ষের আহত হয়েছেন দুজন। দুই পক্ষের মোট ৩১ জন পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, ওই মাদ্রাসার মসজিদের মাইকে প্রতিদিন সেহরির জন্য ডেকে দেওয়া হতো। এ নিয়ে প্রতিবেশী কায়েদে আজমের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন প্রতিবাদ করেন। পরে কয়েক দিন মাইক বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু ওই সমাজের বেশির ভাগ মানুষ মাইকে ডাকার দাবি জানালে আবারও মাইকে ডাকা শুরু হয়। গতকাল বিকেলে বাজার করে ফেরার পথে মাদ্রাসা শিক্ষক আরিফ হাসান ও মুহতাসিম বিল্লাহকে আটক করেন কায়েদে আজম ও তাঁর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। এ সময় বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে সাবিনা ইয়াসমিন জুতা দিয়ে ও কায়েদে আজম লাঠি দিয়ে তাঁদের মারধর করেন। খবর পেয়ে মাদ্রাসার অন্য শিক্ষক ও ছাত্ররা ছুটে এলে ওই দম্পতি ও তাঁদের স্বজনেরা তাঁদেরও মারধর করেন। এ সময় মাদ্রাসার পরিচালকের মা গুলজান নেহার (৫০), তিন শিক্ষক, ২৪ জন ছাত্রসহ আহত হন ২৯ জন। অপর পক্ষের কায়েদে আজম ও তাঁর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন আহত হন। তাঁদের পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মাদ্রাসার ছাত্র রেজওয়ান সরকার বলেন, ‘আমাদের দুই শিক্ষককে মারধরের খবর পেয়ে আমরা এগিয়ে গেলে আমাদেরও নির্বিচারে মারধর করা হয়। আমাদের ঘরে ভাঙচুর করা হয়।’

মাদ্রাসার শিক্ষক মুহতাসিম বিল্লাহ বলেন, ‘মাইকে সেহরিতে ডাকার বিষয়ে তাঁরা আপত্তি জানালে আমরা কিছু দিন বন্ধ রাখি। পরে বেশির ভাগ মানুষ ডাকার বিষয়ে দাবি জানালে আবার ডাকা শুরু হয়। তবে মাইক অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। এতে তাঁরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। বিকেলে আমরা ফেরার পথে আমাদের আটক করে মারধর শুরু করেন তাঁরা। কায়েদে আজমের স্ত্রী জুতা দিয়ে ও তিনি লাঠি দিয়ে মারধর করেন।’

অভিযোগ অস্বীকার করে কায়েদে আজমের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘তারা উচ্চস্বরে মাইকে দীর্ঘ সময় ডাকাডাকি করে। মাইক তারা আমার বাড়ির দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে। আমার বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমার খুবই সমস্যা হচ্ছে। আমি তাদের একটি উঁচুতে মাইক বাঁধতে বা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলাম। তারা তা শোনেনি।’

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, ‘সেহরিতে ডাকাডাকি ও পূর্বশত্রুতার জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা জেনেছি। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ মামলা করেছে। এ ঘটনায় তদন্তের পাশাপাশি আসামি গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত