Ajker Patrika

ইসলামী আন্দোলন ও এনসিপি ঐক্য, পাত্তা দিচ্ছে না বিএনপি

  • এনসিপির শীর্ষ নেতারা গত সোমবার রাতে চরমোনাই দরবারে যান।
  • সংশ্লিষ্ট আসনে পাঁচবারের সংসদ সদস্য ছিলেন বিএনপির সরোয়ার।
খান রফিক, বরিশাল 
আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৭: ৩৫
চরমোনাই পীরের দরবারে এনসিপি নেতারা। ছবি: সংগৃহীত
চরমোনাই পীরের দরবারে এনসিপি নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মূল শক্তি চরমোনাই পীরের দরবার শরিফ ঘিরে। আর চরমোনাই এলাকাটির অবস্থান বরিশাল-৫ (নগর ও সদর) আসনে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি হাতপাখা প্রতীকের দখলে নেওয়ার লক্ষ্যে মাঠে নেমেছে পীরের দল। সে জন্য তারা জামায়াতে ইসলামীর পর এবার ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে গড়ে ওঠা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। কিন্তু বিষয়টিকে পাত্তা দিতে চাচ্ছে না বারবার এ আসনে জয়ী হওয়া বিএনপি।

বরিশালে পদযাত্রার আগে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ শীর্ষ নেতারা গত সোমবার রাতে চরমোনাই দরবার শরিফে যান। তাঁরা রাত সাড়ে ৯টায় দরবারে পৌঁছান এবং গভীর রাতে বরিশাল নগরীতে ফিরে আসেন। তবে দলের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমসহ তিনজন চারমোনাইতে রাতে ছিলেন। ইসলামী আন্দোলনের মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়ক কে এম শরিয়ত উল্লাহ জানান, সফরকালে দলের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির (পীরের ভাই) সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম পৃথকভাবে নাহিদ ইসলামের সঙ্গে আধা ঘণ্টা ও সারজিস আলমের সঙ্গে প্রায় ২০ মিনিট রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।

পরে দুই নেতার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ বলেন, চলমান পদযাত্রায় তাঁরা যেসব জেলায় যাচ্ছেন, সেসব স্থানের দর্শনীয় স্থানগুলো পরিদর্শন করছেন। চরমোনাই দরবারে যাওয়া এরই অংশমাত্র। এ সফর নির্বাচনী ঐক্যের ইঙ্গিত কি না, এমন প্রশ্নে ফয়জুল করীম বলেন, ‘এনসিপি ও আমাদের বক্তব্য প্রায় কাছাকাছি। দেশ গড়ার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, সেটা নির্বাচন হোক, আন্দোলন হোক, বিপ্লব হোক আমরা একসঙ্গে করব।’

দলটির দায়িত্বশীল এক নেতা জানান, তাঁদের অন্যতম লক্ষ্য সদর আসনে ফয়জুল করীমকে বিজয়ী করা। তিনি এ আসনে আগেও নির্বাচন করেছেন। বিশেষ করে গত সিটি নির্বাচনে হাতপাখার বিপুল জনপ্রিয়তা দেখে তাঁদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। তাই আসন পাকাপাকি করতে তাঁরা এনসিপি এবং জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতা করতে চাইছে।

জানতে চাইলে ফয়জুল করীম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এনসিপির সঙ্গে রাজনৈতিক আলোচনাও হয়েছে। আমরা ঐকমত্য পোষণ করছি যে ভবিষ্যতে আবার যেন নতুন কোনো ফ্যাসিস্ট ক্ষমতায় না আসতে পারে।’ সদর আসনের প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জামায়াত, এনসিপির সঙ্গে আমাদের ঐক্য হতে পারে।’

এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আবু নাসের রহমাতুল্লাহর বাড়িও চরমোনাই। তিনি দলের নির্বাহী সদস্য। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সামনে নির্বাচন আছে, রাজনীতিতে বিভিন্ন ধরনের মেরুকরণ হতেই পারে। কিন্তু এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলনের এই সখ্য আমাদের কাছে তেমন গুরুত্ব বহন করে না। চরমোনাই ইসলামী আন্দোলনের হেড অফিস। কিন্তু এখানে এনসিপির ভোট কোথায়? হাতপাখা আর দাঁড়িপাল্লার (জামায়াত) নিজস্ব কিছু ভোট আছে। তাই জোট হলেও সদর আসনের জন্য বিএনপি চিন্তিত না। এটা বিএনপির দুর্গ। বিএনপি যতবার ধানের শীষ নিয়ে প্রার্থী হয়েছে, ততবারই এ আসনে জয়ী হয়েছে।’

এই আসনের পাঁচবারের সংসদ সদস্য ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার।

এ ব্যাপারে বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, ‘নব্য গজানো দলটি (এনসিপি) ভাড়া করে পদযাত্রায় মানুষ আনে। তাদের নিয়ে আমাদের ভাবার সময় নেই। চরমোনাইয়ের দল দেড় যুগ হাসিনাকে পাখা দিয়ে বাতাস দিয়েছে। তারা সকালে এক রকম, রাতে অন্য রকম কথা বলছে। একই অবস্থা জামায়াতেরও। ধর্মীয় আবেগ সৃষ্টি করে রাজনীতি নষ্ট করছে তারা। বরিশাল-৫ আসন বিএনপির ঘাঁটি। কোনো ধর্মান্ধ শক্তিকে জনগণ ভোট দেবে না। ইসলামী আন্দোলন, এনসিপি কিংবা জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য নিয়ে বিএনপির কোনো মাথাব্যথা নেই।’

ইসলামী আন্দোলনের ঐক্যকে বিএনপির গুরুত্ব না দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ফয়জুল করীম বলেন, ‘তারা (বিএনপি) তাদের স্থান থেকে বলতেই পারে। শেখ হাসিনাও কিন্তু এক ঘণ্টা আগে বুঝতে পারেনি যে ক্ষমতা ছাড়তে হচ্ছে। ৫৩ বছরের রাজনীতি জনগণ প্রত্যক্ষ করেছে। মানুষ পরিবর্তন চায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দরপত্র ছাড়াই জুলাই স্মৃতি জাদুঘরের কাজ পেল দুই প্রতিষ্ঠান, এরা কারা

ট্রাকে করে ৪৩ হাজার পৃষ্ঠার নথি ইসিতে জমা দিয়েও নিবন্ধন পেল না এনসিপি

বিধি লঙ্ঘন করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হলেন এনসিপি নেতা

চাঁদা না দেওয়ায় মারধরের অভিযোগ বিএনপি কর্মীর বিরুদ্ধে

এনবিআর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কুৎসা, বরখাস্ত নিরাপত্তাপ্রহরী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত