Ajker Patrika

পা দিয়ে লিখে এইচএসসিতেও গোল্ডেন এ প্লাস পেলেন মানিক

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ২০: ৪৫
Thumbnail image

মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। অদম্য ইচ্ছাশক্তি এগিয়ে নিতে পারে বহুদূর। আর সেই ইচ্ছে শক্তিতেই এগিয়ে চলেছেন মানিক রহমান। দুই হাত নেই তাঁর। তবুও থেমে যাননি তিনি। চালিয়ে গেছেন পড়াশোনা, এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে পেয়েছেন গোল্ডেন এ প্লাস। স্বপ্নবাজ এ তরুণ উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে কাজ করতে চান দেশের জন্য। 

ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামে মিজানুর রহমান ও স্থানীয় রাবাইকারী স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক মরিয়ম বেগমের জ্যেষ্ঠ পুত্র মানিক রহমান (১৮)। এ বছর নীলফামারীর সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। ২০২২ সালে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় পান গোল্ডেন এ প্লাস। শুধু তা–ই নয়, প্রাইমারি স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা (পিইসি) ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় (জেএসসি) গোল্ডেন এ প্লাসসহ ট্যালেন্ট পুলে বৃত্তি পেয়েছিলেন। তাঁর ধারাবাহিক সাফল্যে খুশি মা-বাবা, স্বজন, শিক্ষক-সতীর্থসহ এলাকাবাসী।

শুধু পা দিয়ে লেখা নয়। মোবাইল ও কম্পিউটার চালানো, ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ে পারদর্শী মানিক রহমান। এ ছাড়া নাটক, কৌতুক, ব্যান্ড ও ভাওয়াইয়া সংগীতে সমান পারদর্শী। সদা হাস্যোজ্জ্বল ও কৌতুক নিয়ে মেতে ওঠা মানিক সহপাঠীদের কাছে খুব প্রিয়। ভবিষ্যতে তিনি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে চান। কাজ করতে চান দেশের জন্য। 

মানিকের বাবা মিজানুর রহমান ও মা মরিয়ম বেগম জানান, তাঁদের দুই ছেলে। মানিক বড়। ছোট ছেলে মাহীম অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। মানিক শারীরিক প্রতিবন্ধী এটা তাঁরা মনে করেন না। জন্ম থেকেই তাঁর দুই হাত ছিল না। ছোট থেকে তাঁরা মানিককে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়েছেন। অনেক সুস্থ ও স্বাভাবিক ছেলে-মেয়েদের চেয়েও মানিক পিএসসি, জেএসসি ও এসএসসিতে আশাব্যঞ্জক ফলাফল করেছেন। এটাই তাঁদের গর্ব। মানিক যেন সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে পারেন, তাঁর স্বপ্ন যেন পূরণ করে সমাজে উদাহরণ হতে পারে—এ জন্য দোয়া চান তাঁরা। 

মানিক রহমান বলেন, ‘আমার দুটো হাত না থাকলেও আল্লাহর অশেষ রহমতে, সবার দোয়া ও ভালোবাসায় ভালো ফলাফল করতে পেরেছি। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে যেন স্বপ্ন পূরণ করতে পারি, এই আশা।’ 

সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ার পরেও মানিক আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে। সে যেমন তার মা–বাবার কাছে হিরা-মানিক। ঠিক আমাদের কাছেও। তার ভালো ফলাফলের জন্য প্রতিষ্ঠানের সবাই মুগ্ধ। তার স্বপ্নগুলো যেন পূরণ হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত